তৃতীয় টি-টোয়েন্টি
ইংল্যান্ডের স্কোর: ২০ ওভারে ১৪২/৬; (লক্ষ্য ১৫৯)।
বাংলাদেশের স্কোর: ২০ ওভারে ১৫৮/২
ফল: বাংলাদেশ ১৬ রানে জয়ী।
সিরিজ: ৩-০ তে জয়ী বাংলাদেশ।
যে টি-টোয়েন্টিতে সাফল্য খুঁজে পেতে বাংলাদেশকে ঘাম ঝরাতে হয়েছে। সেই ফরম্যাটের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নকে গতকাল মঙ্গলবার হোয়াইটওয়াশ করলো সাকিব আল হাসানের দল। এক অভাবনীয় সাফল্য ধরা দিলো বাংলাদেশের হাতে। ১৬ রানে তৃতীয় টি-টোয়েন্টি জিতলো স্বাগতিকরা।
প্রথম ওভারেই তানভীর ইসলামের বলে স্টাম্পিং হন ফিল সল্ট। হোয়াইটওয়াশের স্বপ্ন জ্বলজ্বলে হয়ে ওঠে বাংলাদেশের। কিন্তু দুই প্রান্ত থেকে জস বাটলার ও ডেভিড মালান সেট হতে থাকেন এবং ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেন। ১৩ ওভার শেষে তাদের জুটিতে ১০০ করে ফেলে ইংল্যান্ড।
প্রথম দুই ওভারে ৭ রান দেওয়া মোস্তাফিজুর রহমানকে তিন ওভার পর দ্বিতীয় স্পেলে বল হাতে তুলে দেন সাকিব আল হাসান। ঘুরে যায় ম্যাচ। মালানকে ৫৩ রানে লিটন দাসের ক্যাচ বানান। ভাঙে ৯৫ রানের জুটি। পরের বলে মেহেদী হাসান মিরাজের থ্রোতে রান আউট বাটলার। ৪০ রানে থামেন অধিনায়ক। এরপর বেন ডাকেট ও মঈন আলী ক্রিজে এসে ১৬তম ওভারে একটি করে ছয়-চার মেরে ওই ধাক্কা সামলে নিতে থাকেন। কিন্তু তাসকিন তার শেষ ওভারে দুজনকে ফিরিয়ে আবার ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেন। আর পেছনে ফিরতে হয়নি বাংলাদেশকে। সাকিব আল হাসান ১৯তম ওভারে ফেরান স্যাম কারানকে। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ২৭ রান। ক্রিস ওকস দুটি চার মেরে উত্তেজনা বাড়ান। পরের চার বলে হাসান মাহমুদ বাই থেকে দুটি রান দেন। ১৪২ রানে থামে ইংল্যান্ড। সাকিবের আঘাতে চাপে ইংল্যান্ড
তাসকিন আহমেদের জোড়া আঘাতে চাপে পড়েছিল ইংল্যান্ড। ১৯তম ওভারে সাকিব আল হাসান স্যাম কারানকে তানভীর ইসলামের ক্যাচ বানিয়ে তা আরও বাড়ালেন। শেষ ৬ বলে ২৭ রান দরকার ইংল্যান্ডের।
তাসকিনের জোড়া আঘাত আগের ওভারে হাসান মাহমুদকে বড় একটা ছয় মেরেছিলেন মঈন আলী। তাসকিন আহমেদের ওভারেও বল বাউন্ডারির বাইরে পাঠাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে মিডউইকেটে ধরা পড়েন। ১০ বলে ৯ রান করে থামলেন মঈন। একই ওভারের শেষ বলে বেন ডাকেটকেও বোল্ড করেন তাসকিন।
মালানকে ফিরিয়ে মোস্তাফিজের ‘সেঞ্চুরি’, বাটলারও আউট
দ্বিতীয় স্পেলে বল হাতে নিয়ে বড় উইকেট নিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। ১৪তম ওভারের প্রথম বলে ডেভিড মালানকে পেছনে লিটন দাসের ক্যাচ বানান তিনি। ৪৭ বলে ৬ চার ও ২ ছয়ে ৫৩ রান করেন মালান। তাকে ফিরিয়ে টি-টোয়েন্টিতে শততম উইকেট পান বাঁহাতি পেসার। পরের বলে জস বাটলার নন স্ট্রাইক প্রান্তে রান আউট হন। ৪০ রানে থামেন তিনি, ৩১ বলে চারটি চার ও একটি ছয়ে এই রান করেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক। পরপর দুই বলে দুটি উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচে ফিরলো বাংলাদেশ।
