মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩০ পূর্বাহ্ন

ফ্যাসিবাদী শাসন ও সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে ডিইউজে’র বিক্ষোভ

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৩

ফ্যাসিবাদী শাসন ও সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। গত বুধবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ-পূর্ব সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ২৮ তারিখে পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেট ও টিয়ার সেলের আঘাতে অর্ধশতাধিক সাংবাদিক রক্তাক্ত জখম হয়েছেন। অথচ একটি কুচক্রী মহল পুলিশী নির্যাতনের ঘটনাকে আড়াল করার জন্য গোয়েবলসীয় কায়দায় মিথ্যাচার করছে। তারা এ মিথ্যা তথ্য প্রচারের সাথে জড়িত চিহ্নিত এ মহলটির বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল কদম ফোয়ারা, তোপখানা রোড ও পুরানা পল্টন হয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এসে শেষ হয়।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খানের উপস্থাপনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন-বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, বিএফইউজে’র সাবেক মহাসচিব এমএ আজিজ, ডিইউজে’র সাবেক সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, ডিউইজের সাবেক সহ-সভাপতি আমিরুল ইসলাম কাগজী, ডিইউজে’র সহ-সভাপতি রাশেদুল হক, যুগ্ম সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার, ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি এ কে এম মহসিন, সিনিয়র সাংবাদিক কায়কোবাদ মিলন ও আবুল কালাম মানিক, ডিইউজে’র সাবেক সহ-সভাপতি শাহীন হাসনাত, ডিইউজে’র সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান সাজু এবং বিএনপির মহাসমাবেশে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেট ও বেধড়ক পিটুনিতে আহত রাজু আহমেদ বক্তব্য রাখেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিইউজে’র ক্রিড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক রফিক লিটন, বিএফইউজের নির্বাহী সদস্য জাকির হোসেন, ডিইউজের নির্বাহী সদস্য নিজাম উদ্দিন দরবেশ, আব্দুল্লাহ মজুমদার, তালুকদার রুমী, ফখরুল ইসলাম, মো. আবু হানিফ, সাখাওয়াত ইবনে মঈন চৌধুরী, সর্দার মতিন, আলম চৌধুরী, মিজানুর রহমান প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রুহুল আমিন গাজী বলেন, আওয়ামী লীগ সাংবাদিক, গণতন্ত্র একসাথে চলতে পারে না। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই অসংখ্য মিডিয়া বন্ধ করেছে। আর এখন ক্ষমতায় এসে দিনকাল, আমার দেশ, দিগন্ত টিভিসহ অসংখ্য মিডিয়া বন্ধ করেছে। ২৮ অক্টোবর পুলিশী নির্যাতনের ঘটনাকে সরকারের তাঁবেদার সাংবাদিকরা বলছে বিএনপি করেছে। অথচ পুরো ঘটনাটি ঘটেছে সরকারের নির্দেশে। কারণ, তারা গণতন্ত্র চায় না, সত্য ঘটনা প্রকাশিত হোক তা চায় না। জনগণের ভোটাধিকারে বিশ্বাস করে না। তাই মানুষের অধিকার আদায় ও সাংবাদিক হত্যার বিচার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।
এম এ আজিজ বলেন, প্রেস ক্লাবের সামনে বাসে আগুন দেয়, পুলিশ সেখানে চুপ থাকে। ২৮ তারিখে মেয়র তাপসসহ আওয়ামী লীগ নেতারা ছাত্রলীগ, যুবলীগকে লাঠি তুলে দিয়েছিল বিরোধী নেতা কর্মীদের ওপর হামলা করার জন্য। তিনি বলেন, সরকার হেফাজতের ওপর যেভাবে তান্ডব চালিয়েছে ২৮ তারিখেও একইভাবে পুলিশের মাধ্যমে হামলা করেছে। এই অগণতান্ত্রিক সরকারকে বিদায় জানিয়ে সাংবাদিক ও দেশকে রক্ষা করতে হবে।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, সাংবাদিক রফিক ভূইয়া টিয়ার সেলে আহত হয়ে মারা গেছেন। কিন্তু এটা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার নোংরামিতে লিপ্ত কুচক্রীমহল। আজকে প্রমাণিত হয়েছে আওয়ামী লীগ আর গণতন্ত্র একসাথে চলতে পারে না। আজকে দেশের জনগণ দিশেহারা। তারা দুমুটো ভাত ঠিক করে খেতে পারে না। আওয়ামী লীগ নেতারা কোটি কোটি টাকা লুট করে বড় বড় অট্টালিকায় আরাম করছে। আজকে দেশের মানুষ বাঁচতে চায়। আমাদের বাঁচতে হলে চূড়ান্ত লড়াই করে সরকারকে বিদায় করার আন্দোলনে সকলকে শরিক হতে হবে।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলামের সভাপতির বক্তব্যে বলেন, বর্তমান সরকার গত ১৫ বছর ধরে যেখানে স্বাধীন সাংবাদিকতার টুঁটি চেপে ধরে রেখেছে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করেছে, সাগর – রুনিসহ ৬০ জন সাংবাদিককে হত্যা করেছে, আইসিটি, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট এবং সর্বশেষ সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট করে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মিথ্যা মামলা দিয়ে বিনা বিচারে বছরের পর বছর সাংবাদিকসহ সাধারণ মানুষকে কারাগারে রেখেছে তার প্রতিবাদ না করে সরকারকে অতিমাত্রায় কর্তৃত্ববাদী হয়ে ওঠার পথকে প্রসারিত করছেন। গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির স্মরণকালের সর্ববৃহৎ মহাসমাবেশ যখন শান্তিপূর্ণভাবে এগিয়ে যাচ্ছিল ঠিক তখনই সরকারের এজেন্টরা সাদা পোশাকে এবং যুবলীগ-ছাত্রলীগ প্রধান বিচারপতির বাসভবন, সাংবাদিক ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপর হামলা চালিয়ে পরিবেশ ঘোলাটে করে তোলে। পুলিশ, যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের যৌথ হামলায় প্রবীণ সাংবাদিক নেতা রফিক ভূইয়া, পুলিশ সদস্য আমিরুল ইসলাম পারভেজ এবং যুবদল নেতা শামীম মোল্লা ঘটনাস্থলেই নিহত হন। আহত হন অর্ধশত সাংবাদিক। সেই হাঙ্গামার সুযোগে দাঙ্গা পুলিশ নির্বিচারে সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে বিএনপির শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ পন্ড করে দেয়। তারা সমাবেশের মাইকের তার বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে নেতৃবৃন্দের বক্তব্য প্রচারে বাধা সৃষ্টি করে। খুরশীদ আলম ২৮ তারিখে পুলিশ এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীদের তা-বকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, সরকারি এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য যে কুচক্রীমহল মিথ্যাচার করছে এর বিরুদ্ধে আমাদের দুর্বার আন্দোলন চলবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com