গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর নীলক্ষেত মোড় ছেড়ে নিউমার্কেটের সামনে অবস্থান নিয়েছিলেন আন্দোলনরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, বিকেল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাত কলেজ প্রশাসনের বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানার পর পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন তারা। সে পর্যন্ত তারা সেখানেই অবস্থান করবেন। এর আগে মঙ্গলবার (২০ জুন) দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে শিক্ষার্থীরা নীলক্ষেত মোড় ছেড়ে নিউমার্কেটের সামনে অবস্থান নেন। শিক্ষার্থীরা নীলক্ষেত মোড় থেকে সরে গেলে ওই এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এ বিষয়ে ডিএমপির নিউমার্কেট জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার শাহেন শাহ্ বলেন, বিকেল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে সাত কলেজ প্রশাসনের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত আসার অপেক্ষায় শিক্ষার্থীরা রাস্তা থেকে সরে (নীলক্ষেত মোড় থেকে) দাঁড়িয়েছেন। এখন যান চলাচল স্বাভাবিক। এর আগে মঙ্গলবার (২০ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় সাত দফা দাবি নিয়ে নিউমার্কেটের বলাকা সিনেমা হলের সামনে থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করেন তারা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার ভবনে হয়রানির প্রতিবাদ ও সাত দফা দাবিতে আবারও আন্দোলনে নেমেছে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় নীলক্ষেত মোড়ে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে নীলক্ষেত মোড় ছেড়ে নিউমার্কেটের সামনে অবস্থান নিয়েছেন আন্দোলনরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।
সূত্রে প্রকাশ, ২০ জুন মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু পালন করেন। একই দাবিতে শিক্ষার্থীরা ৪ জুন ইডেন কলেজের সামনে অবস্থান নিয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ কর্তৃপক্ষ সাত দফা দাবির কার্যকারী পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় তারা (শিক্ষার্থীরা) আবারও আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের দাবিসমূহ হল- ১. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের হয়রানির কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে। একই সাথে শিক্ষার্থীদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
২. যে সকল শিক্ষার্থী পরবর্তী বর্ষের ক্লাস, ইনকোর্স পরীক্ষা ও টেস্ট পরীক্ষা পর্যন্ত অংশগ্রহণ করার পর জানতে পেরেছেন নন-প্রমোটেড তাদের সর্বোচ্চ ৩ বিষয় পর্যন্ত মানোন্নয়ন পরীক্ষার মাধ্যমে পরবর্তী বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার সুযোগ দিতে হবে। ৩. সকল বিষয়ে পাশ করার পরও একটা স্টুডেন্ট সিজিপিএ সিস্টেমের জন্য নন প্রোমোটেড হচ্ছেন। সিজিপিএ শর্ত শিথিল করতে হবে।
৪. বিলম্বে ফলাফল প্রকাশের কারণ ও এই সমস্যা সমাধানে কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তার ব্যাখ্যা দিতে হবে। সর্বোচ্চ তিন মাস ( ৯০ দিনের মধ্যে) ফলাফল প্রকাশ করতে হবে।
৫. সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অভিভাবককে কারা? কোথায়, তাদের সমস্যাসমূহ উপস্থাপন করবে ? তা ঠিক করে দিতে হবে। ৬. একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রনয়ণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। ৭. শিক্ষক সংকট, ক্লাসরুম সংকট নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
আন্দোলনকারী সরকারি বাংলা কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের সাতটি দাবি আছে দাবিগুলো মানতে হবে। গত ৪ জুন ঢাবি কর্তৃপক্ষ ও ৭ কলেজের সম্বন্বয়ক দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলেও এর পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের দাবিদাবা গুলো নিয়ে আর কোনও কাজ করে নাই। তারা আলোচনার জন্য ৩ টি মিটিংয়ের ডেট দিলেও ১ টি মিটিংও করে নাই। এই দাবিগুলোর বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত এখন পর্যন্ত দেয়নি। তিনি আরও বলেন, শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য ২০১৭ সালি ঢাবি অধিভুক্ত করা হলেও সেশন জট, রেজাল্ট জটের কারণে এখানে শিক্ষার মানের উন্নয়ন হচ্ছে না। এ আন্দোলনের বিষয়ে সাত কলেজের সম্বন্বয়ক সুপ্রিয়া ভট্টাচার্যের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।