ধর্মশালায় বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তানের মধ্যকার ম্যাচে ধারাভাষ্যকারদের কণ্ঠে বার বার উঠে এসেছে মাঠের আউটফিল্ডের দুরবস্থার কথা। শুরুতে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। প্রথম দিকে ফাস্ট বোলাররা বোলিং মার্ক থেকে দৌড়ে আসতে ভুগছিলেন, বার বার বোলিং মার্কে ফেরার সময় অস্বস্তি প্রকাশ করেছেন তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম। ম্যাচ শেষে আফগানিস্তানের কোচ সাবেক ইংল্যান্ড ক্রিকেটার জনাথন ট্রট বলেন, মুজিব উর রহমান যে বড় ধরনের কোনো চোটে পড়েননি এটা সৌভাগ্যের বিষয়। ধর্মশালার আউটফিল্ড ছিল বালুর, যার ওপরে ঘাস দিয়ে ঢাকা। কোনো ফিল্ডার স্লাইড করলেই সেই বালু উপড়ে আসছিল যা টেলিভিশন স্ক্রিনে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল। সাকিব আল হাসানের একটা সুইপ শট থেকে বাউন্ডারি ঠেকাতে গিয়ে মুজিবের হাঁটু আটকে গিয়েছিল মাটিতে, মনে হচ্ছিল ইনজুরি বড় হতে পারত, হয়নি। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারতের তৃতীয় টেস্ট ধর্মশালায় হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আউটফিল্ড বিবেচনা করে অল্প দিনের নোটিশে সেই টেস্ট সরিয়ে নেয়া হয় ইন্দোরে, কিন্তু সেখানেই হচ্ছে বিশ্বকাপের মতো মেগা ইভেন্টের ম্যাচ!
আফগানিস্তানের কোচ ট্রট বলেছেন, ‘আমি এই মাঠের কন্ডিশনকে হারের কারণ মনে করি না। কিন্তু হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের এই স্টেডিয়াম খেলার জন্য ফিট কি না সেটা দেখা প্রয়োজন ছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের।’
‘ক্রিকেটাররা এখানে ডাইভ দিতে পারবে কি না সেটা নিশ্চিত করে বলা যায় না। পৃথিবীব্যাপী ফিল্ডিংয়ের মান বাড়ার কারণ ভালো আউটফিল্ড। এখন যদি একজন ফিল্ডার ঝাঁপিয়ে পড়ার আগে ভাবেন যে চোট পাবেন কি না, সেটা তো মানা যায় না।’ এই মাঠেই ১০ তারিখ আবারো মাঠে নামবে বাংলাদেশ, ম্যাচটা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। এই ম্যাচে মাঠে নেমে দুই দলই সতর্ক থাকবে বলে লিখেছেন ইএসপিএন ক্রিকইনফোর প্রতিবেদক ম্যাট রোলার। ‘গত দেড় বছরে রিস টপ্লে ও জনি বেয়ারস্টো, পাগলাটে কিসিমের ইনজুরিতে পড়েছেন। এটা এই টুর্নামেন্টের কেবলই শুরু। এই সময়ে কেউই কোনো চোটে পড়তে চাইবেন না,’ তিনি লিখেছেন।
ক্রিকেট বিশ্লেষক ও কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেন, ‘ধর্মশালায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে যে কেউ চোট পায়নি এটাই একটা বড় বিষয়”।
তার মতে, এটা নিয়ে অনেক আলোচনা হয়ে গেছে। এই মাঠটা মোটেই খেলার জন্য উপযুক্ত না, বিশ্বকাপ তো নাই এমনকি সাধারণ খেলার জন্যও উপযুক্ত না।
তিনি বলেন, এখানে এমন ইনজুরিও হতে পারে যার কারণে ক্যারিয়ার হুমকির মুখে পড়তে পারে। ‘কেউ যদি বলে এই মাঠে আমি খেলব না। তাহলে দোষ দেয়ার কিছু নেই। কোনো দল যদি বলে এই মাঠে খেলব না। দোষ দেয়ার সুযোগ নেই’, বলছেন নাজমুল আবেদীন ফাহিম।
তিনি মনে করেন, এটা যদি ভারত না হয়ে অন্য কোনো দেশে মাঠের এই পরিস্থিতি দেখা যেত, সেক্ষেত্রে অনেক বড় সমস্যার সম্মুখীন হতে পারত। এই মাঠে ভারতেরও ম্যাচ রয়েছে ২২ অক্টোবর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। সূত্র : বিবিসি