রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
খেলাধুলার মাধ্যমে মাদককে সমাজ থেকে বিতাড়িত করতে হবে-মাফরুজা সুলতানা মাইলস্টোন কলেজে নবম শ্রেণির বালিকাদের অংশগ্রহণে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত বিদেশি প্রভুদের নিয়ে বিতাড়িত স্বৈরাচার ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে: তারেক রহমান সরাসরি ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সুপারিশ  ‘বিবেচনায় রয়েছে’: বদিউল আলম ১৬ বছর বঞ্চিতদের এবার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বইমেলয় স্টল বরাদ্দের দাবি ইসির অগাধ ক্ষমতা থাকলেও প্রয়োগে সমস্যা ছিল: বদিউল আলম আমাদের শিক্ষা কর্মসংস্থান খোঁজার মানুষ তৈরি করছে, যা ত্রুটিপূর্ণ: প্রধান উপদেষ্টা সেন্টমার্টিন: ‘স্থানীয়দের জীবিকা বনাম পরিবেশ রক্ষা’ আ. লীগ-জাপা নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাবিতে কফিন মিছিল ১৫ বছরের জঞ্জাল সাফ করতে সময় লাগবে: মির্জা ফখরুল

দুর্লভ হয়ে উঠেছে খেজুরের রস

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শনিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

মাদারীপুর শিবচরে শীতের সকালে এক দশক আগেও চোখে পড়তো রসের হাঁড়ি ও খেজুর গাছ কাটার সরঞ্জামসহ গাছির ব্যস্ততার দৃশ্য। সাত সকালে খেজুরের রস নিয়ে গাছিরা বাড়ি বাড়ি হাঁক-ডাক দিতেন। শীতের মৌসুম শুরু হতেই বাড়ি বাড়ি চলতো খেজুরের রস কিংবা রসের পাটালি গুড় দিয়ে মজাদার পিঠাপুলির আয়োজন। এছাড়া খেজুরের রস দিয়ে তৈরি শিবচরে ঝোলা গুড়ের নাম রয়েছে দেশব্যাপী। তবে গ্রামবাংলার এ দৃশ্য এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। এর প্রধান কারণ বিভিন্ন কারণে খেজুর গাছ নিধন। এতে দিনে দিনে শিবচরে কমছে খেজুরের গাছ। দুর্লভ হয়ে উঠেছে খেজুরের রসও।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, দিনে দিনে শিবচরে খেজুর গাছ কমতে থাকলেও হারিয়ে যায়নি। সুস্বাদু ও পিঠাপুলির জন্য অতি আবশ্যক উপকরণ হওয়ায় এখনো খেজুর রসের চাহিদা রয়েছে। তবে আগের মতো খেজুরের রস ও গুড় পাওয়া যায় না। পেলেও আগের চেয়ে ৫-১০ গুণ বেশি দাম দিয়ে কিনতে হয়।
উপজেলা বহেরাতলা দক্ষিণ ইউনিয়নের আবুল মোল্লা বলেন, কাঁচা রসের পায়েস খাওয়ার কথা এখনো ভুলতে পারি না। আমাদের নাতি-নাতনিরা তো আর সেই দুধচিতই, পুলি-পায়েস খেতে পায় না। তবুও ছিটে ফোঁটা তাদেরও কিছু দিতে হয়। তাই যে কয়টি খেজুর গাছ আছে তা থেকেই রস, গুড়, পিঠাপুলির আয়োজন করা হয়।
উপজেলার বহেরাতলার গ্রামের জবেদা বেগম জানান, গাছের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। এক সময় শিবচর উপজেলা খেজুর রসের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। এখন গাছ যেমন কমে গেছে তেমনি কমে গেছে গাছির সংখ্যাও। ফলে প্রকৃতিগত সুস্বাদু সে রস এখন আর তেমন নেই। তবুও কয়েকটা গাছের পরিচর্যা করে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে চেষ্টা করে যাচ্ছি। গাছি নুর ইসলাম মাদবর জানান, খেজুরের গাছ কমে যাওয়ায় তাদের চাহিদাও কমে গেছে। আগে এই কাজ করে ভালোভাবেই সংসার চালাতেন। এমনকি আগে যে আয় রোজগার হতো তাতে স য়ও থাকতো, যা দিয়ে বছরের আরো কয়েক মাস সংসারের খরচ চলতো। তিনি আরো বলেন, ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে চাইলে আমাদের সবার উচিত তালগাছের মতো বেশি বেশি খেজুর গাছ লাগানো এবং তা যত্ন সহকারে বড় করা।
উপজেলার বাখরের কান্দি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন জানান, বর্তমানে যে হারে খেজুর গাছ হারিয়ে যেতে বসেছে, তাতে এক সময় হয়তো আমাদের এলাকায় খেজুর গাছ থাকবে না। এ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে চাইলে আমাদের সবার উচিত বেশি করে খেজুর গাছ লাগানো এবং তা যতœ সহকারে বড় করা। যদি আমরা আমাদের এই হাজার বছরের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে চাই তাহলে এই কাজে আমাদের সবার এগিয়ে আসা উচিত। স্থানীয় সাংবাদিক আবুল খায়ের খান বলেন, সরকারি সড়কের দু’পাশে যদি পরিকল্পিতভাবে খেজুর গাছ লাগানো হয় তাহলে প্রতি বছর খেজুর গুড় বিক্রি করে সরকার প্রচুর টাকা রাজস্ব আয় করতে পারবে এবং এ উদ্যোগ সরকারি ভাবেই নেয়া উচিৎ। শিবচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, শিবচরে নদী ভাঙন, জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা, নতুন করে চারা রোপণ না করাসহ বিভিন্ন কারণে খেজুরের গাছ অনেকটাই কমে গেছে। আমরা গাছিদের রস সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। খেজুর গাছ ফসলের কোনো প্রকারের ক্ষতি করে না। এ গাছের জন্য বাড়তি কোনো খরচ করতে হয় না। যে কেউ বাড়ির পাশে যেকোনো স্থানে লাগাতে পারে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com