‘কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড পেন্ডামিক প্রিপেয়ার্ডনেস’ প্রকল্পের প্রথম সংশোধন অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সংশোধনীতে প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে করা হয়েছে ৬ হাজার ৭৮৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। প্রকল্পটির মূল খরচ ছিল ১ হাজার ১২৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা। অর্থাৎ করোনা মোকাবিলার এ প্রকল্পের খরচ বাড়লো ৫ হাজার ৬৫৯ কোটি ৭ লাখ টাকা। গতকাল মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটির সংশোধন অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পের মোট খরচের মধ্যে সরকার দেবে ১৭২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। প্রথমে সরকারের দেয়ার কথা ছিল ২৭৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা। অর্থাৎ এ প্রকল্পে সরকার এখন ১০৫ কোটি ৬ লাখ টাকা কম দেবে। প্রকল্পে বিদেশি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৬১৪ কোটি ১৩ লাখ টাকা। প্রকল্পে প্রথমে বিদেশি ঋণ ছিল ৮৫০ কোটি টাকা। বর্তমানে ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৭৬৪ কোটি ১৩ লাখ টাকা। প্রকল্পটি ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ বা স্বাস্থ্য অধিদফতর।
করোনার টিকা কেনার প্রকল্প একনেকে অনুমোদন: টিকা কেনা, পরিবহন ও সংরক্ষণ বাবদ খরচ হবে মোট ৪ হাজার ৩১৪ কোটি ৪৯ লাখ ১৭ হাজার টাকা। শুধু টিকা কিনতে ব্যয় হবে ৩ হাজার ৩০ কোটি টাকা। গতকাল মঙ্গলবার করোনা ভাইরাসের টিকা কেনার প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উঠলে তার অনুমোদন মিলেছে। নির্ধারিত তালিকায় এটি না থাকলেও বিশেষ ব্যবস্থায় সরাসরি উপস্থাপন করা হয়েছে প্রকল্পটি।
চলমান ‘কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডামিক প্রিপার্ডনেস’ প্রকল্পের সঙ্গে এ ব্যয় যুক্ত করায় প্রকল্পটির মোট ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ৬ হাজার ৭৮৬ কোটি টাকা। তবে প্রকল্প প্রস্তাবে টিকার পরিমাণ ও একক মূল্য উল্লেখ করা হয়নি।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে গণভবন থেকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।
এ প্রসঙ্গে এর আগে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) আবুল কালাম আজাদ বলেন, তাড়াহুড়ো করে প্রকল্পটি প্রক্রিয়াকরণ করা হয়েছে। তাই কিছু ভুলত্রুটি থাকা অস্বাভাবিক নয়।
টিকা দেওয়ার খসড়া নীতিমালা গেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে: করোনা ভারাইরাসের (কোভিড-১৯) টিকা প্রয়োগের একটি নীতিমালা করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সম্প্রতি নীতিমালাটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে অধিদপ্তর।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রস্তুত করা ওই নীতিমালা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলে তা চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘টিকা প্রয়োগের ব্যাপারে আমরা একটি নীতিমালা করেছি। ওই নীতিমালা আরো আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলে তা চূড়ান্ত করা হবে।’ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত করোনার টিকা উৎপাদন করছে সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া, যা বেক্সিমকোর মাধ্যমে বাংলাদেশে আসবে। বেক্সিমকো বেশ কয়েকদিন আগে ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কাছে সিরাম ইনস্টিটিউটের ওই টিকা আমদানি ও ব্যবহারের জন্য অনুমতি চেয়েছিল। সম্প্রতি ঔষুধ প্রশাসনও টিকার অনুমতি দিয়েছে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা নো অবজেকশন সার্টিফিকেট দিয়েছি এটি আমদানি করার জন্য। এখন এটি আমদানি করে ব্যবহার করতে পারবে।’