মুসলিম নারী শাসকদের ইতিহাস প্রাচীন। প্রতিটি মুসলিম অঞ্চল ও শাসনকালে কখনো না কখনো নারীরা শাসকের আসনে বসেছেন। সেক্ষেত্রে তারা কেবল প্রথাগত শাসন করেই ক্ষান্ত থাকেননি। কোনো না কোনোভাবে রাষ্ট্র, ধর্ম, সমাজ ও মানুষের জীবন প্রভাবিত করেছেন। এদের মধ্যে মালিকা আরওয়া, তেরকেন খাতুন, শাজারা আল দূর, সৈয়দা আল হুরা, পারি খানুম, নূর জাহান, শাফিয়ে সুলতান, তাজুল-আলম সাফিয়াতুদ্দিন সায়েহ অন্যতম। তাদের মধ্যে সবাই নিজের জায়গায় ও সময়ে সফল ও গুরুত্বপূর্ণ। শাসনে তারা সরাসরি কিংবা পর্দার আড়ালে থেকে অবদান রেখেছিলেন। যেভাবেই কাজ করে থাকুন না কেন, তাদের কাজের প্রভাব সেই সময়কে ছাড়িয়ে গেছে। তাই এখনো তাদের সম্পর্কিত আলোচনা প্রাসঙ্গিক।
শুরুটা করা যেতে পারে ইয়েমেনের আরওয়াকে দিয়ে। অব্বাসীয় খেলাফতের সময় বাগদাদ ও নিশাপুরসহ পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ইসলামের সুন্নি মতের প্রভাব বাড়তে থাকে। শিয়ারা একদিকে সুন্নিদের সঙ্গে সহাবস্থান করলেও কেউ কেউ প্রতিপক্ষ হিসেবে আবির্ভূত হয়। ফাতেমিরা ছিলেন এদের মধ্যে অন্যতম। ইয়েমেনে ফাতেমিদের অন্যতম সহযোগী ছিলেন ইয়েমেনের নারী শাসক আরওয়া (আনুমানিক ১০৫০-১১৩৮ খ্রি.)। তার ক্ষমতা, আভিজাত্য ও সম্পদের কারণে তাকে সেবার রানীর সঙ্গে তুলনা করা হয়। তিনি একমাত্র কিংবা সর্বময় ক্ষমতার মুসলিম নারী শাসক না হয়েও ইতিহাসে বিশেষ স্থান লাভ করেছেন। বিস্তৃত ভৌগোলিক অঞ্চলের কর্তৃত্বে ছিলেন তিনি। সেখানে রাজনৈতিক ক্ষমতার পাশাপাশি তিনি ধর্মীয় ক্ষমতারও প্রধান ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেছিলেন। তিনি প্রায় ছয় দশক ধরে সার্বভৌম শাসক হিসেবে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
প্রথমে আরওয়া তার স্বামীর সঙ্গে অর্থাৎ তার সহযোগী হিসেবে শাসনে যুক্ত হন। আরওয়ার প্রথম স্বামী রোগাক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করলে আরওয়াই ক্ষমতা লাভ করেন। এরপর তিনি প্রায় ৫০ বছর নিরঙ্কুশ শাসনে যুক্ত ছিলেন। যেকোনো মুসলিম শাসকের রোজকার নিয়মের মধ্য দিয়ে যেতেন আরওয়া। তিনি দরবার বসাতেন, মুদ্রা তৈরি করাতেন এমকি যুদ্ধও লড়েছেন। আরওয়ার পিতা ছিলেন আহমাদ আল-সুলায়হি। আরওয়া তার চাচা আলী আল-সুলায়হি ও তার রানী আসমার কাছে বড় হন। রাজনৈতিকভাবে সুলায়হিরা ছিলেন ফাতেমি সাম্রাজ্যের একটি অংশ। কায়রোতে রাজধানী করা এ সাম্রাজ্যটি ছিল বেশ শক্তিশালী। সাম্রাজ্যটি মিসর থেকে উত্তর আফ্রিকা, সিসিলি, ইরাক, আরব ভূমি, ইরান, তাজিকিস্তান হয়ে ভারত পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছিল।
আরওয়ার ক্ষমতা লাভের ক্ষেত্রে ফাতেমি সাম্রাজ্যের সমর্থন ছিল। আব্বাসি শাসনের সঙ্গে এটি ছিল তাদের বৈপরীত্য। আরওয়া ও আসমা কায়রোর রাজকীয় নারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতেন। আরওয়ার স্বামীর মৃত্যু হলে তাকে জানানো হয় তাদের সন্তান আইনত উত্তরাধিকারী এবং সে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া অবধি আরওয়াই শাসন করবেন তার পক্ষ থেকে। কিন্তু আলী-সুলায়হির হত্যার