বাংলায় সংখ্যালঘু ভোট শাসক দল তৃণমূলের কাছে বড় আস্থার জায়গা। কিন্তু শুধু সেই ভোটের ওপর নির্ভর করতে চাইছেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলায় ধর্মনিরপেক্ষ ও উদার হিন্দুদেরও সমর্থন পেতে তিনি সচেষ্ট। গতকাল মঙ্গলবার জয়নগরে প্রশাসনিক সভা করে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ২০২৪ এর লোকসভা ভোটের ঠিক আগে অযোধ্যায় নবনির্মিত রাম মন্দিরের উদ্বোধন হবে। তা নিয়ে মোদি সরকার এবং উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকার যে আড়ম্বরের আয়োজন করেছে তার পেছনে পুরোদস্তুর রাজনীতি রয়েছে বলে মনে করেন বিরোধীরা। বাংলাতেও রাম মন্দির নিয়ে প্রচার চালাচ্ছে সঙ্ঘ পরিবার ও বিজেপি।
সেপ্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিলো রাম মন্দির নিয়ে আপনার কী বক্তব্য? আমি বললাম, ধর্ম যার যার নিজের, উৎসব কিন্তু সবার। আমি সেই উৎসবে বিশেষ করি যা সবাইকে নিয়ে চলে।” মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “বাংলা শান্তির জায়গা, বাংলা কোনও ভেদাভেদ করে না, বাংলা মুসলমানদের মক্কা মদিনা, বাংলা হিন্দুদের দক্ষিণেশ্বের-বেলুড়মঠ, বাংলা তফসিলিদের মতুয়া ঠাকুর, বাংলা আদিবাসীদের জাহের থান।” বিজেপির উদ্দেশে মমতার বার্তা ” অন্য সম্প্রদায়ের মানুষকে অবহেলা করা ঠিক কাজ নয়।” তিনি প্রতিশ্রুতি দেন- “তৃণমূলের সরকার যতদিন থাকবে বাংলায় শিখ-খ্রীষ্টান, তফসিলি-আদিবাসীদের ভাগাভাগি হতে দেব না।” মুখ্যমন্ত্রীর মুখে এদিন শোনা যায় এনআরসি প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, ‘ভোটার লিস্ট হচ্ছে আবার। যার নাম নেই, গিয়ে তুলুন। না হলে এনআরসির নামে ক্যা ক্যা করবে কিন্তু।
সংখ্যালঘু উন্নয়নে বাংলা বিশ্বে প্রথম। এটা আমাদের গর্বের জায়গা। গ্রামীণ রাস্তার জন্য ৪০০০ কোটির প্রকল্প হাতে নিয়েছি। জয়নগরের মোয়া জিআই পেয়ে বিশ্ববিখ্যাত হয়েছে। আমরা আড়াইকোটি টাকা ব্যয়ে জয়নগরে মোয়া হাব করছি। সুন্দরবনের মধুও জিআই পেয়েছে। জেলার মুকুটে দুটো স্বর্ণ পালক। ৭০০ কোটির প্রকল্প জেলার জন্য হল।’ জয়নগরে ফের বরাদ্দ বঞ্চনায় সরব মমতা। তিনি বলেন, বার্ধক্যভাতা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। নিজেদের তহবিল থেকেই বয়স্কদের টাকা দিচ্ছে তৃণমূল। একশো দিনের টাকাও বন্ধ। তবুও থামবে না বাংলার উন্নয়ন।