বেতন বাড়ানোর দাবিতে গাজীপুরের কালিয়াকৈরের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে অষ্টম দিনের মত বিক্ষোভ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করছে শ্রমিকরা। এই মহাসড়কে চলছে না দূরপাল্লার কোনো যানবাহন। এমনকি আ লিক সড়কগুলোতেও পরিবহনের সংখ্যা খুবই কম। আন্দোলনরত শ্রমিকরা পুলিশ বক্স, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালে ভাঙচুর করেছে।
বেতন বৃদ্ধির দাবিতে গত সাত দিন যাবৎ চলমান শ্রমিক আন্দোলনের সাথে গতকাল সোমবার গাজীপুর মহানগরের দু’টি কারখানায় দুই শ্রমিকের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ায় আজ মঙ্গলবার বিক্ষোভ ও সহিংসতার তীব্রতা বেড়েছে। এদিকে শ্রমিক বিক্ষোভের কারণে সহিংসতা এড়াতে কালিয়াকৈর উপজেলা ও পৌরসভা এলাকার অধিকাংশ শিল্প কারখানায় সাধারণ ছুটি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বন্ধ রয়েছে মার্কেট, কাঁচা বাজার ও শপিংমলগুলো।
কারখানার শ্রমিক ও পুলিশ জানায়, উপজেলার তেলিরচালা এলাকার পূর্বাণী গ্রুপের করিম টেক্সটাইল কারখানার শ্রমিকরা সর্বনি¤œ বেসিক বেতন ১৫ হাজার টাকা করার দাবিতে গত সোমবার (২৩ অক্টোবর) সকাল ৯টায় কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। এসময় আশপাশের লোগোজ অ্যাপারেলস, হাইড্রোক্সাইড সোয়েটার কারখানা, এপিএস অ্যাপারেলস, বে ফুটওয়ার কারখানার শ্রমিকরা তাদের সাথে যোগ দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড ও বাজারে লাঠিসোটা হাতে অবস্থান নিয়েছেন নামধারী শ্রমিকরা।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বাড়ৈপাড়া, চন্দ্রা, চান্দরা পল্লীবিদ্যুৎ, সফিপুর ও মৌচাক এলাকায় শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে ভাঙচুর চালিয়েছে। তারা বাড়ৈপাড়া এলাকার ওয়াল্টন প্লাজা শোরুমে বেলা ১১টার দিকে আগুন ধরিয়ে দেয়। কালিয়াকৈর থানার পুলিশ গিয়ে শ্রমিকদের ধাওয়া করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এর আগেই শোরুমটি প্রায় ভস্মিভূত হয়ে যায়। এছাড়া সফিপুর তানহা হাসপাতালে ব্যাপক ভাঙচুর করেছে। আগুন দিয়েছে সফিপুর ফ্লাইওভারের নিচে থাকা পুলিশ বক্সেও। ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে মৌচাক পুলিশ ফাঁড়িতে। মৌচাক পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত উপ-পরিদর্শক সাইফুল আলম জানান, ইট পাটকেল ছোড়ার সময় কোনো স্লোগানও দেয়নি তারা। তাই তারা প্রকৃতপক্ষেই শ্রমিক কি-না বুঝা যায়নি। পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছে। কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান বলেন, শ্রমিকরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে। পুলিশ ফাঁড়ি ভাঙচুর করেছে। মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়েছে। দোকানপাট ও একটি হাসপাতাল ভাঙচুর করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ, র্যাব ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে। উল্লেখ্য, গত ২৩ অক্টোবর থেকে গাজীপুরে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন করে আসছে।