নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে গত ৩ এপ্রিল হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ন মহাসচিব মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করার পর রয়েল রিসোর্ট, আওয়ামীলীগের পার্টি অফিস, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের বাড়ি-ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় তদন্তে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মোঃ খলিলুর রহমানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। ১০ এপ্রিল (শনিবার) বিকেলে প্রতিনিধি দলটি ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা ঘুরে দেখেন এবং ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলেন। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা রেঞ্জের পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপরাধ) জিহাদুল কবির, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মুস্তাইন বিল্লাহ, নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম, সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতিকুল ইসলাম। উপজেলা অডিটোরিয়ামে এক মতবিনিময় সভায় মোঃ খলিলুর রহমান বলেন, গত ৩ তারিখের ঘটনার পর হেফাজত ইসলামের সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্থ সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়, যুবলীগ নেতার বাড়ি ও শশুর বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং ছাত্রলীগ নেতার বাড়ি, রয়্যাল রিসোর্ট ভাংচুর পরিদর্শন শেষে সোনারগাঁওয়ের এ ঘটনার তদন্তের ভার যাদের উপর দেয়া হয়েছিল তারা সঠিক ও দ্রুত সময়ে তদন্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে। সেজন্য আমি নিজে এখানে এসেছি সরেজমিনে তদন্ত করতে। তিনি বলেন, সরকার আমাদের উপর যে দায়িত্ব দিয়েছে। সে দায়িত্ব যদি কেউ সঠিকভাবে পালন করতে বা নিজের দক্ষতার পরিচয় দিতে ব্যর্থ হয় কিংবা সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় তাকে ছাড় দেয়া হবে না। সরকার আমাদের দায়িত্ব দিয়েছেন জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। এতে কেউ ব্যর্থ হলে সে জায়গায় তাকে দায়িত্বে রাখা হবে না বলে হুশিয়ারি দেন তিনি। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা। স্থানীয় প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তাদের দায়িত্ব অবহেলা রয়েছে কিনা সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় আগামী এক সপ্তাহ ঘর থেকে কেউ বের হবেন না, সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। ঢাকার হাসপাতাল গুলোতে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় স্থানীয় রেজিষ্ট্রার্ড চিকিৎসকদের সাথে যোগাযোগ করে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়াও বেসরকারী ক্লিনিকগুলোকে করোনা চিকিৎসায় প্রশিক্ষনের মাধ্যমে সক্ষমতা বাড়াতে হবে। তিনি আগামীতে সরকারের দেয়া সর্বাত্তক লকডাউন সফল করে করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। অপরদিকে পুলিশের অতিরিক্ত মহা-পরিচালক (অপরাধ) জিহাদুল কবির বলেছেন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। এমনভাবে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে যাতে করে আগামীতে এমন সহিংস ঘটনা ঘটানোর সাহস না পায়। আমরা প্রয়োজনে প্রতিটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করবো। এ পর্যন্ত হেফাজতের সহিংসতায় ৬টি মামলা হয়েছে। এদিকে মতবিনিময় সভায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী ও স্থানীয় জন প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।