মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ০২:২৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
অবিলম্বে ২৮ অক্টোবরের খুনিদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা পুনরায় সচল করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে – ডা. শফিকুর রহমান গণভবন পরিদর্শন শেষে প্রধান উপদেষ্টা ৩২ উপজেলায় শিগগিরই ফায়ার স্টেশন স্থাপন করা হবে রাফাল যুদ্ধবিমান নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর সত্য নয় মোহাম্মদপুরে স্বস্তি: একদিনে গ্রেফতার ৩৪ প্রশ্ন রিজভীর: দোসর তো অনেকেই আছে, রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে এত ব্যস্ত কেন শেখ হাসিনার সহযোগীরা ব্যাংক খাত থেকে ১৭ বিলিয়ন ডলার সরিয়েছেন : গভর্নর সৌদির বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের নেপাল রাষ্ট্রদূতের সাথে মির্জা ফখরুলের বৈঠক জামায়াতকে সাথে নিয়ে দেশ সাজাবে বিএনপি : মির্জা আব্বাস

সরকারের প্রতারণা আজ পরিষ্কার : জোনায়েদ সাকি

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট, ২০২৪

কোটা আন্দোলনকে ধ্বংস করতেই বিরোধী দলের ওপরে সরকার সহিংসতার দোষ চাপাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘সরকারের প্রতারণা আজকে পরিষ্কার। তারা সমস্ত আন্দোলনকে ধ্বংস করতে চায়, সমস্ত আন্দোলনকে ধ্বংস করার জন্য আজকে সহিংসতার দায় চাপিয়ে যেভাবে অতীতে করেছে সেভাবেই তারা আজকে আন্দোলন ধ্বংস করতে চায়।’ গতকাল বুধবার দুপুরে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে গণতন্ত্র মঞ্চের বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ছিল। কিন্তু সকাল ১০টা থেকে সেখানে ব্যাপক পুলিশ, প্রিজন-ভ্যানসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নেয়। এমন অবস্থায় গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা তাৎক্ষণিক বিজয় নগরে আল রাজি কমপ্লেক্সের সামনে ফুটপাতে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।
গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘সারাদেশ আজ এক মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে। শত শত শিক্ষার্থীকে হত্যা করা হয়েছে। সরকার এত লাশের মিছিল, এত লাশ তারা তৈরি করেছে তা ঢাকতে পারছে না। তা ঢাকার জন্য আজকে আমরা দেখছি, তারা নানারকম রাজনৈতিক কৌশল ব্যবহার করছে।’
তিনি বলেন, ‘এক দিকে সরকার বলছে, এ কাজ জামায়াত-শিবির করেছে, তাদেরকে নিষিদ্ধ করতে হবে। অন্যদিকে আমরা দেখি তারা (সরকার) যে হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার করছে তার ৮০ থেকে ৯০ ভাগের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। এই রাজনৈতিক পরিচয়হীন শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার করছে।’
জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আজকে আমাদের শিক্ষার্থীদের হত্যার প্রতিবাদে, এই হত্যার বিচার দাবি করে আমরা একটা সমাবেশ করার কথা বলেছিলাম। আজকে পুলিশ কোনোর রকম ন্যূনতম আইন-কানুনের ধার না ধেরে যেভাবে পুরানা পল্টনে এলাকা কর্ডন করে রেখেছে, আগ্রাসী ভূমিকার মধ্য দিয়ে আমাদের সমাবেশ ভ-ুল করার চেষ্টা করছে, আমাদের মাইক কেড়ে নিয়েছে, আমরা পুলিশের এমন কর্মকা-ের তীব্র নিন্দা জানাই, প্রতিবাদ জানাই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার করে বলি, গণতন্ত্র মঞ্চসহ সকল বিরোধী দলগুলো নির্বাচনের আগের থেকেই এ সরকারের পদত্যাগ চেয়েছি। বাংলার ঘরে ঘরে এই সরকারের পদত্যাগের ধ্বনি উঠেছে। এই লড়াইটা চালাতে হবে।’
