বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (গাজীপুর) পোস্টহারভেস্ট টেকনোলজি বিভাগের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ মাইনউদ্দিন মোল্লা ও তার সহযোগীরা আনারসের লাড্ডু তৈরির প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন। আনারসের পোমেজ বল (লাড্ডু) প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংরক্ষণ এবং বাজারজাতকরণের উদ্দেশ্যে তারা এ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেন।
বাংলাদেশ সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বিশেষ গবেষণা অনুদান প্রকল্পের আর্থিক সহায়তায় তারা এ লাড্ডু তৈরির প্রযুক্তি প্রথম উদ্ভাবন করেন।
জানা গেছে, বাংলাদেশের প্রধান পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ফলগুলোর মধ্যে অন্যতম আনারস। মৌসুমে অধিক পরিমাণে উৎপাদিত হওয়ায় এর মূল্য কমে যায়। তাছাড়া পচনশীল, অনুন্নত প্যাকেজিং ব্যবস্থাপনা, রাফ হ্যান্ডলিং এবং ঝাঁকুনির কারণে এর প্রায় ৪৩% সংগ্রহোত্তর ক্ষতির সন্মুখীন হয়। উৎপাদন মৌসুমে আধিক্য এবং অন্য সময় তুলনামূলকভাবে কম থাকে। এজন্য এটি সঠিক প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে সংরক্ষণ করা গেলে অমৌসুমে এর মাধ্যমে পুষ্টির চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।
আনারসের জেলী তৈরির পর যে অব্যবহৃত অংশ (পোমেজ) থাকে, তা থেকে তৈরি করা হয় লাড্ডু। বাংলাদেশের সব অ লে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাবে। এ অব্যবহৃত অংশ থেকে লাড্ডু তৈরিতে মোট ব্যয় ও আয়ের হিসাবে উৎপাদন খরচ এবং লাভের অনুপাত ১:১.৩৩। এ লাড্ডুর পুষ্টি গুণাগুণ সম্পর্কে জানতে চাইলে গবেষক দলের প্রধান ড. মোহাম্মদ মাইনুদ্দিন মোল্লা জানান, আনারসের এ লাড্ডুতে রয়েছে উচ্চ গুণাগুণ সম্পন্ন ডায়াটারি ফাইবার, যা ক্ষুধা হ্রাসের মাধ্যমে শরীরের ওজন কমাতে সাহায্যে করে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ও সি। বাজারের বর্তমানে প্রচলিত বেশিরভাগ লাড্ডুগুলো তৈরিতে কোনো ফল ব্যবহৃত হয় না। বরং সেগুলো তৈরি করতে ব্যবহার করা হয় ডালডাসহ বিভিন্ন পারমিটেড রং, কেমিক্যাল ও প্রিজারভেটিভস। আনারসের এ লাড্ডুতে ডালডাসহ কোনো প্রকার ফুড এডিটিভস ব্যবহার করতে হয় না বলে স্বাস্থ্যগত দিক দিয়ে এটি শতভাগ নিরাপদ বলে জানান এ গবেষক।
এছাড়াও এ লাড্ডু প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং বাজারজাতকরণের মাধ্যমে গ্রামীন কুটির শিল্প স্থাপন এবং নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।