বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার নির্দেশে যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তাদের হত্যাকারীদের ক্ষমা করলে নিহতদের আত্মার সাথে বেইমানি করা হবে। একটি রাজনৈতিক দলের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, তারা বলছেন আওয়ামী লীগকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। গণহত্যাকারীদের কিসের ক্ষমা করতে বলেছেন তারা। হত্যাকারদের কি বিচার হবে না?
তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনাল করে প্রতিটি হত্যার বিচার করতে হবে, প্রতিটি অপরাধের বিচার করতে হবে। যদি শেখ হাসিনাসহ অপরাধীদের বিচার করা না হয়, তাহলে বাংলাদেশ কবরস্থানে পরিণত হবে।
গতকাল বুধবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে আন্দোলনে নিহত গোলাম রাব্বানীর বাবার হাতে অনুদান তুলে দেয়ার সময় তিনি এসব কথা বলেন। শাহবাগে পিজি হাসপাতালের পাশে তাদের পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে রুহুল কবির রিজভী এই অনুদানের টাকা তুলে দেন।
রিজভী বলেন, আমি আগেও বলেছি নিরপরাধ কেউ যেন মামলার শিকার না হয়। কিন্তু যারা অপরাধী তাদের ক্ষমা করা যাবে না।
বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা কেউ আইন হাতে তুলে নেবেন না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তাদের কাজ করতে দিন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশ নায়ক তারেক রহমান এ বিষয়ে কঠোর বার্তা দিয়েছেন। এ সময় চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক, দলের সহ স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম, ডা. মনোয়ারুল কাদির বিটু, প্রফেসর সাইফুল ইসলাম ডা. জাহিদুল কবির, মেহেবুব মাসুম শান্ত, আরিফুর রহমান তুষার উপস্থিত ছিলেন।১২
কাশিমপুর কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেলেন শীর্ষ সন্ত্রাসী সুইডেন আসলাম
গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন শীর্ষ সন্ত্রাসী শেখ আসলাম (সুইডেন আসলাম)। গত মঙ্গলবার রাত ৯টায় তিনি ওই কারাগার থেকে বের হয়ে যান। আজ বুধবার সকালে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার লুৎফর রহমান।
শেখ আসলাম ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার ছাতিয়ার এলাকার মৃত শেখ জিন্নাত আলীর ছেলে। তাঁর বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় হত্যা মামলা রয়েছে। কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, হাজতি (নম্বর-৬৬৩/২০) শেখ আসলামের (৬২) জামিনের কাগজপত্র গতকাল কাশিমপুর কারাগারে পৌঁছায়। পরে কারা কর্তৃপক্ষ সেই জামিনের কাগজ যাচাই–বাছাই করে রাত ৯টায় তাঁকে মুক্তি দেয়। তিনি স্বজনদের সঙ্গে কারাগার থেকে বের হয়ে যান। ২০১৪ সাল থেকে তিনি কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী ছিলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শেখ আসলামের বিরুদ্ধে সর্বশেষ মামলা হয় তেজগাঁওয়ের যুবলীগের নেতা গালিব হত্যার ঘটনায়। ১৯৯৭ সালের ২৩ মার্চ গালিব খুন হন। এ ঘটনায় আসলামসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ১৯৯৮ সালের ৮ এপ্রিল অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন। এ মামলার ২৪ জন সাক্ষীর মধ্যে এ পর্যন্ত পুলিশ মাত্র ১৪ জনকে আদালতে হাজির করতে পেরেছে। ওই মামলায় জামিন পেয়ে কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন শেখ আসলাম।
শেখ আসলামের বিরুদ্ধে সর্বশেষ মামলা হয় তেজগাঁওয়ের যুবলীগের নেতা গালিব হত্যার ঘটনায়। ১৯৯৭ সালের ২৩ মার্চ গালিব খুন হন। এ ঘটনায় আসলামসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, হত্যা ও হত্যাচেষ্টার চারটি মামলায় আসলাম আদালত থেকে খালাস পেয়েছেন। তবে এ রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করেনি। একটি মামলায় পেয়েছেন অব্যাহতি। অস্ত্র আইনের দুটি মামলায় তাঁর যাবজ্জীবন এবং ১৭ বছরের কারাদ- হয়। পরে এসব মামলায় তিনি উচ্চ আদালত থেকে অব্যাহতি পান।
চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ঘোষিত ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর একজন শেখ আসলাম। ১৯৮৬ সালে ফার্মগেটের পূর্ব রাজাবাজারে স্কুলের সামনে মায়ের হাত ধরে থাকা কিশোর শাকিলকে গুলি করার অভিযোগ আছে তাঁর বিরুদ্ধে। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক খুনের ঘটনায় জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠতে থাকে। একপর্যায়ে কিছুদিন তিনি সুইডেনে অবস্থান করেন। সেখান থেকে ফিরে আসার পর ‘সুইডেন’ শব্দটি নামের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়।