মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া হাটটি শত বছরের প্রাচীন একটি হাট। এই হাটের চারদিকে নদী এবং খাল বিল দিয়ে বেষ্টিত থাকায় এক সময় বন্দর হিসেবে হাটটির যথেষ্ট সুনাম ছিল। নদী এবং খাল সাতরিয়ে এ হাটে এসে সবাইকে বাজার করতে হতো বলেই এর নাম হয় সাতুরিয়া। বৃটিশদের শাসনের জাঁতাকলে সাতুরিয়া হয়ে যায় এক সময় সাটুরিয়া। এখানে বড় বড় জাহাজ ভরে পন্য এনে খালাস করা হতো। যা পরবর্তীতে লঞ্চ ও নৌকা করে বহু দূরের বিভিন্ন হাট বাজার গুলোতে পৌচ্ছে যেত। ঐ সময় দূরবর্তী বিভিন্ন জায়গায় থেকে আসা বণিকদের মনোরঞ্জনের জন্য একটি পতিতালয় ও ছিল। পরবর্তীতে এক পর্যায়ে পতিতালয় ঘিরে অসামাজিক কার্যকলাপ বেশি ছড়িয়ে পরলে এলাকাবাসী পতিতালয়টি উচ্ছেদ করে। কালের প্রভাবে খাল বিল নদী নালা শুকিয়ে যাওয়ায় এই বন্দর হাটটি অনেক টা ম্লান হয়ে পরে। এখানকার সম্পদশালী গজারি কাঠের হাটটি এবং অত্র এলাকার সবচেয়ে বড় গরুর হাটটি বিলুপ্ত হয়ে যায়। তারপরও এখানে রয়েছে সম্পদশালী পুরানো কাঠের আসবাব পত্রের বিশাল সমারোহ, গড়ে উঠেছে অনেক শিল্প কারখানা। ঢালাই এলোমিনিয়াম কড়াই এর জন্য ক্রমান্বয়ে ক্ষ্যাতি অর্জন করেছে সাটুরিয়া হাট। এখান থেকেই দেশের মোট চাহিদার সিংহভাগই এলোমিনিয়াম ঢালাই কড়াই উৎপাদন হয়ে থাকে। কৃষি প্রধান অঞ্চল হওয়ায় প্রচুর ধান ও পাট উৎপাদন হয়। যাহা এই হাটেই বিক্রি হয় ।বেশ কয়েক বছর ধরে সাটুরিয়ায় স্কুল, কলেজ, মিল, ইন্ডাস্ট্রি ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ঘিরে এ অঞ্চলটি বেশ জনবহুল হয়ে উঠেছে। গুরুত্বের দিক থেকে সাটুরিয়া বাজারটি এলাকাবাসীর কাছে বেশ গ্রহণযোগ্য। জনবহুল এলাকা হওয়ায় হাটের ভিতরে রাস্তা গুলো দিয়ে বিভিন্ন ধরনের সবজি, জামাকাপড় ও খাবারসহ বিভিন্ন ধরনের দোকান বসায় সাধারণ লোকজন ও আবাসিক বাসিন্দাদের চলাচল ভীষণ ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। অপরদিকে হাটটি বৃহস্পতিবার হওয়ায় সাটুরিয়া দড়গ্রাম রাস্তার উপরে ধান ও পাটের হাট বসে বিধায় স্কুল কলেজ সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ছাত্র,ছাত্রী ও কর্ম জীবিরা পড়েন মহা বিপাকে। বিশেষ করে বৃহস্পতিবার যানবাহন চলাচলে এতটাই বিঘœ ঘটে যে, ঘন্টার পর ঘন্টা যানজট লেগে থাকে। স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রীরা যথাসময়ে ক্লাসে বা পরীক্ষা হলে পৌচ্ছাতে পারে না। এ রাস্তা দিয়ে সপ্তাহের ছয় দিনই তারাসিমা সহ বেশ কয়েকটি গার্মেনটসের কর্মী বহন কারী গাড়ি যাতায়াত করে। এ যানজটের কারণে কর্মী বহন করা গাড়ি গুলো যথাসময়ে অফিসে পৌচ্ছাতে পারে না। কর্মীরা যথাসময়ে পৌচ্ছাতে পারে না বিধায় তাদের বেতন থেকে টাকা কর্তন করা হয়। এর সত্যতা প্রমাণ করতে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঘটনা সত্য। যেখানে গাড়ি চলাচলের রাস্তা নেই, সেখানে রাস্তার মধ্যে দোকান বসিয়ে জায়গা দখল করে রেখেছে সাধারণ জনগণ। ভোগান্তি এখন অসহনীয় পর্যায়ে এসে পড়েছে। ট্রাফিক পুলিশের কোন ব্যবস্থা না থাকায় জনগণের এই ভোগান্তি হচ্ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। এ প্রসঙ্গে উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ মজিদ ফটো ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আরা বলেন, আমরা মাসিক আইন শৃঙ্খলা সম্মনয় মিটিংয়ে এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি ,কিভাবে সাটুরিয়া বাসস্ট্যান্ড যানজট মুক্ত রাখা যায়। সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন (মিন্টু)কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জায়গা দেখার জন্য। ধান ও পাট হাটের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ জায়গার দরকার, আমাদের সে পরিমাণ জায়গা নেই। আমরা চেষ্টা করছি পাশেই কিছু জায়গা করে সেখানে হাট সরানোর জন্য। এলাকাবাসীর দাবি সমস্যা টি দীর্ঘ দিনের, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সমস্যাটি সমাধানে উর্ধতন মহলের সু দৃষ্টি কামনা করছি।