শরীয়তপুর সদর উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়ন ভুমি অফিসের নিয়ম নীতি তুয়াক্কা না করে অবৈধ টাকার লেনদেন বা ঘুষ ছাড়া কোন পর্চা, খাজনা দাখিলা ও মিউটেশন হয় না বলে অভিযোগ উঠেছে। বিনোদপুর ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা আবুল হাসেম এর বিরুদ্ধে। সেবা প্রত্যাশীদের সাথে অসৌজন্য মুলক আচরন তার নিত্যদিনের ঘটনা। সেবা প্রার্থীদের কাছ থেকে পর্চা, খাজনা দাখিলা ও মিউটেশনের টাকা নিয়ে মাসের পর মাস হয়রানি করে ঘুষ বাণিজ্য, দুনীর্তি ও নানান অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেছেন, লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিনোদপুর এলাকার নুরুজ্জামান মাদবর, কাচারিকান্দি এলাকার ওমর মোল্লা ও স্থানীয় সুত্রে জানাযায়, বিনোদপুর ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ আবুল হাসেম পর্চা দেওয়া,খাজনা দাখিলা ও মিউটেশনের জন্য মোটা অংকের টাকা নিয়ে কাজ করেন। নুরুজ্জামান মাদবর বলেন, তশীলদার হাসেম আমার একটা জমি মিউটিশন করে ২২ হাজার টাকা নিছেন। এবং আমার এক পরিচিত লোকের কাছ থেকে মাত্র ৮ টাকা খাজনা কেটে ২ হাজার টাকা নিয়েছে। সে জমির খাজনা কেটে অনেক অতিরিক্ত টাকা নেয় তার আগে মাহবুব তশীলদার এখানে ছিলো মাহবুব তশীলদার আমাদের এলাকায় কোনো ড্রেজার চালাতে দেন নি আর সে এখানে নতুন এসে একেক খাত থেকে ৫ হাজার ১০ হাজার টাকা খেয়ে ড্রেজার গুলো চালাতে দিয়েছে। ওমর মোল্লা বলেন, আমি তিনবার তারে বলছি আপনার অফিসের পিছনে ড্রেজার মেশিন চলে। আপনি এগুলো বন্ধ করেন কিস্তু সে বলে যে এগুলো আপনারা বন্ধ করেন আমি বন্ধ করতে পারবো না।এবং সে জমির মিউটিশন বা খাজনা কেটে যার কাছ থেকে যা খুশি তাই নেয়, ১০ হাজার ২০ হাজার জমি বুঝে এরকম অতিরিক্ত টাকা নেয়। সলেমান মোল্লা বলেন, সরকারি রস্তার পাশে ড্রেজার মেশিন চলে। আমার তশীলদার সাবকে কয়েকবার বলেছি ভাই রাস্তার পাশে ড্রেজার চলে ড্রেজার বন্ধ করেন রাস্তা কিন্তু ভেঙ্গে যাবে। সে বলে আমি এগুলোর ভালো মন্দ কিছু জানিনা। সরকার তো তারে চাকরি দিছে সরকারি জমি দেখবে বলে কিংবা সরকারি জমি কেউ দখল করলে সে না পারলে উপর মহলে অভিযোগ দিবে, কিন্তু সে এগুলোর কিছুই করেন না। তশীলদার ড্রেজার মালিকদের থেকে টাকা খায় নাহলে সে কেন ড্রেজার বন্ধ করেন না। এছাড়া আমার এক আত্মীয়র কাছ থেকে ১৯০ টাকা খাজনা কেটে সে ৩৫ শ টাকা নিয়েছে। প্রতিদিন সেবা প্রার্থীরা এমন অনেকেই পর্চা নেওয়া,খাজনা দাখিলা ও মিউটেশনের জন্য আসলে তাদের কে রিতিমত হেনস্থা সহ হয়রানির শিকার হতে হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিনোদপুর ইউনিয়নের চটারিয়া কান্দির নান্নু মুন্সির স্ত্রী সালমা আক্তার বলেন, আমি তারে বলছি আমার বাবার অংশটা খাজনা কেটে দেন কিন্তু সে দেয়নি আমার থেকে ১৫ হাজার টাকা চাইছে খাজনা কাটার কাগজটা আমার অনেক দরকার ছিলো। এর জন্য আমি অনেক ঘুরছি সে ১৫ হাজার টাকা ছাড়া এক টাকাও কম নিবে না আমাকে অনেক ঘুরাইছে। পরে অনেক চেষ্টা করে আমার এক মামাকে দিয়ে ৬ হাজার টাকায় খাজনা কেটে আনছি। কিন্তু সে আমার সম্পূর্ণ টাকা খাজনার রশিদে উঠাননি। আমি যখন রশিদ হাতে পেলাম দেখি সেখানে সরকারি ফ্রি অনুযায়ী ১২৫ বা ২৫০ টাকার মতো উঠানো। একই গ্রামের আব্দুল হালেম মুন্সির স্ত্রী নুরুন্নেসা বলেন, বর্তমান তশীলদার আবুল হাসেম খাজনা কেটে দেয়ার জন্য আমাকে চার দিন ঘুরাঘুরি করেছে। আমি ৩ শতাংশ জমি বেচার জন্য তাকে খাজনা কেটে দিতে অনেক অনুরোধ করেছি সে খাজনা কেটে দেয়নি বলছে সাত আট হাজার টাকার মতো লাগবে, পরে আমি নিরুপায় হয়ে মেম্বার লিটন মুন্সির কাছে গিয়ে এ ঘটনা জানাই পরে মেম্বার আরও তিন চার দিন তশীলদারের কাছ থেকে ২৫ শ টাকা দিয়ে খাজনা কেটে আনে। এ বিষয়ে বিনোদপুর ইউনিয়নের সহকারী ভুমি কর্মকর্তা আবুল হাসেমের কাছে তথ্য চাইতে গেলে, তিনি উত্তেজিত হয়ে সাংবাদিকদের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। পাশাপাশি তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে সে সকল অভিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা। আমি কারো কাছ থেকে কোন টাকা পয়সা নেইনি। শরীয়তপুর সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) এসিল্যান্ড মনিজা খাতুন বলেন, এটাতো নিউজ করার মতো কোনো বিষয়ই না। আমরা ওনার কর্তৃপক্ষ আপনি জানিয়েছেন আমরা তার কাছে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চাইবো, সে অনিয়ম করেছে কিনা। আমি উনাকে সতর্ক করবো সাবধান করব ওনি যদি অনিয়ম করে থাকে তাহলে আর করবে না। নিউজ করলে তো আর সমাধান হলো না। তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তা তদন্ত করে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্তা নেব।