বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র তাদের মধ্যকার সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ করার ব্যাপারে একমত হয়েছে। এ লক্ষ্যে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করবে। গতকাল বুধবার দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ তাঁর দপ্তরে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন। ১১ জানুয়ারি নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত তাঁর সঙ্গে প্রথম দেখা করেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা উভয়ে আমাদের সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ করার বিষয়ে একমত হয়েছি এবং সেই লক্ষ্যে কাজ করব বলে আলোচনা করেছি। বাণিজ্য আরও বিস্তৃত করার লক্ষ্যে মার্কিন বিনিয়োগের বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করব বলে আমরা আলোচনা করেছি।’
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্কের উদাহরণ টেনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের নানা বিষয়ে সম্পর্ক আছে। আমরা জঙ্গি দমন, উগ্রবাদ মোকাবিলায় দীর্ঘদিন ধরে একসঙ্গে কাজ করছি। ভবিষ্যতে সেসব বিষয়ে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছি। আমরা উভয় দেশ সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ করতে, আমাদের বাণিজ্য আরও বিস্তৃত করতে এবং অন্য সব ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করব বলে অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছি।’
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের বিষয়টি আলোচনায় এসেছিল কি না অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আলোচনায় নির্বাচনের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন, নাকি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিষয়টি আলোচনায় এনেছেন—এমন প্রশ্নের উত্তরে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে নানা দেশের নানা মত ছিল। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, তারা নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করছে। আমরা একযোগে আমাদের সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছি। এ ব্যাপারে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি এবং অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিজে থেকে নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রশ্নের অবতারণা করেননি; বরং আমি তাঁদের দেশ থেকে পর্যবেক্ষক এসেছে বলে তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। তিনি নিজে থেকে এ বিষয়ের (নির্বাচন প্রসঙ্গ) কোনো অবতারণা করেননি বা প্রশ্ন তোলেননি। আমি নিজে থেকে বলেছি, ভালো একটা নির্বাচন হয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা এবং সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘সমুদ্রে তেল অনুসন্ধান নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের সমুদ্রে প্রচুর তেল আছে, সেটা আমেরিকান একটি কোম্পানি অনুসন্ধান করেছে। এটি উত্তোলন করতে পারলে আমাদের দেশ অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবে, সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’ প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রতিরক্ষা সহযোগিতা তো আমাদের মধ্যে কিছুটা আছে। সেটা নিয়েও আমরা আলোচনা করেছি।’ র্যাবের কিছু কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও তিনি সাংবাদিকদের জানান। রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ আলোচনায় এসেছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা করেছি। রোহিঙ্গাদের ফেরাতে সব সময় তাদের সহযোগিতা চেয়ে এসেছি, আজকে সেটি আবারও পুনর্ব্যক্ত করেছি। সেই লক্ষ্যে আমরা একযোগে কাজ করব বলে একমত হয়েছি।’