প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে বিতরণের প্রায় ১০ হাজার বই জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুই জনকে আটক করেছে পুলিশ। গত বুধবার বিকাল ৫টার দিকে রাজধানীর সূত্রাপুরের বাংলাবাজার ইস্পাহানি গলির বিভিন্ন গোডাউনে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক পুলিশ।
পৃথক ঘটনায়, মাধ্যমিক পর্যায়ে বিনা মূল্যে বিতরণের প্রায় ৯ হাজার বই বিক্রির উদ্দেশ্যে পাচারকালে শেরপুর থেকে জব্দ করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে শেরপুর সদর উপজেলার চরমোচারিয়া ইউনিয়নের ধাতিয়াপাড়া গ্রাম থেকে সদর থানার পুলিশ ট্রাকসহ এসব বই জব্দ করে।
সূত্রে প্রকাশ, গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি-দক্ষিণ) যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম এ তথ্য জানান। আটককৃতরা হলেন, সিরাজুল ইসলাম উজ্জ্বল ও মো. দেলোয়ার হোসেন। পুলিশ ধারণা করছে, বইগুলো অবৈধভাবে বিক্রির জন্য মজুত করা হয়েছিল। এসব গোডাউনে প্রথম থেকে নবম শ্রেণির বিভিন্ন বিষয়ের প্রায় ১০ হাজার বই ছিল। বইগুলো ট্রাকে করে জব্দ করে নিয়ে আসে পুলিশ। জব্দকৃত বইয়ের আনুমানিক মূল্য আট লাখ টাকা বলেও জানিয়েছে ডিএমপি।
বিনা মূল্যে বিতরণের ৯ হাজার বই কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকায় পাচারের সময়: মাধ্যমিক পর্যায়ে বিনা মূল্যে বিতরণের প্রায় ৯ হাজার বই বিক্রির উদ্দেশ্যে পাচারকালে শেরপুর থেকে জব্দ করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে শেরপুর সদর উপজেলার চরমোচারিয়া ইউনিয়নের ধাতিয়াপাড়া গ্রাম থেকে সদর থানার পুলিশ ট্রাকসহ এসব বই জব্দ করে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে পুলিশ মাহিদুল ইসলাম (৩২) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে। আটক মাহিদুলের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলায়।
শেরপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আমিনুল ইসলাম ট্রাকসহ বিনা মূল্যে বিতরণের সরকারি বই জব্দের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজ বিকেলে বলেন, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, জব্দ করা বই কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার রৌমারী সি জি জামান উচ্চবিদ্যালয় থেকে ট্রাকে বোঝাই করে বিক্রির উদ্দেশ্যে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। একটি চক্র বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যে এ ধরনের গুরুতর অপরাধমূলক কাজ করেছে। এ চক্রের সঙ্গে যাঁরা জড়িত, তাঁদের শনাক্ত করার জন্য পুলিশ অনুসন্ধান করে দেখছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একটি চক্র রৌমারী থেকে সরকারি বই বিক্রির উদ্দেশ্যে পাচার করছে, এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আজ ভোরে শেরপুর সদর থানার পুলিশ সদর উপজেলার চরমোচারিয়া ইউনিয়নের ধাতিয়াপাড়া গ্রামে অভিযান চালায়। এ সময় সেখানে একটি বাড়িতে রাখা ট্রাকবোঝাই প্রায় ৯ হাজার মাধ্যমিকের বইসহ পুলিশ ট্রাকটি জব্দ করে এবং পরে সেটি সদর থানায় নিয়ে আসে। ট্রাকটিতে ২০২৫ সালের অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ের প্রায় ৯ হাজার বই ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ সময় ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে মাহিদুল ইসলামকে আটক করে পুলিশ। মাহিদুল এসব বই ঢাকায় পাচারের কাজ করছিলেন বলে পুলিশ জানায়। এসপি আমিনুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে মাহিদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এদিকে রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় রৌমারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী জামাল হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। জব্দ করা বইগুলো রৌমারীতে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।