টেস্ট ক্রিকেটে ১৭ বছরের জুনিয়র আফগানিস্তানের নিচে নেমে গেলো বাংলাদেশ। গতকাল বুধবার আইসিসি টেস্ট র্যাংকিং তালিকা হালনাগাদ করবার পর দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ এই তালিকার দশ নম্বরে। আর আফগানিস্তান উঠে গেছে নয় নম্বরে। এদ্দিন বাংলাদেশ ছিল র্যাংকিংয়ের নয় নম্বরে। আফগানিস্তান ছিল এগারো নম্বরে। দশ নম্বরে ছিলো জিম্বাবুয়ে। হালনাগাদ করা নতুন তালিকায় টেস্ট ক্রিকেটের নবীনতম দল আফগানিস্তান দুই ধাপ উপরে উঠলো। অবস্থানের অবনতি হলো বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের। আফগানিস্তানের রেটিং পয়েন্ট এখন ৫৭, বাংলাদেশের রেটিং পয়েন্ট ৫৫। ২০১৭ সালের টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর আফগানিস্তানের অভিষেক হয় ২০১৮ সালের জুন মাসে।
এখন পর্যন্ত চারটি টেস্ট খেলে আফগানিস্তান ২টিতে জয় পেয়েছে এবং দুটিতে হেরে গেছে। বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের মুখোমুখি দেখায় আফগানিস্তান ২২৪ রানের বড় একটি জয় পায় ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত সবগুলো দলের সাথে প্রথম দেখায় টেস্ট ম্যাচ হেরেছে।
বাংলাদেশ ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের সাথে একটি টেস্টে জয় পেয়েছিল। কিন্তু ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২০ সালে পাকিস্তানের সাথে ম্যাচ পর্যন্ত সব টেস্টেই বাংলাদেশ হেরেছে বিশাল ব্যবধানে।
যেভাবে র্যাংকিং করে আইসিসি: আইসিসি র্যাংকিং হালনাগাদের সময় ৩৬ মাস থেকে ৪৮ মাসের একটা সময় কাল বিবেচনা করে। এই সময়ে একটা টেস্ট দল যদি তার চেয়ে শক্তিশালী টেস্ট দলের সাথে জয় পায় সেক্ষেত্রে জয়ী দলের পয়েন্ট বেশি বাড়ে। তাই আফগানিস্তান বাংলাদেশকে হারানোর ফলে পয়েন্ট বাড়তি পেয়েছে এবং বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে গেছে। এবং এই সময়কালের মধ্যে বাংলাদেশ কোনো টেস্ট ম্যাচেই সুবিধা করতে পারেনি। বরং জিম্বাবুয়ের সাথে ২০১৮ সালে এবং আফগানিস্তানের সাথে ২০১৯ সালে হেরে গেছে। বাংলাদেশের জন্য সামনে সুযোগ আছে পয়েন্ট তালিকার নয়ে ওঠার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে যদি ২-০ ব্যবধানে জয় পায় তাহলে বাংলাদেশের রেটিং পয়েন্ট হবে ৬৬। ২০২০ সালে নানা ম্যাচের পর্যালোচনা করে দেখা যায় বাংলাদেশ টানা ১০ ইনিংসে ২৫০ রানও করতে পারেনি।
বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা কোনো নির্দিষ্ট সেশনের শেষ হওয়ার আগে বা দিনের একদম শেষ মুহূর্তে উইকেট দিয়ে আসেন। যদিও তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম বা সাকিব আল হাসানরা বাংলাদেশের টেস্ট ব্যাটিংয়ের ব্যর্থতা ঢেকে দেন কিছু ইনিংস খেলে, কিন্তু বোলারদের মধ্যে ২০ উইকেট নেয়ার মতো আগ্রাসী মনোভাব দেখা পাওয়া দুষ্কর।
যেমন বাংলাদেশের মাটিতে কিছু টেস্টে স্পিন বোলিং দিয়ে ইংল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়ার মতো দলেরও ২০ উইকেট নিয়েছে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে, কিন্তু ঘরের বাইরে এমনটা খুব কমই দেখা গেছে। এজন্য বাংলাদেশ শেষবার দেশের বাইরে যখন টেস্ট সিরিজে জয় পেয়েছে, তারপর এক দশক পেরিয়ে গেছে।
২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিকাংশ ক্রিকেটার ধর্মঘটে যাওয়ার পর একটি দ্বিতীয় সারির ওয়েস্ট ইন্ডিজ টিমের সঙ্গে বাংলাদেশ ২-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ জেতে।
নতুন টপ টেন টেস্ট দল: ১. নিউজিল্যান্ড ২. অস্ট্রেলিয়া ৩. ভারত ