বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
ব্যবসায়ীদের সরকারের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির দেশমাতৃকার বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত থেমে নেই: তারেক রহমান তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাথে জামায়াতের সৌজন্য সাক্ষাৎ চিন্ময় সমর্থক জঙ্গীদের হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ: চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের উদ্যোগ শাপলা চত্বরে গণহত্যায় হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমরা চাই না ছাত্র ভাইদের কঠোর হয়ে দমন করতে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ মানুষ কেন তাদের ওপর বিক্ষুব্ধ, গণমাধ্যমের তা স্পষ্ট করা উচিত : নাহিদ ইসলাম

বরিশালের পুনর্বাসন কেন্দ্রে একসাথে দুই কনের বিয়ে

শামীম আহমেদ বরিশাল প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় রবিবার, ২৫ জুন, ২০২৩

তামান্না ও রহিমা ছোটবেলা থেকে বেড়ে ওঠা বরিশাল নগরীর সামাজিক প্রতিবন্ধী মেয়েদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে। নেই তেমন কোনো স্বজন। তবে জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনের মধ্যদিয়ে অভিভাবকহীন দুই পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন দুই কনের বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। আর এ বিয়েকে কেন্দ্র করে বিগত সপ্তাহখানেক সময় ধরে সামাজিক প্রতিবন্ধী মেয়েদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে চলছে উৎসবের আমেজ। এ এক ভিন্ন আয়োজন। বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তারা। বিয়েতে উপহার নিয়ে এসেছেন জেলার বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তাগণ। প্রায় ৩০০ মানুষের খাবারের আয়োজন করা হয়। ছিলো- পোলাও, রোস্ট, গরুর মাংসের রেজালাসহ হরেক রকম আয়োজন। শনিবার (২৪ জুন) দুই অনাথ কনের জাঁকজমকপূর্ণ বিয়ের আয়োজন করে বরিশাল জেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা অধিদপ্তর। এ দুই বিয়ের মধ্যেদিয়ে সামাজিক প্রতিবন্ধী মেয়েদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে ১৭-১৮ তম বিয়ের অনুষ্ঠান একসঙ্গে অনুষ্ঠিত হলো বলে জানিয়েছেন জেলা প্রবেশন অফিসার সাজ্জাদ পারভেজ। যেখানে বর ও কনেপক্ষ মিলিয়ে ৩০০ অতিথির খাবারের আয়োজনও করা হয়েছে। তিনি বলেন, সামাজিক প্রতিবন্ধী মেয়েদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের নিবাসী রহিমার সঙ্গে বরিশাল নগরের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর জাগুয়া এলাকার বাসিন্দা ও দিনমজুর রাসেলের বিয়ে হয়েছে। আর তামান্নার সঙ্গে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের মানিককাঠি এলাকার বাসিন্দা মুদি দোকানি ফরিদ হোসেনের বিয়ে হয়েছে। যেখানে রহিমা ১০-১২ বছর ধরে এখানে রয়েছে, সে পিরোজপুর থেকে আসলেও তার পরিবারের কারও সন্ধান আমাদের কাছে নেই। অপরদিকে তামান্না ৪-৫ বছর ধরে এখানে রয়েছে। তার বাড়ি বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার পাতারহাটে। সমাজের ৮-১০টি বিয়ের মতো পূর্বে উভয় পক্ষে দেখাদেখি ও কথাবার্তা সম্পন্ন হয়েই বিয়েতে মত দেওয়ার কথা জানিয়েছেন সামাজিক প্রতিবন্ধী মেয়েদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের তামান্না। তিনি বলেন, আগেই পাত্র ও তার পরিবারের সঙ্গে আমাদের স্যারেরা কথা বলেছেন, আমিও কথা বলেছি।
উভয়ের মতে এ বিয়ে হচ্ছে। আমার মা ফরিদা বেগমও এসেছেন। এদিকে রহিমার কেউ না থাকায় তার পাশে পুনর্বাসন কেন্দ্রের নিবাসী, শিক্ষক, কর্মকর্তা সবাই রয়েছেন। আর তাদের অংশগ্রহণে বেশ উচ্ছ্বসিত রহিমা বলেন, স্যারেরা বিয়েতে কোনো কমতি রাখেননি। বিয়ের পোশাক কেনা, পুনর্বাসন কেন্দ্র সাজানো, গান-বাজনার মধ্য দিয়ে গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান শেষে এখন বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আমাদের শুধু অনুষ্ঠান করে বিয়েই দিচ্ছে না, সঙ্গে অনেকে উপহারও দেবেন। বিয়েতে উপহার হিসেবে সেলাই মেশিন, লেপ-তোষক ও প্রতেক্যেকে ৫০ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রবেশন অফিসার সাজ্জাদ পারভেজ। তিনি বলেন, বিয়েতে লেপ-তোষকসহ সাংসারিক কাজে প্রয়োজনীয় কিছু সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে। যেটি সব মেয়েদের বিয়েতে বাবার দিয়ে থাকেন। আর ওরা দুজনই সেলাইয়ের কাজ জানেন, তাই সেলাই মেশিন দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া নিজেদের স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে প্রত্যেক দম্পতিকে ৫০ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে। এদিকে শুধু বিয়ে দিয়েই দায় এড়াতে নারাজ বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এ বিয়ের আয়োজনে আমরা সবাই খুশি। আমাদের মেয়েরা যাতে ভালো থাকে সেদিকে আমরা খেয়াল রাখবো। শুধু বিয়ে দিয়ে দায়সারা নয়, আমরা ভবিষ্যতে তাদের খোঁজখবর রাখবো। যেমনটা আমার মেয়ের বেলায় রাখা হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com