শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:০০ অপরাহ্ন

কেজিতে ১০০ টাকা কমেছে খাসির মাংস

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শনিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সবজির দাম হুট করেই বেড়ে গিয়েছিল। কারফিউর সময় বাজারে ক্রেতার উপস্থিতি কম থাকায় কমতে শুরু করেছিল সবজির দাম। নি¤œমুখী এই দাম অব্যাহত ছিল গত শুক্রবার পর্যন্ত। আজ বেশকিছু সবজির দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। গত সপ্তাহে কাঁচা মরিচের দাম ছিল ২৬০ টাকা, যা আজ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৬০ টাকায়। এদিকে, অনেক দিন ধরেই খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছিলো ১১৫০ টাকা কেজি দরে। কিন্তু আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বাজার মনিটরিংয়ে এসে এর দাম নির্ধারণ করে দেয় ১০৫০ টাকা। এতে করে খাসির মাংসের দাম কমে ১০০ টাকা। যদিও বিক্রেতারা জানান, কোনও চিন্তা-ভাবনা না করেই ছাত্ররা এসে দাম কমিয়ে দিয়ে যায়।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বর কাঁচাবাজার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় বাজারের আজকের চিত্র। আজ বেশকিছু সবজির দাম বেড়েছে আবার অল্প কয়েকটির কমেছে। এদিকে, গত সপ্তাহে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম তদারকি করতে বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দেখা গেলেও আজ সকাল ১১টা থেকে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাদের দেখা যায়নি।
গত সপ্তাহের তুলনায় আজ বাজারে বেশ কিছু সবজির দাম বেড়েছে ১০ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। একইসঙ্গে কয়েকটি সবজির দাম কমেছে ১০ টাকা পর্যন্ত। আবার বেশ কিছু সবজির দাম রয়েছে অপরিবর্তিত।
বাজারে ভারতীয় টমেটো ১৫০ টাকা, দেশি গাজর ৯০ টাকা, চায়না গাজর ১৫০ টাকা, লম্বা বেগুন ৭০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৮০ টাকা, কালো গোল বেগুন ৯০ টাকা, শসা ৬০-৯০ টাকা, উচ্ছে ৮০ টাকা, করল্লা ৭০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০-৮০ টাকা, পটল ৪০-৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ধুন্দল ৬০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কচুর লতি ৮০-১০০ টাকা, কচুরমুখী ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৩০০-৩৬০ টাকা, ধনেপাতা ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মানভেদে প্রতিটি লাউ ৭০ টাকা, চাল কুমড়া ৭০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি হালি কাঁচা কলা ৩৫-৪০ টাকা, হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা করে। দাম তুলনা করে দেখা যায় চায়না গাজর ও করল্লার দাম কমেছে ১০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া লম্বা বেগুন, কালো গোল বেগুন, ঢেঁড়স, চিচিঙ্গা, কচুর লতি, শসা, পটল, মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়ার দাম বেড়েছে ১০ টাকা করে। সাদা গোল বেগুনের দাম বেড়েছে ২০ টাকা। আর কাঁচা মরিচের দামই বেড়েছে ৪০ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া অন্যান্য সবজির দাম রয়েছে অপরিবর্তিত।
দুই সপ্তাহ আগে বিক্রেতারা বলেছিলেন, সবজির দাম আর বাড়ছে না। এরপরও সবজির দাম বেড়েছে। কেন বেড়েছে জানতে চাইলে বিক্রেতা মো. শাহ আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সবজির দাম কমই ছিল কিন্তু আজকে বেড়ে গেছে। সত্যি কথা বলতে আমরা ব্যবসায়ীরাই দাম বাড়িয়ে ফেলি। কীভাবে দাম বাড়াই আমরা… সব ব্যবসায়ী কিন্তু এক রকম হয় না। কেউ বড় ব্যবসায়ী, কেউ ছোট ব্যবসায়ী। বড় ব্যবসায়ীদের মাল লাগে বেশি, ছোটদের কম। যখন মোকামে যাই তখন আমরা একটা সবজির দাম বলি ৫০ টাকা করে কেজি। আমার লাগবে ১০ কেজি। তখন বড় ব্যবসায়ী এসে সেই জিনিস ৫৫ টাকা করে ২০/৩০ কেজি কিনে নিয়ে যায়। তখন কিন্তু বাজারে ওই জিনিসের দামটা বেড়ে যায়। তখন অটোমেটিক আমাদেরও বেশি দামে কিনে বেশি দামেই বেচতে হয়।

কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে যাওয়া নিয়ে বিক্রেতা রাজিব বলেন, এই দাম বাড়ার পেছনে আমাদের কোনও হাত নেই। আমরা বেশি দামে কিনি বলেই বেশি দামে বিক্রি করি। আমরা যে পাইকারদের জিজ্ঞেস করবো, দাম কেন বাড়লো সেই উপায়ও নাই। এই কথা বললেই তারা আরেকজনের কাছে বিক্রি করবে। আমার কাছে বেঁচবেই না।
এদিকে বাজার করতে আসা এক বেসরকারি চাকরিজীবী সেলিম মিয়া বলেন, কাঁচা মরিচের দামতো উপরেই উঠছে শুধু। এখন ২০/৩০ টাকায় যতটুকু পাই কিনি। মাঝখানে সবজির দাম কমেছিল, সেটা এখন বাড়ার দিকেই যাচ্ছে। সরকার পরিবর্তন হয়েছে এখন এদিকেও পরিবর্তন হতে হবে। নাইলে মানুষের মধ্যে শান্তি আসবে না।
কমেছে পেঁয়াজ ও আদার দাম: এদিকে বাজারে আকার ও মানভেদে ক্রস জাতের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকায়। এরমধ্যে ছোট আকারের পেঁয়াজ ১১০ টাকা ও বড় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। আর ভারতীয় পেঁয়াজ ১১০ টাকা ও দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা করে। তুলনা করলে দেখা যায়, ক্রস ও দেশি পেঁয়াজের দাম কমেছে ১০ টাকা করে। ভারতীয় পেঁয়াজের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। এছাড়া আজকে লাল আলু ৬০ টাকা, সাদা আলু ৬০ টাকা, বগুড়ার আলু ৭০-৮০ টাকা, দেশি রসুন ২২০ টাকা, চায়না রসুন ২২০ টাকা, চায়না আদা ২৮০ টাকা, ভারতীয় আদা মানভেদে ২৮০ দরে বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ, চায়না আদার দাম ও ভারতীয় আদার দাম কমেছে ২০ টাকা করে।
বাজারে ইলিশ মাছ ওজন অনুযায়ী ১৪০০-২০০০ টাকা, রুই মাছ ৩৬০-৮০০ টাকা, কাতল ৪৫০-৭০০ টাকা, কালিবাউশ ৪০০-৭০০ টাকা, চিংড়ি ১০০০-১৪০০ টাকা, কাঁচকি ৫০০ টাকা, কৈ ২০০-৮০০ টাকা, পাবদা ৪০০-৮০০ টাকা, শিং ৪০০-১০০০ টাকা, টেংরা ৫০০- ৭০০ টাকা, বেলে ৮০০- ১৪০০ টাকা, বোয়াল ৫০০-১২০০ টাকা, রূপচাঁদা ৮০০-১৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে দীর্ঘদিন ধরে বাজারে খাসির মাংস বিক্রি হয়েছে ১১৫০ টাকা কেজি দরে। যা ছিল অনেক ক্রেতারই ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। আজকে সেই খাসির মাংসের দাম ১০০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১০৫০ টাকায়। যদিও নতুন দামও সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার অনেক বাইরেই রয়েছে এখনও। শিক্ষার্থীরা এসে নতুন এই দাম নির্ধারণ করে দিয়ে যায় বলে জানা যায় বিক্রেতাদের কাছ থেকে। আজকে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা কেজি দরে। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১০৫০ টাকা কেজি দরে। আর বিভিন্ন দোকানে মুরগির লাল ডিম ১৪৫ টাকা এবং সাদা ডিম ১৪০ টাকায় প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া আজকে ওজন অনুযায়ী ব্রয়লার মুরগি ১৬২-১৬৫ টাকা, কক মুরগি ২১৮-২৩৩ টাকা, লেয়ার মুরগি ৩০৫ টাকা, দেশি মুরগি ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ, কক মুরগির দাম কমেছে ৪২ টাকা, লেয়ার মুরগির দাম কমেছে ১০ টাকা এবং দেশি মুরগির দাম কমেছে ৩০ টাকা।
এদিকে, গত সপ্তাহের মতো আজকেও মুদি দোকানের পণ্যের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। তবে বড় মুগ ডালের দাম কেজিতে কমেছে ২০ টাকা এবং এলাচির দাম কমেছে ৩০০ টাকা। আর কালো গোল মরিচের দাম বেড়েছে ১০০ টাকা। আজকে প্যাকেট পোলাওয়ের চাল ১৫৫ টাকা, খোলা পোলাওয়ের চাল মানভেদে ১১০-১৪০ টাকা, ছোট মসুরের ডাল ১৩৫ টাকা, মোটা মুসরের ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৮০ টাকা, খেশারি ডাল ১০০ টাকা, বুটের ডাল ১৩০ টাকা, ডাবলি ৮০ টাকা, ছোলা ১১৫ টাকা মাশকালাইয়ের ডাল ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৪৭ টাকা, কৌটাজাত ঘি ১৩৫০ টাকা, খোলা ঘি ১২৫০ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১৩৫ টাকা, খোলা চিনি ১৩০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১১৫ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া এলাচি ৪২০০ টাকা, দারুচিনি ১৫০ টাকা, লবঙ্গ ১৬০০ টাকা, সাদা গোল মরিচ ১৬০০ টাকা ও কালোগোল মরিচ ১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com