আগামী বছরই শেষ হয়ে যেতে পারে রাশিয়ার সব অর্থ। তাই এখনই দেশটির প্রয়োজন বিদেশি বিনিয়োগ। এমন ভবিষ্যতবাণী করেছেন রুশ অলিগার্ড ওলেগ দেরিপাস্কা। বৃহস্পতিবার সাইবেরিয়ায় এক অর্থনৈতিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে তিনি বলেন, আগামী বছর আমাদের কোনো অর্থ থাকবে না, আমাদের এখন বিদেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন। এ খবর দিয়েছে সিএনএন।
খবরে জানানো হয়, এই রুশ বিলিয়নিয়র প্রথম থেকেই ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলে আসছেন। যেখানে রুশ প্রেসিডেন্ট ও দেশটির অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা অর্থনীতি নিয়ে ভাল ভবিষ্যৎ দেখছেন সেখানে অর্থনীতি নিয়ে খুব একটা আশাবাদী নন ওলেগ। গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধেও ভালোভাবে টিকে থাকায় নিজ দেশের অর্থনীতির প্রশংসা করেন। পশ্চিমা দেশগুলোর নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞায় ধারণা করা হচ্ছিল, কয়েক মাসের মধ্যেই রুশ অর্থনীতি ধসে পড়বে এবং ইউক্রেন থেকে সেনা প্রত্যাহারে বাধ্য হবে দেশটি। কিন্তু বাস্তবে সেটি দেখা যায়নি। রাশিয়া উল্টো ক্রমশ যুদ্ধের গতি বৃদ্ধি করে চলেছে। যদিও ২০২২ সালে রাশিয়ার অর্থনীতি ২.১ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে।
তবে নিষেধাজ্ঞার কারণে বড়সড় ধাক্কার আশঙ্কা করা হচ্ছিল। ওলেগ বলেন, এখনই বিদেশি বিনিয়োগকারীদের রাশিয়ায় টানতে হবে। বন্ধু রাষ্ট্রগুলো এখানে ভাল ভূমিকা রাখতে পারে। তবে সে জন্য রাশিয়াকে তাদের জন্য সঠিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। নিজের বাজারকে তাদের জন্য আকর্ষনীয় করে রাখতে হবে। এটি করতে পারলেই বিনিয়োগকারীরা রাশিয়ায় যাবেন।
গত এক বছরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ১১ হাজার ৩০০ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে পশ্চিমা দেশগুলো। ইতিহাসে কোনো দেশের বিরুদ্ধে এই মাত্রার নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়নি। এছাড়া রাশিয়ার প্রায় ৩০০ বিলিয়ন ডলারের ফরেন রিজার্ভ আটকে দিয়েছে তারা। যদিও রুশদের প্রতিদিনকার জীবনে তার খুব বেশি প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। পশ্চিমা বিশ্লেষকরা এ জন্য চীনকে দায়ী করছেন। পশ্চিমারা যখন রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জোরদার করে চলেছে তখন চীন অব্যাহতভাবে রাশিয়া থেকে পণ্য ও জ্বালানি কিনছে। পশ্চিমা সরবরাহকারীদের সরিয়ে রাশিয়াকে একমাত্র অপশন হিসেবে বেছে নিচ্ছে বেইজিং। এছাড়া মার্কিন ডলার ছাড়াই দুই দেশ বাণিজ্য করছে নিজেদের মধ্যে। একই পথে হেটেছে ভারত ও তুরস্কও। এসব দেশের সঙ্গে রাশিয়ার বাণিজ্য কয়েক গুণ করে বৃদ্ধি পেয়েছে।