পর পরই আরওয়ার সন্তানের মৃত্যু হলে আরওয়াই ইয়েমেনের মূল শাসকে পরিণত হন। ১০৯৪ সালের দিকে উত্তরাধিকার নিয়ে ফাতেমিদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। তারা বিভক্ত হয়ে পড়েন। সে সময় যুদ্ধ শুরু হয়। আরওয়া তার শাসনে শান্তি রক্ষা করেছিলেন। তিনি যুদ্ধের তুলনায় কূটনীতিতে বেশি মনোযোগ দেন। তিনি প্রয়োজনে যুদ্ধ করতে ভীত ছিলেন না কিন্তু ঠা-া মাথায় সংকট মোকাবেলা ছিল তার বৈশিষ্ট্য।
রানী আরওয়ার পর যার নাম করতে হয় তিনি তেরকেন খাতুন (আনু. ১২০৫-১২৮১ খ্রি.)। ত্রয়োদশ শতাব্দীর তিনি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শাসক। এ সময়টি ইসলামের জন্যও একটি পরিবর্তনশীল সময়। মোঙ্গলদের উত্থান ও আব্বাসি শাসনের পতন হয়েছিল এ সময়। সেই দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় এই নারী শাসক তার রাজ্য ও প্রজাকে নিরাপদে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। তেরকেন খাতুনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে মজার ব্যাপারটি হলো তার জন্ম সম্পর্কে সঠিক তথ্যটি পাওয়া যায় না। এমনকি এও বলা হয় তাকে দাস হিসেবে বিক্রি করে দেয়া হয়েছিল। এরপর তিনি ঝিনঝিয়াংয়ে বসবাস করতে শুরু করেন। তিনি মুসলিম হিসেবেই বড় হন এবং পরবর্তী সময়ে ইসলাম ও মুসলিমদের স্বার্থে বহু কাজ করেছিলেন।
তেরকেন খাতুনের স্বামী স্বয়ং একজন সেনাপতি ছিলেন। তিনি হুলাগু খানের সেনায় যুক্ত হন। তিনি এর মধ্যে অসুস্থ হয়ে কেরমানে ফিরে আসেন। ১২৫৭ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বরে তেরকেনের স্বামীর মৃত্যু হয়। তিনি স্বল্পতম সময়ের মধ্যে হুলাগুর কাছে বার্তা পাঠিয়ে তার অপ্রাপ্তবয়স্ক পুত্রের অভিভাবক হিসেবে কেরমানে শাসন চালানোর অনুমতি প্রার্থনা করেন। হুলাগু বলেন প্রশাসন ও অর্থনীতির বিষয় দেখবেন। আর তার স্বামীর জামাতা সেনাবাহিনীর দেখভাল করবেন। তেরকেন এতটাই সাহসী ছিলেন যে তিনি হুলাগুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাকে বোঝান যে তেরকেনই কেরমানের উপযুক্ত শাসক হবেন। তেরকেন বলেন, তিনি মোঙ্গলদের মিত্র হিসেবে কাজ করবেন। ফলে তেরকেনের শাসনের ব্যাপারে হুলাগু রাজি হন। ১২৫৮ সালে তিনি কেরমানের সার্বভৌম শাসকে পরিণত হন। সমকালীন স্থানীয় ইতিহাস থেকে পাওয়া যায়: তিনি রানী ছিলেন। তার মধ্যে ছিল শুভবোধের ছায়া এবং তিনি ছিলেন উচ্চপদের অধিকারী। সচ্চরিত্র ও সংযমের সঙ্গে তিনি শাসন করেন। এর সঙ্গে ছিল ন্যায়বিচার, পরিমিতিবোধ ও উচ্চ নৈতিক গুণ। তার শাসন ছিল শক্ত ও সে দিনগুলো ছিল সফলতার…সার্বভৌমত্ব ও সফলতার দিক থেকে তিনি রানী সেবার সঙ্গে এবং সততা ও সচ্চরিত্রের জন্য রাবেয়ার সঙ্গে তুলনীয়।