মালানের ফিফটিতে চাপে বাংলাদেশ
১২তম ওভারের শেষ বলে কাভার দিয়ে শট খেলে সিঙ্গেল নেন ডেভিড মালান। তাতে পেয়ে যান হাফ সেঞ্চুরির দেখা। ৪৩ বলে ৬ চার ও ২ ছয়ে ২১তম ফিফটি করলেন ইংলিশ ব্যাটার।
মালান-বাটলারের ব্যাটে অস্বস্তিতে বাংলাদেশ
ইনিংসের তৃতীয় বলেই তানভীর ইসলাম ফিল সল্টকে স্টাম্পিংয়ে ফেরান। ৫ রানে প্রথম উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের চোখে হোয়াইটওয়াশের স্বপ্ন আরও জ্বলজ্বলে হয়ে উঠেছিল। কিন্তু জস বাটলার ও ডেভিড মালান যেভাবে প্রতিরোধ গড়েছেন, তা অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পাওয়ার প্লেতে ৪৭ রান দিলো বাংলাদেশ, উইকেট একটি
প্রথম ওভারেই অভিষিক্ত তানভীর ইসলাম ফেরান ফিল সল্টকে। দারুণ সাফল্য পায় বাংলাদেশ। কিন্তু দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ডেভিড মালান ও জস বাটলারের জুটিতে ওই ধাক্কা সামলে নেয় ইংল্যান্ড। পাওয়ার প্লের প্রথম ৬ ওভারে ৪৭ রান দিয়েছে বাংলাদেশ, পেয়েছে একটি উইকেট।
হোয়াইটওয়াশের লক্ষ্যে প্রথম ওভারেই সাফল্য বাংলাদেশের
অভিষিক্ত তানভীর ইসলামের প্রথম বলে চার মেরেছিলেন ডেভিড মালান। তার ওভারে পরিস্থিতি বদলাতে সময়ও লাগেনি। তানভীরের তৃতীয় বলটি স্পিন করেছিল। এগিয়ে এসে খেলতে গেলে স্টাম্পড হয়েছেন ওপেনার ফিল সল্ট। প্রথম উইকেট হারানোর পর জস বাটলার ও ডেভিড মালানের ব্যাটে প্রতিরোধ গড়ে এগিয়ে যাচ্ছে ইংল্যান্ড।
দারুণ শুরুর পর বাংলাদেশ থামলো ১৫৮ রানে
মিরপুরে ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করার মিশনে টস হেরে ব্যাট করে ১৫৯ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে লিটনের ঝড়ো ফিফটিতে ২ উইকেটে ১৫৮ রান করেছে।
শুরুতে ৫৫ রানের ওপেনিং জুটিতে অবদান ছিল রনি তালুকদার ও লিটন দাসের। রনির বিদায়ে জুটি ভাঙলেও লিটন অপ্রতিরোধ্য গতিতে রান তুলেছেন। তাকে থামানোর উপায় জানা ছিল না ইংলিশদের। তার যোগ্য সঙ্গী হন নাজমুল হোসেন শান্তও। তবে লিটনকে ঘিরেই বেশির ভাগ সময় বাংলাদেশের রান চাকা এগিয়েছে। ৭৩ রান করা এই ব্যাটারকে ১৭তম ওভারে আউট করেছেন ক্রিস জর্ডান। তার বিদায়ে রানের চাকা শ্লথ হয়ে যায় অবশ্য। শেষ দিকে প্রত্যাশা মতো রান তুলতে পারেননি শান্ত। এই ব্যাটার ৪৭ রানে অপরাজিত থেকেছেন। লিটন যে গতিতে রান তুলছিলেন সেটা অব্যাহত থাকলে স্কোর আরও বেশি হওয়ার সুযোগ ছিল। সাকিব ৬ বল খেলে ৪ রানে অপরাজিত ছিলেন। ২১ রানে একটি উইকেট নিয়েছেন ক্রিস জর্ডান। ২৩ রানে সম সংখ্যক উইকেট নেন আদিল রশিদও।
লিটনকে ৭৩ রানে থামালেন জর্ডান
ঝড়ো ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের রান চাকা সচল রেখেছিলেন লিটন। নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে ঝড়ো গতিতে ৮৪ রান যোগ করেছেন। ভালো ছন্দেও ছিলেন তিনি। আগে জীবন পেলেও ১৭তম কপাল পুড়ে তার। সিরিজের প্রথম ফিফটি তুলে নেওয়া লিটন ক্রিস জর্ডানের বলে শট খেলতে গিয়ে সল্টের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন। তাতে ৭৩ রানে থেমেছেন তিনি। তার ৫৭ বলের ইনিংসে ছিল ১০টি চার ও ১টি ছয়ের মার।
