বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
ব্যবসায়ীদের সরকারের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির দেশমাতৃকার বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত থেমে নেই: তারেক রহমান তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাথে জামায়াতের সৌজন্য সাক্ষাৎ চিন্ময় সমর্থক জঙ্গীদের হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ: চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের উদ্যোগ শাপলা চত্বরে গণহত্যায় হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমরা চাই না ছাত্র ভাইদের কঠোর হয়ে দমন করতে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ মানুষ কেন তাদের ওপর বিক্ষুব্ধ, গণমাধ্যমের তা স্পষ্ট করা উচিত : নাহিদ ইসলাম

সাংবাদিক শামসুজ্জামানের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ, ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ

খবরপত্র প্রতিবেদক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৩১ মার্চ, ২০২৩

সাভারে কর্মরত প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামানকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার বেলা তিনটার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আরিচাগামী লেন অবরোধ করা হয়। এর ১৫ মিনিট পর ঢাকাগামী লেনটিও অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে শামসুজ্জামানকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে মুক্তি দেওয়া না হলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে পৌনে এক ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নেন তাঁরা। এর আগে বেলা পৌনে তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের কয়েকটি সড়ক ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।এ সময় শিক্ষার্থীরা শামসুজ্জামানের মুক্তির দাবি জানিয়ে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করো, করতে হবে’, ‘জ্বালো জ্বালো আগুন জ্বালো’-এসব স্লোগান দেন। অবরোধের সময় মহাসড়কে দাঁড়িয়ে ছাত্র ইউনিয়নের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক আলিফ মাহমুদ বলেন, ‘শামস ভাই দিনমজুরের বরাতে যে কথা লিখেছেন, তা এ দেশের কোটি কোটি মানুষের মনের কথা। সত্য বললে তাঁর গলা টিপে ধরার রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মাধ্যমে মুখ চেপে ধরার সাহস করলে আবার একটি গণ–অভ্যুত্থান দেখবে এই দেশ। অনতিবিলম্বে শামস ভাইয়ের (শামসুজ্জামান) নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে তাঁকে তাঁর মায়ের নিকট ফিরিয়ে দিতে হবে। তা না হলে জাহাঙ্গীরনগরের এই আন্দোলনের স্ফুলিঙ্গ সারা দেশে ছড়িয়ে যাবে।’
এ সময় আরও বক্তব্য দেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জাবি শাখার সহসভাপতি সুমাইয়া ফেরদৌস, ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমর্ত্য রায়, সাংস্কৃতিক জোটের সহসাধারণ সম্পাদক প্রাপ্তি দে তাপসী প্রমুখ।
সিআইডি পরিচয়ে সাভারের বাসা থেকে তুলে নেওয়ার ৩০ ঘণ্টা পর গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শামসুজ্জামানকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করা হয়। তাঁকে কারাগারে আটক রাখার জন্য আদালতে আবেদন করে রমনা থানার পুলিশ। অন্যদিকে শামসুজ্জামানের পক্ষে তাঁর আইনজীবীরা জামিন চেয়ে আবেদন করেন। সে আবেদনের শুনানি শুরু হয় বেলা দুইটার দিকে। তখন হাজতখানা থেকে শামসুজ্জামানকে আদালতে আসামির কাঠগড়ায় তোলা হয়। শুনানি শেষে জামিন আবেদন নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ঢাকার সিএমএম আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন। এরপর বেলা সাড়ে তিনটার দিকে প্রিজন ভ্যানে করে তাঁকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়।
গত বুধবার ভোর চারটার দিকে সাভারের বাসা থেকে সিআইডি পরিচয়ে তুলে নেওয়ার পর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না শামসুজ্জামানের। তুলে নেওয়ার পৌনে দুই ঘণ্টা আগে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় তাঁর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রথম মামলা হয়। এ মামলার বাদী যুবলীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মো. গোলাম কিবরিয়া। যদিও মামলার বিষয়টি জানা যায় বুধবার দুপুরের দিকে। তবে গতকাল তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয় রমনা থানায় করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা নতুন আরেকটি মামলায়। এ মামলা হয় তাঁকে তুলে নেওয়ার ১৯ ঘণ্টা পর বুধবার মধ্যরাতে। রমনা থানার যে মামলায় শামসুজ্জামানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে, সেই