শ্রীলঙ্কায় তুমুল বিক্ষোভের মধ্যেই বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন রনিল বিক্রমাসিংহে। দেশের ২৬তম প্রধানমন্ত্রী হলেন তিনি। শপথের পরেই ধন্যবাদ জানালেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। শ্রীলঙ্কাকে আর্থিক সাহায্য দেয়ার জন্য।
শপথ নেয়ার পর ধর্মীয় আচারে অংশ নেন রনিল। সেখানেই তিনি বলেন, ‘আমি ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখতে চাই। প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’ ঋণে জর্জরিত শ্রীলঙ্কাকে এখন পর্যন্ত ৩০০ কোটি ডলার আর্থিক ঋণ দিয়েছে ভারত। রনিলের শপথ গ্রহণের পর দিল্লিও জানিয়ে দিয়েছে, শ্রীলঙ্কার নতুন গণতান্ত্রিক সরকারের সাথে কাজ করার জন্য মুখিয়ে রয়েছে ভারত। প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের সাহায্য করতেও দায়বদ্ধ তারা। ঋণের বোঝা ক্রমেই বেড়েছে শ্রীলঙ্কার ওপর। সে কারণে বিদেশ থেকে জ্বালানি, ওষুধ, খাবার, জরুরি পণ্য আমদানি পর্যন্ত বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল সরকার। দেশবাসীর মধ্যে অসন্তোষ তীব্র হয়ে ওঠে। পথে নামেন তারা। গত দু’মাস ধরে তীব্র বিক্ষোভ চলে। তার পরেই ছোট ভাই তথা দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের নির্দেশে সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন মাহিন্দা রাজাপাকসে। তার পর থেকে শূন্য পড়েছিল প্রধানমন্ত্রীর পদ। অবশেষে সে জায়গায় বসলেন ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির ৭৩ বছর বয়সী নেতা রনিল। নতুন প্রধানমন্ত্রী যতই বলুন দেশের অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান করবেন, কিন্তু সেই কাজ যে সহজ হবে না, তা বলাই বাহুল্য। এক তো এত ঋণের বোঝা। তার ওপর রাজনৈতিক অস্থিরতা কিন্তু রয়েই গেছে শ্রীলঙ্কায়। ২২৫ সদস্যের সংসদে মাত্র একটিই আসন রয়েছে রনিলের দলের। তাই সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ সহজ হবে না। যদিও তিনি বলেছেন, সময়মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করে দেবেন। কিন্তু বিরোধী দল সমাগি জন বলওয়েগায়া ও জনতা বিমুক্তি পেরামুনা বিষয়টি মানতে রাজি নয়। তাদের নেতারা আগেই প্রধানমন্ত্রীর পদে বসার প্রস্তাব ফিরিয়েছেন। বদলে দাবি করেছেন প্রেসিডেন্ট পদ থেকে গোতাবায়ার পদত্যাগ। এবার তাদের টপকে প্রধানমন্ত্রীর পদে বসার জন্য স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ রনিলের ওপর। তার বিরুদ্ধে রাজাপাকসে পরিবারের সাথে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগও তুলেছেন বিরোধীরা। এই পরিস্থিতিতে কত দিন পদ টিকিয়ে রাখতে পারেন রনিল, সেটাই দেখার বিষয়। সূত্র : আজকাল