লিটনের ফিফটি
ফিফটি উদযাপন করছেন লিটন।
অবশেষে বড় স্কোরের দেখা পেয়েছেন লিটন
৫৫ রানের ওপেনিং জুটি ভাঙলেও লিটন প্রান্ত আগলে অপ্রতিরোধ্য গতিতে ছুটেছেন। তার সঙ্গে যোগ দেন নাজমুল হোসেন শান্তও। লিটন সিরিজে বড় স্কোরের দেখা পেয়েছেন অবশেষে। তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের নবম ও সিরিজের প্রথম ফিফটি। তিনি ফিফটির দেখা পেয়েছেন ৪১ বলে। তাতে ছিল ৮টি চার। লিটনের ফিফটির সঙ্গে সঙ্গে পূরণ হয় দলের শত রানও। ১৩.১ ওভারে আবার জীবনও পান তিনি। লিটনের ক্যাচ বাউন্ডারি লাইনে ফেলে দেন বেন ডাকেট। ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন রনি
দুই ওপেনার রনি তালুকদার ও লিটন দাসের জুটিতে দারুণ সূচনা পেয়েছে বাংলাদেশ। পাওয়ার প্লেতেই তারা ৪৬ রান যোগ করেছেন। ষষ্ঠ ওভারে একবার জীবন পেলেও অষ্টম ওভারে আর শেষ রক্ষা হয়নি রনির। রিভার্স সুইপ করতে গেলে তার ফিরতি ক্যাচ নেন আদিল রশিদ। তাতে ভাঙে ৫৫ রানের ওপেনিং জুটি। ফেরার আগে ২২ বলে ৩ চারে ২৪ রান করেছেন রনি।
দুই ওপেনারে পাওয়ার প্লেতে ৪৬
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টস হারলেও শুরুটা দারুণ হয়েছে বাংলাদেশের। দুই ওপেনার লিটন দাস ও রনি তালুকদার চাহিদা মিটিয়ে রান তুলছেন। ষষ্ঠ ওভারে জোফরা আর্চারের বলে ফিরতে পারতেন রনি। কিন্তু তার ক্যাচ ফেলে দেন রেহান আহমেদ। তার পরেই পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটে যোগ হয়েছে ৪৬। টস হেরেছে বাংলাদেশ শেষ টি-টোয়েন্টিতে আজ ইংলিশদের হারাতে পারলেই প্রথমবারের মতো ‘বড়’ কোন দলকে কুড়ি ওভারের ফরম্যাটে হোয়াইটওয়াশের স্বাদ দেওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করবে বাংলাদেশ। কিন্তু মিরপুরে শেষ ম্যাচটিতে টস হেরেছেন সাকিব আল হাসান। টস জিতে বাংলাদেশকে শুরুতে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছেন ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার। পুরো সিরিজে এই প্রথম টস জিতেছেন তিনি। দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ নিশ্চিত হওয়ায় আগেই ধারণা করা হচ্ছিল, এই ম্যাচে বেঞ্চের শক্তি পরীক্ষা করবে বাংলাদেশ। হয়েছেও তাই। অভিষেক হচ্ছে বামহাতি স্পিনার তানভীর ইসলামের। তাকেসহ একাদশে পরিবর্তন আনা হয়েছে দুটি। বাদ পড়েছেন আফিফ হোসেন। তার জায়গায় ফিরেছেন শামীম হোসেন। ইংল্যান্ড অবশ্য অপরিবর্তিত একাদশ নিয়েই মাঠে নেমেছে। বাংলাদেশ একাদশ: রনি তালুকদার, লিটন দাস (উইকেটকিপার), নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), তৌহিদ হৃদয়, শামীম হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, তানভীর ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ ও মোস্তাফিজুর রহমান। ইংল্যান্ড একাদশ: ফিল সল্ট, জস বাটলার (অধিনায়ক ও উইকেটকিপার), ডেভিড মালান, বেন ডাকেট, মঈন আলী, স্যাম কারান, ক্রিস ওকস, ক্রিস জর্ডান, রেহান আহমেদ, আদিল রশিদ ও মার্ক উড।