তেরকেনের শাসনামলে কেরমানের অর্থনীতিতে প্রভূত উন্নতি হতে থাকে। কৃষিতে উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি শহরটি বস্ত্র কেনাবেচার কেন্দ্রে পরিণত হয়। শহরের (রাজ্যের) অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশ্নে তেরকেন নিজস্ব নীতি অবলম্বন করেন। কেরমান থেকে যা আয় হতো তা কেরমানেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়। এর বাইরে তিনি দাতব্য কর্মকা- চালান। ওয়াকফ পদ্ধতিতে এ সেবাকর্ম করা হয়েছিল। ত্রয়োদশ শতক থেকে কেরমানে চলমান সব ধরনের দাতব্য ও সেবাকর্মের সূচনা তেরকেন খাতুনের হাত ধরেই হয়েছিল। এছাড়া তেরকেনের শাসনামলে ইসলামিক জ্ঞানের কেন্দ্র হিসেবেও কেরমান যথেষ্ট উন্নতি করে। তার স্বামী কেরমানে একটি মাদ্রাসা স্থাপন করেছিলেন এবং তেরকেন এটির পরিসর বৃদ্ধি করেন। বিভিন্ন ফলের বাগান ও শস্যক্ষেত থেকে পাওয়া আয় মাদ্রাসার কাজে লাগানো হয়। একটি হিসাব মতে মাদ্রাসার পুুরুষ কর্মীদের ৭২০ মণ এবং নারী কর্মীদের ৫০০ মণ গম প্রদান করেন। এছাড়া তিনি হাসপাতাল তৈরি করেন। সেখানে প্রতি বছর নির্দিষ্ট হারে বৃত্তি দেয়া হতো। তেরকেন প্রায় ৪০ বছর রাজত্ব করেন এবং তার কন্যা তার স্থলাভিষিক্ত হন।
মুসলিম নারীদের মধ্যে শাজারা আল-দুরের অবস্থান স্বতন্ত্র। তেরকেনের মতো তিনিও প্রথম জীবনে একজন দাসী ছিলেন। তার বাবা-মা তো দূর, তার নিজের আসল নামটিও জানা যায় না। ১২৩৯ সালের মিসরের বার্ষিক রিপোর্টে তার নাম প্রথমবারের মতো উল্লেখ করা হয়েছে। আব্বাসীয় খলিফার হারেমের অধিবাসী দাসী হিসেবে তার নাম উল্লিখিত। ধারণা করা হয় তার জন্ম ১২৩০ সালের আগে অন্তত নয়। কোনো সূত্র বলে তিনি আর্মেনিয়ার অধিবাসী খ্রিস্টান ছিলেন। আবার কোনো সূত্রে বলা হয়েছে তিনি তুর্কি মুসলিম পরিবারে জন্মেছিলেন। ১১ বছর বয়সে তাকে বাগদাদ থেকে দামেস্ক বা কায়রোতে যুবরাজ সালিহ আল আইয়ুবীর জন্য উপহার হিসেবে প্রেরণ করা হয়। যুবরাজই মেয়েটির নাম দেন শাজারা অল-দুর অর্থাৎ মুক্তার বৃক্ষ।
শাজারা এ যুবরাজের মনোযোগ ভালোভাবেই আকর্ষণ করেছিলেন। ১২৪৭ সালে কেরাকের কারাগারে বন্দি থাকাকালে শাজারাই তার সঙ্গে ছিল। এরপরে তিনি শাজারাকে বিয়ে করেন। তাদের সন্তানের নাম খলিল। সন্তানের জন্মের পর পরই তাদের ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়। তারা কায়রো ফিরে আসেন এবং সে সময় থেকে সালিহ হলেন কায়রোর শাসক। কিন্তু তাও বেশিদিনের জন্য স্থায়ী হয়নি। সালিহ মারা যান যক্ষ্মায়। তার স্থানে তুরানশাহর ক্ষমতায় আসার কথা। তুরানশাহর এরপর গুপ্তহত্যা হয়। এ হত্যাকা-ের পর মামলুক আমিররা সর্বসম্মতিক্রমে শাজারাকে তাদের সম্রাজ্ঞী হিসেবে গ্রহণ করেন এবং ইজ আল-দ্বীন আইবেক বা আতাবেগকে প্রধান সেনাপতির পদ দেয়া হয়।
মুসলিম নারী শাসকদের ইতিহাসে বিশেষ জায়গা ধরে রেখেছেন তিতোয়ানের সাইয়েদা আল হুরা। ইতিহাসে তাকে ‘দ্য ফ্রি কুইন’ বলে অভিহিত করা হয়। অবশ্য স্প্যানিশরা তাকে পাইরেট কুইন তথা দস্যুরানী বলেও অভিহিত করেন। সাইয়েদা আল হুরার সময়কাল আনুমানিক ১৪৯২ থেকে ১৫৬০ খ্রিস্টাব্দ। হুরার অভিজ্ঞতা বিস্তৃত। তিনি আইবেরিয়ান উপদ্বীপে মুসলিম শাসন শেষ হতে দেখেছেন। ষোড়শ শতাব্দীর শুরুতে স্প্যানিশ ও পর্তুগিজ শাসকরা মুসলিম রাজ্যগুলো দখল করার অভিযানে নামে। সে সময়ে এই অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত হন হুরা। তাকে মাতৃভূমি হারাতে হয়েছিল। এরপর প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে তিনি এদের বিরুদ্ধে লড়াই করেন।
