রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
প্রথম পুরস্কার অর্জন করল শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি ইসলামী ব্যাংকের মাস্টার কার্ড এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ডস অর্জন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ক্যাথরিনের সঙ্গে ফখরুলের বৈঠক জননেতা হাফিজ ইব্রাহিমকে নিয়ে ফেসবুকে অপ-প্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ত্রিশালে মাছ উৎপাদনে ১ বছরে এআই পদ্ধতিতে উৎপাদন খরচ কমবে প্রায় শত কোটি টাকার, জমি সাশ্রয় হবে দুই হাজার হেক্টর ভারত শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় বসানোর যড়ষন্ত্র করছে-রিজভী শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার ষড়যন্ত্র শেষ হয়নি: গোলাম পরওয়ার মির্জা ফখরুলের সঙ্গে অস্ট্রিয়ার রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ প্রতিবাদের নয়া ধরন, নাচতে নাচতে পার্লামেন্টে বিল ছিঁড়লেন তরুণী এমপি আলু-পেঁয়াজের দাম বাড়ছেই

রমরমা কোচিং ব্যবসা পরিহার করতে হবে: প্রেসিডেন্ট

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৩

প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিন দেশের শিক্ষার মান উন্নয়নে সবাইকে কোচিং ব্যবসা পরিহারের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি শিক্ষার্থীদেরকে বিশ্বমানের আনুষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষায় সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলারও তাগিদ দেন। রাষ্ট্রপ্রধান গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে “বিশ্ব শিক্ষক দিবস” উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনায় প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি একথা বলেন।
প্রেসিডেন্ট বলেন “এক শ্রেণির অসাধুচক্র ও কতিপয় বিপথগামী শিক্ষক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কোচিং সেন্টারের নামে রমরমা ব্যবসা করছে। শিক্ষার মান উন্নয়নে এই কোচিং ব্যবসাকে পরিহার করতে হবে।” তিনি বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের জ্বালিয়াতি থেকেও উত্তরণ ঘটাতে সরকার, মন্ত্রণালয়, শিক্ষক, অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে।
শিক্ষাদান পদ্ধতি আন্তর্জাতিক মানসম্মত করার পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা বিশ্ব প্রতিযোগিতায় সাফল্যের সাথে এগিয়ে যেতে পারে। রাষ্ট্রপতি বলেন “আমরা চাই দেশের প্রতিটি শিক্ষার্থী সুশিক্ষিত ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠুক এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশকে এগিয়ে নিতে অবদান রাখুক।” ছেলেমেয়েদের প্রতিভা বিকাশের পথ দেখাতে সকল শিক্ষক ও অভিভাবকদেরকে সচেষ্ট হওয়ারও পরামর্শ দেন রাষ্ট্রপতি। তিনি ছেলেমেয়েদের জিপিও-৫ পাইয়ে দেয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতা এবং জিপিএ ৫ পেয়েও মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ন্যূনতম যোগ্যতা অর্জন করতে না পারারও কঠোর সমালোচনা করেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, “দেশের সমাজ ব্যবস্থায় এখনও শিক্ষকদের সম্মান ও মর্যাদা অন্য যে কোনো পেশার তুলনায় অনেক ঊর্ধ্বে। কিন্তু এই সামাজিক অবক্ষয়ের যুগে কিছুসংখ্যক বিপথগামী শিক্ষকের জন্য গোটা শিক্ষক সমাজের সম্মান ও মর্যাদা ক্ষুণ্ন হতে পারেনা।”
তিনি সম্মাননাপ্রাপ্ত সকল গুণী শিক্ষককে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, শিক্ষকগণ আধুনিক, বিজ্ঞানমনস্ক এবং উন্নত জীবনবোধ ও নেতৃত্ব গুণসম্পন্ন নাগরিক তৈরির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে অবদান রেখে যাবেন।
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষক বিদেশে গিয়ে কতটুকু প্রশিক্ষণ নেন এবং দেশে ফিরে ক্লাসরুমে এর কতটুকু প্রয়োগ করেন সে বিষয়টিও মনিটরিং করতে করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দেন।
শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি বলেন, “সমাজ গঠনে ও দেশের সার্বিক উন্নয়নে আপনাদের কার্যকর ভূমিকা অপরিহার্য। আপনারা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ন্যায়-অন্যায়, সত্য ও মিথ্যার পার্থক্য বুঝাবেন, মানবসেবা ও দেশপ্রেম এবং পিতা-মাতার প্রতি দায়িত্বশীল হওয়ার শিক্ষা প্রদান করবেন। শিক্ষার্থীদের সাথে পিতা-মাতাতুল্য আচরণ করবেন। শাসন করবেন, কিন্তু শাস্তি নয়।” জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিক্ষকদের প্রতি গভীর মমত্ববোধ এবং দেশের উন্নয়নে শিক্ষার গুরুত্ব অনুধাবন করে ১৯৭৩ সালে একদিনে একযোগে ৩৬,১৬৫ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেছিলেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের শিক্ষা ক্ষেত্রে গৃহীত বহুমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা ২০১৩ সালে ২৬,১৯৩টি বেসরকারি এবং রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেন। এছাড়া প্রায় ২৮০০০ এমপিও ভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সরকার নিয়মিত প্রায় শতভাগ আর্থিক সুবিধা প্রদান করছে।
রাষ্ট্রপ্রধান শিক্ষকদের বেতন-স্কেল, আনুষঙ্গিক ভাতা, পদোন্নতিসহ যেকোনো অসঙ্গতি থাকলে তা দূর করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান। শিক্ষক এবং শিক্ষা প্রশাসন দেশে মানসম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে এবং শিক্ষকদের মর্যাদা বৃদ্ধিতে একযোগে কাজ করবেন বলে তিনি আশা করেন।রাষ্ট্রপতি সরকারের পাশাপাশি শিক্ষক, অভিভাবক ও সুধীজনদেরকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের লেখাপড়ার মানোন্নয়নে এবং শিক্ষা ব্যবস্থায় শহর-গ্রামের বৈষম্য নিরসনে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেয়ার ও আহ্বান জানান।
শিক্ষামন্ত্রী ডা.দীপু মনির সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, ইউনেসকো ঢাকা অফিসের প্রতিনিধি ড. সুসান ভাইজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. লাফিফা জামান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, ঢাকা গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরী হাই স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক ইসমত আরা মমতাজ এবং খিলগাঁও শান্তিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পল্লব কুমার ভৌমিক। “কাঙ্ক্ষিত শিক্ষার জন্য শিক্ষক: শিক্ষক স্বল্পতা পূরণে বৈশ্বিক অপরিহার্যতা”- এই বাস্তবতাকে সামনে রেখে বিশ্বের সকল শিক্ষকের প্রতি সম্মান জানাতে প্রতি বছরের মতো এবারও পালিত হচ্ছে “বিশ্ব শিক্ষক দিবস”।
এই দিনে বিশ্বের সকল শিক্ষককে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি। অনুষ্ঠানে “বিশ্ব শিক্ষক দিবস ২০২৩” এর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। অনুষ্ঠানে সাতজন কৃতি শিক্ষককে সম্মাননা দেয়া হয়।
সূত্র: বাসস




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com