মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৯ পূর্বাহ্ন

শুভ হত্যায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

‘আমার বড় ভাই ফয়সাল খান ওরফে শুভকে পাচঁতলা ভবনের ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে। এটি পরিকল্পিত একটি হত্যাকান্ড। প্রতিবেশী সুলতান আহম্মেদ খানের মেয়ের সঙ্গে আমার ভাইয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্পর্ক মেনে নিতে না পেরে মেয়ের বাবা সুলতান আহম্মেদ খান পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করে। মামলা রেকর্ডের আগেই গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) আমার ভাইকে ধরতে ময়মনসিংহের একটি পাচঁতলা ভবনের দুতলায় অভিযান চালায়। এসময় আমার ভাই পাচঁতলা ভবনের ছাদে উঠে যায়। তখন পুলিশের সাথে থাকা মেয়ের বাবা সুলতান আহম্মেদ খান ও তার দুই ছেলে ছাদে উঠে বড় ভাই ফয়সালকে ছাদ থেকে নিচে ফেলে হত্যা করে। আমরা এই হত্যা কা-ের সুষ্ঠু বিচার চাই। ভাই হত্যার বিচার চেয়ে মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলছিলেন নিহত ফয়সালের ছোট ভাই নাজমুল খান শ্রাবণ(২৪)। সোমবার (১৮ নভেম্বর ২০২৪) সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ত্রিশ বছরের যুবক ফয়সাল খান ওরফে শুভ হত্যার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফয়সালের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সরিষা ইউনিয়ের কাশিপুর এলাকার ঈশ্বরগঞ্জ-আঠারবাড়ি সড়কে এই বিক্ষোভ ও মানববন্ধন হয়েছে। ফয়সাল কাশিপুর গ্রামের সেলিম খানের ছেলে। জানা যায়, জাতীয় কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.বিএ শেষ করে ময়মনসিংহ শহরের কেওয়াটখালী পাওয়ার হাউস রোডে বড় বোনের বাসায় থেকে চাকরির জন্য চেষ্টা করছিল ফয়সাল। তার। সঙ্গে প্রায় চার বছর প্রেমের সম্পর্ক ছিল এলাকার এক তরুণীর। ১৫ নভেম্বর তরুণীর বিয়ে ঠিক হওয়ায় ফয়সাল বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। এ জন্য তরুণীর বাবা থানা ও ডিবিতে পর্নোগ্রাফি আইনে অভিযোগ দেন। নিহতের পরিবার, মামলার এজহার ও সিসিটিভি ফুটেজর তথ্যানুযায়ী, মামলা রেকর্ড হওয়ার আগেই বোনের বাসায় অভিযানে যায় ডিবি। ফয়সাল ও তাঁর চার স্বজনের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা হয় গত ১০ নভেম্বর দিবাগত রাত ১২টা ৫ মিনিটে। কিন্তু তার আগেই রাত ৯টা ৩৮ মিনিটে ফয়সালের বোনের বাসায় অভিযানে যায় ডিবি। গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অভিযানের পর বাসার সামনে থেকে ওই যুবককে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে স্বজনেরা। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শুক্রবার রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে তিনি মারা যান। ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার রাতেই ফয়সালকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। তার মৃত্যু ঘিরে তৈরি হয়েছে রহস্য। এ ঘটনায় ১২ নভেম্বর কোতোয়ালি মডেল থানায় ফয়সালের বাবা মো. সেলিম খান বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় তরুণীর বাবাসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়। এদিকে পরিবার, এলাকাবাসী ও ফয়সালের বন্ধুমহলসহ দেড় শতাধিক মানুষ আজ সোমবার মানববন্ধন ও বিক্ষোভে অংশ নিয়ে ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি জানান। অবিলম্বে আসামিদের গ্রুেপ্তার করা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষাণা দেওয়া হয় মানববন্ধন থেকে। মানববন্ধনে অংশ নিয়ে ফয়সালের দুই বন্ধু সাইফ খান মনি(৩১) ও আরিফ হোসেন(২৮) জানায় পুলিশ এখনও কেন আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারছে না? সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আসামিদের অবিলম্বে গ্রুেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি। মানববন্ধন ফয়সালের প্রতিবেশী চাচা নজরুল ইসলাম খান(৬৩) বলেন, বাসায় অভিযানের সময় পুলিশ দুতলায় কথা বলছিল।পাচঁতলায় ছাদে কয়েকজন উঠে ফয়সালকে নিচে ফলে দেয়। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ওবায়দুর রহমান বলেন, এবিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা হয়েছে আসামিদের গ্রুেপ্তার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com