মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ১২:০৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
মুসলিম স্থাপত্যের অপূর্ব নিদর্শন ৫ টাকার নোটে মুদ্রিত নওগাঁর কুসুম্বা মসজিদ ভালুকায় কৃষকদের মাঝে কৃষি উপকরণ বিতরণ মেলান্দহে অভ্যন্তরীণ বোরো ধান:চাল সংগ্রহের শুভ উদ্বোধন জলঢাকায় কৃষকদের ফসলি জমির ধান নষ্ট পরিবেশ অধিদপ্তর ছাড়পত্র নেই তবুও চলছে ইট ভাটা ভোটারদের আস্থা চেয়ারম্যান প্রার্থী মোটরসাইকেল প্রতীকের এস এম মুইদুল ইসলামের উপর কালীগঞ্জে ৪ কোটি টাকার রাস্তায় নিম্নমানের ইট ব্যবহারের অভিযোগ খাদ্য ও শস্য পণ্য উৎপাদন বাড়াতে পারলে,দেশের আর্থিক অগ্রগতি বাড়বে-এস এম শাহজাদা এমপি আবারও ‘আওয়ামী লীগের সাজানো বিষ্ফোরক মামলায়’ পিরোজপুর জেলা যুবদলের সদস্য সচিব সহ যুগ্ম আহ্বায়ক-১ কারাগারে জগন্নাথপুরে মাদ্রাসার ফলাফল সন্তোষজনক জমে উঠছে পিরোজপুরে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা

সমাজ সংস্কারে যুব সমাজের ভুমিকা

ড. মোস্তাফিজুর রহমান
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১১ আগস্ট, ২০২৩