জোনায়েদ সাকি জানান, বৃহস্পতিবার গণতন্ত্র মঞ্চ সংবাদ সম্মেলন করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবে।
সমাবেশে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘এখন সরকার শুধুমাত্র টিকে আছে প্রশাসনের ওপর নির্ভর করে। সরকারের ভাগ্য এখন চিকন সুতার ওপরে ঝুলছে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আমাদের পেশাদার বাহিনী তারা যদি কেবলমাত্র পেশাদারি দায়িত্ব পালন করে এই সরকারের পালিয়ে যাওয়ার আর কোনো পথ পাবে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, সঙ্কটটা রাজনৈতিক। রাজনৈতিক সঙ্কটকে রাজনৈতিকভাবে সমাধান করেন। রাজনৈতিকভাবে সমাধান করতে হলে কিভাবে আপনারা পদত্যাগ করেন, পদত্যাগের মধ্য দিয়ে বিরোধী দলকে আস্থায় নিয়ে আলাপ-আলোচনার করে অন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনে সম্ভব স্বল্পতম সময়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ আপনারা তৈরি করতে পারে। সরকার যদি সেই পথে না হাটের তাহলে যে গণজাগরণ তৈরি হয়েছে, মানুষের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ তাদেরকে টেনে নামাতে বাধ্য করবে।’
জনগণের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘মানুষের গণঐক্য তৈরি করেন, সকল বিরোধী দলের কার্য্কর ঐক্য তৈরি করেন।’
সাইফুল হক আরো বলেন, ‘এই সরকার একটা শান্তিপূর্ণ ছাত্র আন্দোলনকে নিজেদের জেদ, নিজের অসহিষ্ণুতা, নিজেদের ভেতরকার যে স্বৈরাচারী চরিত্র সেই সমস্ত কিছুর একটা আক্রোশ তারা করতে গিয়ে আজকে সমস্ত আন্দোলনকে একদিকে অপমানিত করেছে, তারপরে তাকে ভয়ঙ্করভাবে দমন করার চেষ্টা করেছে যা ৭১ সালের পরে এদেশের ৫৩ বছরের ইতিহাসে সমস্ত রাষ্ট্রশক্তিকে ব্যবহার করে আমাদের সন্তানদেরকে, আমাদের শিশু সন্তানদেরকে বাড়িতে গুলি করে এভাবে হত্যা করার কোনো নজির আমরা দেখিনি।’
তিনি আরো বলেন, ‘আজকে শত শত শিক্ষার্থীদের হত্যা করা হয়েছে। আমরা ন্যায় বিচার চাই, এসব হত্যার বিচার চাই, সমস্ত মামলা প্রত্যাহার করতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিতে হবে।’
সহিংসতার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘সহিংসতা হয়েছে অনেকগুলো স্থাপনায়, এটা কারা করেছে? আমরা স্বাধীন নিরপেক্ষ বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত চাই। কিন্তু তার আগেই কারা এই সমস্ত কাজ করেছে তার দায় চাপিয়ে দিচ্ছেন। সমস্ত দোষ তারা আন্দোলকারীদের ওপর দিয়েছে, বিরোধী দলের ওপর দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এরমধ্য দিয়ে আমরা দেখলাম যে তারা নির্বিচার গ্রেফতার-হয়রানি, হেফাজতে নিয়ে নির্যাতন এসব করছেন। আন্দোলনকারী নেতৃত্বকে তুলে নিয়ে তাদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে, তাদেরকে নিরাপত্তা দেয়ার নামে তাদের হেফাজতে রাখা হয়েছে।’
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জেএসডির সহ-সভাপতি তানিয়া রব, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব আবু ইউসুফ সেলিম ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অর্থ সমন্বয়ক দিদারুল ভুঁইয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশে জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আকবর খান উপস্থিত ছিলেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com