যেদিকে চোখ যায় বিস্তীর্ণ হলুদের সমারোহ। যেন দিগন্ত ছুঁয়েছে সরিষা ফুলের হলুদ আভা। সোনাইমুড়িতে শীতের সকালে কুয়াশাচ্ছন্ন হলদে ফুলের মনমাতানো মৌ-মৌ গন্ধ আর অপরূপ দৃশ্য আকৃষ্ট করে যে কাউকে। মাঠের পর মাঠ সরিষার আবাদ হয়েছে। অপরুপ এ দৃশ্য দেখে মনে কৃষকরা যেন তাদের ক্ষেতে রাশি রাশি সোনা ছড়িয়ে রেখেছে। নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে অধিকাংশ সরিষাক্ষেতে ফুল ফুটেছে। সুন্দর বীজও আসতে শুরু করেছে। এতে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন চাষিরা। লাভের আশায় তাদের মুখে এখন হাসি। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় জমির পর জমিতে সরিষার আবাদ দেখা গেছে। মাঠের পর মাঠজুড়ে সরিষা ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য। ফুলে মধু আহরণে ভিড় করছে মৌমাছি। তবে অনেক জমিতেই ফুল শেষ হয়ে বীজ দেখা গেছে। বীজগুলো বেশ তরতাজা, যা ভালো ফলনের সম্ভাবনার দেখা যাচ্ছে। উপজেলার সোনাপুর গ্রামের সরিষা চাষি ইব্রাহিম জলিল সুজন জানান, কৃষি অফিসের সহযোগিতায় এবং কৃষি অফিসের নগদ টাকা, সার- বীজ সহায়তা পেয়ে তিনি ৩৩-শতক জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। এখন পর্যন্ত জমিতে কোনও সমস্যা দেখা যায়নি। বরং সুন্দর আর স্বাস্থ্যবান বীজের দেখা পাওয়া যাচ্ছে। এতে ভালো ফলন পেয়ে লাভবান হতে পারবেন। সোনাপুর দাস বাড়ির কৃষক সিরাম চন্দ্র দাস জানান, অন্যান্য কৃষকের জমিতেও ভালো ফুল শেষে তরতাজা বীজ আসতে শুরু করেছে। এতে ভালো ফলনের আশা করছেন তারা। যদি এ বছর সরিষার ভালো মূল্য পাওয়া যায়, তবে সব সরিষা চাষিই লাভবান হবেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, অন্যান্য ফসলের তুলনায় সরিষা চাষে আর্থিক খরচ ও শ্রম দু’টিই কম লাগে। ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতে সরকারের পক্ষ থেকে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সোনাইমুড়ি উপজেলায় ২১ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করেছে কৃষকেরা। মোট ১৫০ জন কৃষককে বিনামূল্যে সরিষার বীজ ও সার প্রদান করেছি। এ বছর উপজেলায় ২১ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। এর মধ্যে ২১ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করেছেন কৃষকেরা। ২১ হেক্টর জমিতে প্রায় ২৬ মেট্রিকটন টন সরিষার ফলন হবে বলে আশা যাচ্ছে। সরিষা চাষ করে এবার কৃষক ভালো লাভবান হবেন। আগামীতে সরিষা চাষে আরো কৃষক উৎসাহিত হবেন।