সংস্কার মানে হচ্ছে পরিবর্তন। সমাজ সংস্কার বলতে এমন কার্যক্রমকে বোঝায় যা মানুষের জীবনকে সরাসরি প্রভাবিত করে। সংস্কার আন্দোলন হচ্ছে সে আন্দোলন যা সামাজিক ও মানবিক সংস্কার করে। সমাজ যেভাবে বা যে উপায়ে চলছে তা পরিবর্তন করে দেয়াটাও সংস্কার। অবশ্য পরিবর্তন যদি বিপ্লবাত্মক হয় তবে তাকে সংস্কার না বলে বিপ্লব বলাই শ্রেয়। শিক্ষা, নারী উন্নয়ন, সংখ্যালঘুদের অধিকার প্রতিষ্ঠা,রাজনৈতিক শূণ্যতা দূরীকরণ, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, সাম্য, সমতা ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি বিষয় গুলো সমাজ সংস্কারের উপজীব্য হতে পারে। প্রাচীন কাল হতেই এই সংস্কার আন্দোলনে যুবকদের অংশগ্রহন ছিল স্বতস্ফ’র্ত ও কার্যকরী
যুবকদের গুরুত্ব:যুবকরা হচ্ছে সমাজের সবচেয়ে কর্মক্ষম অংশ। পরিবর্তনের জন্য যে শক্তি ও ক্ষমতা প্রয়োজন তা একমাত্র যুবকরাই সরবরাহ করতে পারে। ভাঙ্গা গড়ার আঘাত হজম করার সামর্থ্য শুধু তরুনদেরই আছে। সামাজিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন তরুণদের দ্বারাই সম্ভব। দুনিয়ার যে কোন আন্দোলন সংগ্রামের মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে তরুণ সম্প্রদায়। যুবকগন তাদের সাহসী আচরণ দিয়ে সমাজ পরিবর্তন করতে পারে। পবিত্র কালামে পাকে সূরা কাহাফের ৩-১৪ নং আয়াতে আল্লাহ বলেছেন যুবকগন সত্যের প্রতি নিবেদিত এবং তারা তাদের রবের প্রতি বিশ্বস্থ। তাদের প্রতি আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালা তত্ত্বাবধান বাড়িয়ে দেন, তাদের হৃদয়ে শক্তি দান করেন।
রাজনীতিতে যুবকদের ইতিবাচক ভূমিকা:সন্ত্রাস প্রতিরোধ ও দূরীভূত করতে যুবকরা ভুমিকা রাখতে পারে। তাদেরশক্তি, সাহস, বুদ্ধি ও মেধা পুরোপুরি ব্যবহার করা গেলে দেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাবে। তারা দেশের সমস্যা চিহ্নিত করে এবং সমাধান ও করতে পারে। তারা দেশের শিশুদের অধিকার সম্পর্কে শিক্ষা দিতে পারে। অপর যুবকদের প্রেষণা দিতে পারে। ভিন্ন চিন্তা করা ও উদ্ভাবনের সাহস, অসম্ভবকে আবিষ্কার, অগম্য পথে গমন করার সাহস, যন্ত্রনা দূর করা ও জ্ঞানকে শেয়ার করার সাহস অদ্ধিতীয়ভাবে শুধু তরুণদেরই আছে। যুবকদের পৃথিবী হবে দারিদ্র, অসাম্য, শোষন ও প্রতারণা মুক্ত। সেখানে বর্ন, ধর্ম, জাতি, ভাষা, লিঙ্গভেদে কোন বৈষম্য থাকতে পারবেনা। তারা পরিবর্তনে প্রভাবক হতে পারে এবং দ্বন্ধ নিরসনে গুরুত্বপূণর্ অবদান রাখতে পারে। ধারনার বাধা কর্তন, ঝুঁকি গ্রহণের মানসিকতা, প্রযুক্তিগত জ্ঞান, ঐকান্তিকতা ইত্যাদি দিয়ে যুবকগন তাৎপর্যপূর্ণ ভুমিকা রাখতে পারে। রাজনীতি একটি মঞ্চ ও মাধ্যম যা সমাজে ব্যাপক ও স্থায়ী প্রভাব ফেলে। সুতরং সিদ্ধান্তগ্রহন প্রক্রিয়ায় যুবকদের অংশ গ্রহন না থাকলে তা বক্রতা সম্পন্ন হবে।
যুবকদের বর্তমান বিচ্যুতি: দুর্ভগ্যজনক ভাবে যুবসমাজ আজ লক্ষ্যচ্যুত। অনেকের লক্ষ্য টাকা, সুনাম ইত্যাদি। তারা সেসব বিষয়ে আগ্রহী যা নিজের অথবা জাতির কোন কল্যানে আসেনা। কেউ ড্রাগ নিয়ে আর কেউ গেইম খেলে সময় পার করছে। কেউ পার্টিতে গিয়ে আর কেউ হতাশায় আবদ্ধ হয়ে যৌবন ক্ষয় করছে। কেউ টেলিভিশন দেখে দেখে আর কেউ অসুস্থ ও অন্ধকার গলিতে এবং অপরাধ জগতে হেঁটে হেঁটে জীবন জয়ের চেষ্টায় আছে। এসব যুবকের কোন ভিশন নেই এদের কোন স্বপ্নও নেই। ফল যা দাঁড়াচ্ছে তা হল সমাজে অপরাধ প্রবণতা ও ঘটনা এবং আপত্তিজনক কাজ বাড়ছে। সামাজিক জীবনের উপর হুমকী প্রবল হচ্ছে। সমাজে দাঙ্গা হাঙ্গামার প্রসার হচ্ছে, বেঈমানের সংখ্যাও বাড়ছে। ফলে যুবকরা মানুষের অনুভুতিতে আঘাত করতে দ্ধিধা করছেনা। এভাবে চলতে দেয়া যায়না। তবুও যুবক: মূল বিষয় হচ্ছে যুবকদের কোন বিকল্প নেই। এসমাজকে ভাঙ্গতে গেলে যুবক লাগবে, গড়তে গেলে যুবক লাগবে, সংস্কার করতে চাইলে যুবক লাগবে। যুবকগন এগিয়ে না আসলে সমাজ সেই তিমিরেই থেকে যাবে। আমরা লক্ষ্য করলে দেখব আজকের কঙ্গো, লাইবেরিয়া, এঙ্গোলা, সিয়েরালিওন, রুয়ান্ডা ও সোমালিয়ার সংকটের দিকে। সেখানে যোদ্ধা এবং ভিকটিম সর্বত্রই কেন্দ্রীয় ভুমিকায় কার্যকর, শক্তিশালী ও পাশবিকভাবে যৌবনের উপস্থিতি লক্ষণীয়। যুক্তরাষ্ট্রসহ গোটা দুনিয়ায় গনতান্ত্রিক নির্বাচনে যুবকদের ভোট ফলাফল নির্ধারনে ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে। খাদ্রদ্রব্য হতে শুরু করে পোষাক আশাক-কালচার, জীবনাচার, রাজনীতি-সমাজনীতি সবক্ষেত্রেই কোন নতুন কিছু চালু করা কিংবা পুরাতন কিছু বর্জন করা সর্বত্রই যুবকের কাজ। যে কোন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যুবকগন সহজে অভিযোজিত হতে পারে। যুবকদের আত্মবিশ্বাস বেশী থাকে। টিম স্পিরিট যুবকদের অধিক। যুবকদের দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক। যুবকগন যুবকদের সাথে কাজ করতে আগ্রহী বেশী। তাই তাদের কাজের ফলাফল জ্যামিতিক হারে আদায় করা যায়। অতএব সমাজকে পরিশীলিত করতে চাইলে, এগিয়ে নিতে হলে, চ্যালেঞ্জে উত্তীর্ণ হতে হলে, উন্নয়নের পথে হাঁটতে চাইলে, অচলায়তন ভাঙ্গতে গেলে, জাতিকে স্বপ্ন দেখাতে চাইলে, সামাজিক ন্যয় বিচার প্রতিষ্ঠা করার প্রয়োজনে যুবকদের কাজে লাগাতে হবে। যুবকদের এগিয়ে আসতে হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com