ময়মনসিংহে রেকর্ড বৃষ্টিপাতে জেলার অন্যান্য উপজেলার ন্যায় তারাকান্দা উপজেলায় মৎস্যখাতে ও কৃষিখাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলার মৎস্য খাতে। আকস্মিক রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টির সময় কৃষকের প্রস্তুতি না থাকায় বৃষ্টির ভাসা পানিতে উপজেলার ৫৫ শতাংশ মাছ চাষের পুকুর তলিয়ে গেছে ৩৮০ হেক্টর জমি। যার ক্ষতির পরিমান প্রায় শত কোটি টাকা। উপজেলার গোপালপুর, চর কৃষ্ণপুর, নলদিঘী, হরিয়াগাই, ডেঙ্গুলিয়া কান্দা, মাঝিয়ালী, বানিহালা, কালাই জানি, তালদিঘি, দাদরা, পঙ্গুয়াই, বালিখা, পাগুলি, কামারিয়া, কোদালধর, রামপুর, চারিয়া, সীমান্তলী, রাজধারিকেল, বিসকাসহ সমগ্র উপজেলার সরজমিনে ঘুরে এবং চাষীদের সাথে কথা বলে জানা যায় অধিকাংশ চাষী কম বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাংলাদেশ ফিস হ্যাচারি এন্ড ফার্ম অনার্স অ্যাসোসিয়েশন এর সিনিয়র সহ-সাধারণ সম্পাদক শফিকুল তালুকদার জানান, আকস্মিক টানা ২৪ ঘন্টার বৃষ্টিতে তারাকান্দা উপজেলায় মৎস্য খাতে কয়েকশো কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এমনকি আমার বিক্রির উপযুক্ত মাছের ছয়টি পুকুর বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে পাঙ্গাস বাংলা সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ভেসে চলে গেছে। বৃষ্টিতে যতটুকু সম্ভব নেট জাল দিয়ে আটকে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে এরপরও অনেক মাছ চলে গেছে। এতে প্রায় আমার ২০ থেকে ২৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। শুধু আমার নয়, সমগ্র উপজেলার সকল চাষীদের একই অবস্থা। বিসকা ইউনিয়নের রফিকুল ইসলাম বলেন, ৪টি পুকুরের পাড় ডুবে ৭ লাখ টাকার মাছ চলেগেছে। বালিখাঁ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল আলম বলেন, আমার ইউনিয়নে শত শত মৎস্য চাষির পুকুর তলিয়ে গেছে, এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুরজিৎ পারিয়াল বলেন, বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি ফিসারি পরিদর্শন করেছি। উপজেলা দুর্যোগ মোকাবেলা জরুরি সভা করা হয়েছে। উপজেলার দশটি ইউনিয়নে ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের তালিকা করতে বলা হয়েছে, কি পরিমাণ চাষীর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা নির্ণয় করতে। তিনি আরো বলেন, অফিসে এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত অনেক মৎস্য চাষী এসেছিল সাহায্যের বিষয়ে জানার জন্য।আমরা তাদের বলেছি এই দুর্যোগপূর্ণ সময় সরকার আপনাদের পাশে থাকবেন। তথ্য মতে, এই উপজেলায় ব্যক্তি মালিকানাধীন ২৩৭১.৫৫ হেক্টর জমিতে মাছ চাষ করা হয়। উপজেলায় মোট মাছের উৎপাদন ৩২ হাজার ২৫০ মে: টন। উপজেলায় মোট মাছের চাহিদা রয়েছে ৪ হাজার ৫ শত ২২ মে:টন। যার বাকি ২৭ হাজার ৭২৮ মেট্রিক টন সারাদেশে মাছের চাহিদা মিটিয়ে বিশেষ অবদান রাখছে। এই দুর্যোগপূর্ণ সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষীদের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিবেন সরকার এমনই প্রত্যাশা ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষিগণের।