বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘আমরা ইতিহাস সৃষ্টি করবো, যাদের হাতে সাইনবোর্ড খোলা হচ্ছে তাদেরকেই সাইনবোর্ড লাগাতে হবে। এই বাংলাদেশে বাস করতে হলে, ঢাকা শহরে বাস করতে হলে তাদের ঢাকায় জিয়াউর রহমানের সাইনবোর্ড লাগাতে হবে।’
গতকাল সোমবার (৩০ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। গয়েশ্বর বলেন, ‘ইচ্ছা করলেই জিয়াউর রহমানের নাম মুছে দেয়া যায় না। কারণ জিয়াউর রহমানের নাম ও তার ছবি স্বাধীনতাকামী, গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, দেশপ্রেমিক জনগণের হৃদয়ে আঁকা। এই ছবি ছিঁড়ে ফেলা যায় না, মুছে ফেলা যায় না। কারণ এটা হৃদয়ে লেখা, কালিতে লেখা নয়। সে কারণেই বলছি, এই নাম যত স্পর্শ করবেন ততো হাত ভারী হবে। তার শাস্তি ভোগ করার জন্য আগামী দিন প্রস্তুত থাকতে হবে। আজকে জিয়াউর রহমানের নাম মুছে দেয়া হচ্ছে আবার প্রতিদিন টাকা খরচ করে আপনাদের নাম টয়লেট থেকে শুরু করে পাহাড়ের চূড়ায় লেখা হচ্ছে। স্বাধীনতা যুদ্ধের মহানায়ককে যদি মুছে ফেলতে চান, যেদিন রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকবেন না, সেদিন জনগণ শুধু আপনাদের নাম মুছবে না, সাদা চুন দিয়ে একেবারে পরিষ্কার করে ফেলবে।’
তিনি আরও বলেন, আপনি আজকে পিতার ভাস্কর্য বানান, সে ব্যাপারে আপত্তি নেই। কিন্তু ১৫ আগস্ট যারা আপনার পিতার লাশ পড়ে থাকা অবস্থায় লুঙ্গি পড়ে দেশ ছেড়ে বিদেশে আশ্রয় নিল, তার সংখ্যা পাঁচ হাজারের মতো, এইসব বেঈমান কাপুরুষদের ব্যবহার করে আপনি যা খুশি করবেন, সেটা মানানসই কতটুকু আপনি নিজেই বিবেচনা করবেন। যারা গায়েবি জানাজা পর্যন্ত পড়লো না তাদের কি অধিকার আছে এই নেতার নাম উচ্চারণ করার। তাদেরকে কেন আপনি পুরস্কৃত করেন। শেখ মুজিবকে আমরা অপমান করি না, তার জায়গা ইতিহাসে যেখানে আছে সেখানেই থাকবে। তার যতটুকু অবদান আছে সেটা আমরা স্বীকার করবো, এটাই নিয়ম। কিন্তু আপনার বাবার সঙ্গে যারা বেঈমানি করেছে তাদের পুরস্কৃত করবেন না।’
গয়েশ্বর বলেন, ‘ইতিহাস বলছে একটি ডাকের (আহ্বান) দরকার ছিল, সেটি দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। তার ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণকারী সবাইকে আমাদের স্মরণ করতে হবে। জিয়াউর রহমান সর্বকালের শ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা। সে কারণেই তার নাম মুছে দেয়া ইতিহাসকে বিকৃত করার অপচেষ্টা। এই কাজ করে জনগণের হৃদয়ে যে আঘাত করছেন, এই আঘাতের পাল্টা আঘাত পাওয়ার জন্য আপনাকে প্রস্তুত থাকতে হবে। সেই কারণেই বলছি নাম লেখালেখি আর মুছে দেয়াও বন্ধ করেন। জনগণের ওপর ছোড়া পাথর সরানোর দায়িত্ব আমাদের ওপর বর্তায়, এই কারণে জিয়াউর রহমানের দল করি। আপনারা সবাই পালালেও সেদিন জিয়াউর রহমান পালায়নি। এই নাম মুছে ফেলা যায় না, এই নাম মুছতে গেলে নিজের নাম মুছে যায়।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল প্রমুখ।