লক্ষ্মীপুরের রামগতির মেঘনা নদীতে অবাধে চলছে গলদা চিংড়ির পোনা শিকার। এতে ধ্বংস হচ্ছে নদী ও সামুদ্রিক বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা। অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে গলদা, ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। এতে হুমকির মুখে পড়ে জীববৈচিত্র্য। নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে অসাধু জেলেরা অবাধে নিধন করছেন এসব গলদা চিংড়ির পোনা। আর এজন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবকেই দুষলেন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, মৎস্যজীবীরা প্রকাশ্যে গলদা চিংড়ি পোনা আহরণ ও বিক্রি করলেও কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছে না রামগতি উপজেলা প্রশাসন। সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার চরআলগী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নাছির উদ্দীন ও বড়খেরী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জমির উদ্দিন, শেখ কামাল, মোমিন ব্যাপারী, শ্যামল, হেলাল উদ্দীন ও মনির মাঝির নেতৃত্বে উপজেলার বিবিরহাট বাজারের পশ্চিমে মেঘনা নদীর ওছখালী মাছঘাটের বিস্তৃর্ণ এলাকাজুড়ে নির্বিচারে শিকার করছেন গলদা চিংড়ির পোনা। শিশু-কিশোররাও যুক্ত রয়েছেন পোনা শিকারে। এ পোনা অতিক্ষুদ্র হওয়ায় তা ধরতে যে জাল ব্যবহার করা হয়, তাতে ধ্বংস হয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনাও। প্রতিদিন অন্তত ১০ টি পিক-আপ যুগে এসব রেনু খুলনা ও বাগেরহাট জেলায় বিক্রি করছেন তারা। এতে দৈনিক ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার মাছের পোনা বিক্রি হচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা। ২০০০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর উপকূলীয় এলাকায় চিংড়ি পোনা আহরণ নিষিদ্ধ করে সরকার। তবে সে নিষেধাজ্ঞা মানছেন রামগতির বিবিরহাটের ওছখালী মাছ ঘাটের এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী ও জেলেরা। স্থানীয়রা জানায়, গলদা চিংড়ির মহাজনরা নদীর পাড়ে জমি ও ঘর ভাড়া নিয়ে এ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। অগ্রিম ঋণ দিয়ে জেলেদের পোনা শিকারে উৎসাহী করে তুলেছেন তারা। অর্থের লোভ দেখিয়ে প্রভাবশালী মৎস্য ব্যবসায়ীরা শিশু-কিশোরদেরও ব্যবহার করছেন এ কাজে। তারা অভিযোগ করে আরো জানান, প্রশাসন ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার যোগসাজশে একটি সংঘবদ্ধ চক্র জেলেদের দাদন দিয়ে অবাধে এসব মাছের পোনা নিধন করছেন। এতে করে বিলুপ্ত হতে চলেছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা। স্থানীয়দের মতে, রেণু পোনা আহরণ বন্ধ করা না গেলে একসময় বিলুপ্ত হবে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। এতে উৎপাদন কমবে নদী ও সামুদ্রিক মাছের। রেণু পোনা শিকারের সঙ্গে জড়িত উপজেলার চরআলগী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নাছির উদ্দীন মেম্বার বলেন, একসময় তিনি এ ব্যবসা করলেও এখন তিনি জড়িত নন। তবে কারা জড়িত এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শেখ কামাল, মোমিন ব্যাপারী ,শ্যামল, হেলাল উদ্দীন, মনির মাঝি ও শ্রমিকলীগের জামাল উদ্দীন এ ব্যবসা করছেন বলে জানান। বড়খেরী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জমির উদ্দিনের মুঠোফোনে কল করলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি। রামগতি উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, এসময়ে এগুলো ধরার কথা নয়! আপনি যেহুতো বলছেন। তাহলে সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আমজাদ হোসেন বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।