ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি ও জ্বালানি সঙ্কট, বিক্ষোভ ঠেকাতে কারফিউ জারি
ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি আর জ্বালানি সঙ্কটে বিপর্যস্ত পশ্চিম আফ্রিকার দেশ সিয়েরা লিওনে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে সংঘর্ষে ছয় পুলিশ কর্মকর্তাসহ অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন। বুধবার দেশটির রাজধানী ফ্রিটাউনসহ অন্যান্য কয়েকটি শহরে বিক্ষোভকারীদের সাথে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সংঘর্ষে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার ফ্রিটাউন নগরীর প্রধান মর্গের একজন কর্মী রয়টার্সকে বলেছেন, বুধবার সরকারবিরোধী বিক্ষোভে রাজধানী ফ্রিটাউনে অন্তত ১৩ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। পাশাপাশি দেশটির উত্তর এবং পশ্চিমাঞ্চলে সরকারিবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের ছয়জন কর্মকর্তার প্রাণহানি ঘটেছে বলে সিয়েরা লিওনের পুলিশের প্রধান জানিয়েছেন।
দেশটির পুলিশের মহাপরিদর্শক উইলিয়াম ফাইয়া সেলু রয়টার্সকে বলেছেন, রাজধানী ফ্রিটাউনের সংঘর্ষে দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া উত্তরাঞ্চলীয় শহর কামাকুইয়ে তিনজন ও পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর মাকেনিতে একজন পুলিশ কর্মকর্তা মারা গেছেন। পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটির উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলীয় বিভিন্ন শহরকে কেন্দ্র করে সরকারবিরোধী আন্দোলন করছেন সিয়েরা লিওনের বিরোধীদলীয় রাজনীতিকরা। উপকূলীয় শহর ফ্রিটাউনেও অন্তত দুই বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
এর আগে বুধবার সিয়েরা লিওনের সরকার বলেছিল, অর্থনৈতিক সঙ্কট ও অন্যান্য সমস্যার প্রতিবাদে দেশের হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ থেকে রাস্তায় ঢিল ছুড়েছেন এবং টায়ারে আগুন জ্বালিয়েছেন। সে সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। তবে প্রাথমিকভাবে এই বিষয়ে কোনো পরিসংখ্যান জানায়নি দেশটির সরকার।
করোনাভাইরাস মহামারী ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো মুদ্রাস্ফীতি এবং জ্বালানি সঙ্কটে রীতিমতো লড়াই করছে পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটি। সহিংসতা ঠেকাতে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা থেকে দেশজুড়ে কারফিউ জারির ঘোষণা দেয় সিয়েরা লিওনের ক্ষমতাসীন সরকার। তার আগে বুধবার ইন্টারনেট সংযোগ পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল।
টুইটারে দেয়া এক বার্তায় সিয়েরা লিওনের প্রেসিডেন্ট জুলিয়াস মাদা বায়ো বলেছেন, দেশের প্রত্যেক নাগরিককে রক্ষা করার দায়িত্ব সরকারের। আজ যা ঘটেছে তা দুঃখজনক এবং পুরো ঘটনা তদন্ত করা হবে। ফ্রিটাউনের মর্গে তিনজনের লাশ রয়েছে বলে সেখানকার কর্মীরা জানিয়েছেন। তবে রয়টার্সের একজন প্রতিনিধি ফ্রিটাউনের পূর্বাঞ্চলের একটি সড়কে বেসামরিক এক নাগরিকের লাশ পড়ে থাকতে দেখেছেন। এই বিষয়ে দেশটির পুলিশের প্রধান এবং মুখপাত্রের মন্তব্য জানা যায়নি।