কিন্তু তার সম্পর্কে স্পষ্ট করে জানা যায় না। ধারণা করা হয় তার প্রথম জীবনের নাম আয়শা। স্প্যানিশরা তাকে দস্যু বলার পাশাপাশি মুসলিম নথিপত্রেও তার সম্পর্কে তথ্যের ঘাটতি রয়েছে। তবে স্প্যানিশ সূত্র থেকেই জানা যায় যে তার উপাধি ছিল সুলতানা। তার জন্ম আনুমানিক ১৪৯২ সালে। সে বছরই কলম্বাস তার ট্রান্স-আটলান্টিক যাত্রা শেষ করেন। বছরটি নানা কারণেই গুরুত্বপূর্ণ। তবে এর পরবর্তী সময়ে বিশ্বে ঘটে যায় আরো ঘটনা। হুরা সে সময় ওলেমাদের কাছে পড়াশোনা শিখছিলেন। ১৫১০ সালে মুহাম্মদ আল মান্দারির সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তিনি তিতোয়ানের শাসক ছিলেন। হুরার ভাইও ফেজের সুলতানের দরবারে একটি বড় পদে আসীন ছিলেন। মুহাম্মাদ অনেক সময়ই হুরার পরামর্শ গ্রহণ করতেন শাসনকাজে। পারিবারিক উচ্চমর্যাদাসহ অন্যান্য কারণে হুরার গুরুত্ব বাড়তে থাকে। অন্যান্য নারী শাসকের মতো তারও স্বামীর মৃত্যুর পর শাসনক্ষমতা হাতে আসে। তখনো স্প্যানিশ ও পর্তুগিজ রিকনকোয়েস্তা চলছিল। হুরার এলাকার বিরুদ্ধে আক্রমণ করে এরা। হুরা যথেষ্ট বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে তা মোকাবেলা করেন। পরবর্তী সময়ে অটোমানরা ক্ষমতায় এলে সে সময়েও হুরা তার ক্ষমতা বজায় রাখেন। কিন্তু একটা সময় অটোমানরা বুঝতে পারে যতটা আর্থিক লাভ তারা আশা করেছিল, হুরার তিতোয়ান থেকে তা হচ্ছে না। তাই তারা মৈত্রী রাখেনি।
মুসলিম ইতিহাসের নারী শাসকদের মধ্যে ভারতেরও যোগসূত্র রয়েছে। সবচেয়ে জনপ্রিয় সম্ভবত নূর জাহান। ভারতীয় উপমহাদেশে মোগল শাসনই সবচেয়ে শক্তিশালী মুসলিম আমল ছিল। সেখানে জাহাঙ্গীরের এই স্ত্রী যেভাবে পর্দার আড়াল থেকে শাসন করেছেন তা কারো অজানা নয়। একই ভাবে, পর্দার কিছুটা আড়াল থেকে শাসন করেছিলেন পারি খানুম (১৫৪৮-১৫৭৮ খ্রি.)। পারস্যের সাফাভি শাসক শাহ্ তামাস্পের এই কন্যা তার ভাই ইসমাইলের সিংহাসন লাভের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রেখেছিলেন। উত্তরাধিকার সংকট চলাকালীন কিছুকালের জন্য তিনিই ক্ষমতার কেন্দ্র হয়ে পড়েন। কিন্তু সবকিছুই চলছিল পর্দার আড়াল থেকে। তবে সামনে থেকে শাসন করার জন্য বিখ্যাত হয়ে আছেন সাফিয়ে সুলতান। অটোমান শাসনামলের তিনি এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র।
১৫৯৫ সালে তৃতীয় মুরাদের মৃত্যুর পর তার ২৯ বছর বয়সী পুত্র মেহমেদকে সিংহাসনে বসানোর ব্যবস্থা করেন। সেই থেকে তিনি হলেন ‘ওয়ালিদে সুলতান’। সুলেমান দ্য ম্যাগনিফিসেন্টের মৃত্যুর পর স্বাভাবিকভাবেই অটোমান সাম্রাজ্যের ভিত নড়ে যায়। সাফিয়ে সুলতান সে সময় অটোমান শাসনের হাল ধরেন। তিনি ছিলেন কূটনীতিতে দক্ষ। তার সম্পর্কে একজন ভেনেসীয় দূত লিখেছেন, ‘এ নারী তার কথায় ছিলেন পাকা এবং বলতে পারি একমাত্র তিনিই ছিলেন সত্যবাদী।’ সাফিয়ে সুলতান তার সারা জীবনে তার পুত্রদের অটোমান সাম্রাজ্যের জন্য তৈরি করেছেন ও তাদের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত রাখার চেষ্টা করেছেন। এ কাজে তিনি বরাবরই সফল। তাই তাকে সুলতানদের মা বলেই উল্লেখ করা হয়। (বণিকবার্তার সৌজন্যে)