নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার পূর্বদিক দিয়ে বয়ে গেছে চাড়াল কাঠা নদী। জেলা থেকে সদর উপজেলার রামনগর, জলঢাকা উপজেলার শিমুলবাড়ি ও খুটামারা ইউনিয়নে পাড় সৃষ্টি করেছে এ নদী। এক সময় দুইপাড়ের মানুষের একমাত্র যোগাযোগের বাহন ছিল। নৌকা। ঘুঘুমারী নাও ঘাটে নদীটির ওপরে সেতু নির্মাণ করা হবে- স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বারবার এমন আশ্বাস দিলেও সেতুর কাজ আর শুরু হয়নি। অবশেষে আশ্বাসের ওপর ভরসা না করে ২৯০ ফিট দৈর্ঘ্যের কাঠের সেতু নির্মাণ করেছেন স্থানীয়রা। সেই সঙ্গে নদীর দুই পাড় মিলিত হয়ে এ জনপদের যোগাযোগকে করলো সহজ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘুঘুমারী নাওঘাটে ১৯৭১ সালে একটি বাঁশের সাঁকো ছিল। বন্যায় সাঁকোটি ভেঙে যায়। এরপর থেকে পারাপার চলছিল খেয়া নৌকায়। দাবি ওঠলেও সেতু নির্মাণ করেনি কেউ। এতে রামনগর, শিমুলবাড়ি ও খুটামারা ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষকে জেলা শহরে যাওয়ার জন্য প্রায় ২০ কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে হতো। আর না হয় ঝুঁকি নিয়ে পাড় হতে হতো চারাল কাঠা নদী। শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবা, সরকারি অফিস আদালত যাতায়াতে প্রতিবন্ধকতা ছিল এ নদী, পোহাতে হচ্ছিল চরম দুর্ভোগ। স্থানীয়রা জানান, নীলফামারী-৩ আসন থেকে নির্বাচিত সব সংসদ সদস্যই ঘুঘুমারী নাওঘাটে সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু কথা রাখেননি কেউ। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ একাধিকবার সেতু নির্মাণের জন্য মাপ নিলেও ফল আসেনি কোনো। বর্তমান সংসদ সদস্য মেজর রানা মোহাম্মদ সোহেল (অবঃ) বাঁশের সাঁকো নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দিলেও তা ছিল খুব সামান্য। কাঠের সেতুটি নির্মাণে তাদের ব্যয় হয়েছে সাত লাখ টাকা। স্থানীয় সামাজিক সংগঠন “ঘুঘুমারী সোসাল ওয়েলফেয়ার” এ সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। এলাকাবাসীর চাঁদার টাকা দিয়ে রড সিমেন্টের পিলার ও কাঠ দিয়ে বানানো হয় দৃষ্টিনন্দন সেতুটি। ৫৩টি খুটির ওপড় দাঁড়ানো লাল সাদা সবুজ রং আকর্ষণীয় করে তুলেছে সেতুটিকে।