বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা দুর্নীতি বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা। সব ধরনের সেবা প্রাপ্তিতে বৈষম্য রয়েছে। পাশাপাশি সরকারি প্রতিষ্ঠানের অদক্ষতাকেও দায়ী করেছেন তারা।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) জরিপে এসব উঠে এসেছে। দেশে দুর্নীতি বন্ধে সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে একজন করে ন্যয়পাল (পার্লামেন্ট কর্তৃক নিযুক্ত কমিশনার বা কর্মকর্তা) নিয়োগের সুপারিশ করেছে সিপিডি। গতকাল বুধবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। বাংলাদেশে ব্যবসায় পরিবেশ-২০২৩: উদ্যোক্তা জরিপের ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, গত ৬ বছরে ঘুষ পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন দেখেননি ব্যবসায়ীরা। অর্থাৎ ঘুষ কমে নাই। পাবলিক কন্টাক্ট, ট্যাক্স পেমেন্ট, আমদানি-রপ্তানি ও বিচার ব্যবস্থায় ঘুষ দিতে হয়েছে। দেশের ট্যাক্স কাঠামো পরিবেশবান্ধব নয় বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।
গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, অর্থ পাচার একটা ব্যাপক স্তরে রয়েছে। অর্থ পাচার ঠেকানো বড় চ্যালেঞ্জ। ৬০ শতাংশ ব্যবসায়ী মনে করেন এখনও ২৩% কর ফাঁকি হচ্ছে।
সকল ক্ষেত্রে দুর্নীতি বন্ধ করতে ভারতের আধার কার্ডের মতো কার্ডের মাধ্যমে সমন্বিত লেনদেন ব্যবস্থা চালু করা যেতে পারে বলে মনে করেন খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। সিপিডির জরিপে ৪৭ শতাংশ ব্যবসায়ী বলেছেন, ক্যাপাসিটি পেমেন্ট তুলে দিলে বিদ্যুৎ খাতে সাবসিডি প্রেসার থাকবে না। এছাড়া জরিপে অংশ নিয়ে, ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাংলাদেশে ব্যবসার বড় বাধা ঘুষ। ‘এক্সিকিউটিভ মতামত সমীক্ষা’ ২০২৩ সালের মে-জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন সেক্টরের ছোট, মাঝারি ও বড় কোম্পানির ৭১ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার উপর পরিচালিত হয়েছিল। এদিকে জরিপে অংশ নেয়া ব্যবসায়ীরা মত প্রকাশ করে বলেন, আগামী ২ বছরে ব্যবসার সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হবে জ্বালানি সরবরাহ। জরিপে আরও উঠে এসেছে, ব্যবসার সব সূচকেই এশিয়ার প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় পিছিয়ে বাংলাদেশ। সিপিডির দ্বারা পরিচালিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০২৩ সালে বাংলাদেশে ব্যবসার জন্য দুর্নীতি ছিল শীর্ষ সমস্যাযুক্ত ফ্যাক্টর।