মামলায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানকেও আসামি করা হয়েছে। এ মামলার বাদী হাইকোর্টের আইনজীবী আবদুল মালেক (মশিউর মালেক)। ২৬ মার্চ প্রথম আলো অনলাইনের একটি প্রতিবেদন ফেসবুকে শেয়ারের সময় ‘গ্রাফিক কার্ডে’ ছবির অমিলকে কেন্দ্র করে দেশের ভাবমূর্তি ও অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অভিযোগ এনে মামলা দুটি করা হয়। যদিও ফেসবুকের ওই পোস্টে অসংগতি দ্রুতই নজরে পড়ে এবং তা সরিয়ে নিয়ে সংশোধনী প্রকাশ করা হয়। এই পোস্টকে কেন্দ্র করে কয়েক দিন ধরে ক্ষমতাসীন দলের একাধিক মন্ত্রী ও নেতা প্রথম আলোর সমালোচনা করে আসছেন। প্রথম আলো সম্পাদকের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা প্রত্যাহার এবং গ্রেপ্তার সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে মুক্তির দাবি জানিয়েছেন সম্পাদক পরিষদ, নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশসহ (নোয়াব) বিভিন্ন মানবাধিকার, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ও নাগরিক সংগঠন এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংগঠনও এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। চট্টগ্রামে ছাত্র ইউনিয়নের মানববন্ধন: প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান ও নিজস্ব প্রতিবেদক (সাভার) শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা প্রত্যাহার চেয়ে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন চট্টগ্রাম পাহাড়তলী থানা শাখা। মানববন্ধন থেকে শামসুজ্জামানের নিঃশর্ত মুক্তি, চট্টগ্রামে শিশু ধর্ষণ ও হত্যার বিচার এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানানো হয়। গতকাল শুক্রবার নগরের সাগরিকা বিটাক মোড়ে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের পাহাড়তলী থানা শাখার সভাপতি নিশান রায়। সাধারণ সম্পাদক শুভ দেবনাথের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক বর্ষা দেবনাথ, সহসাধারণ সম্পাদক দূর্বার দেবনাথ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক প্রিন্স দাশ, সদস্য সুমন রহমান ও শ্রমিকনেতা নুরুচ্ছফা ভূঁইয়া। বক্তারা বলেন, রাতের আঁধারে সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে তুলে নেওয়া হলো। এটি অত্যন্ত ন্যক্কারজনক একটি উদাহরণ। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের পর থেকেই নানা প্রশ্ন উঠেছে। মূলত এটির ব্যবহার ও ধারা নিয়ে প্রশ্ন ও বিতর্ক রয়েছে। এটি একটি কালো আইন। এই কালো আইন প্রণয়ন করে মানুষের মধ্যে ভয় সৃষ্টি করার চেষ্টা চলছে। সর্বশেষ প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান ও সাংবাদিক শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে এই আইন প্রয়োগ করা হলো। অবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে। সাংবাদিক শামসুজ্জামানের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। গত বুধবার ভোর চারটার দিকে সাভারের বাসা থেকে সিআইডি পরিচয়ে তুলে নেওয়ার পর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না শামসুজ্জামানের। তুলে নেওয়ার পৌনে দুই ঘণ্টা আগে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় তাঁর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রথম মামলা হয়। এ মামলার বাদী যুবলীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মো. গোলাম কিবরিয়া। যদিও মামলার বিষয়টি জানা যায় বুধবার দুপুরের দিকে। তবে গতকাল তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয় রমনা থানায় করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা নতুন আরেকটি মামলায়। এই মামলা হয় তাঁকে তুলে নেওয়ার ১৯ ঘণ্টা পর গত বুধবার মধ্যরাতে। রমনা থানার যে মামলায় শামসুজ্জামানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে, সেই মামলায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানকেও আসামি করা হয়েছে। এ মামলার বাদী হাইকোর্টের আইনজীবী আবদুল মালেক (মশিউর মালেক)। ২৬ মার্চ প্রথম আলো অনলাইনের একটি প্রতিবেদন ফেসবুকে শেয়ারের সময় ‘গ্রাফিক কার্ডে’ ছবির অমিলকে কেন্দ্র করে দেশের ভাবমূর্তি ও অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অভিযোগ এনে মামলা দুটি করা হয়। যদিও ফেসবুকের ওই পোস্টে অসংগতি দ্রুতই নজরে পড়ে এবং তা সরিয়ে নিয়ে সংশোধনী প্রকাশ করা হয়। এই পোস্টকে কেন্দ্র করে কয়েক দিন ধরে ক্ষমতাসীন দলের একাধিক মন্ত্রী ও নেতা প্রথম আলোর সমালোচনা করে আসছেন। একই সঙ্গে দলটির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলো কর্মসূচি পালন করছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com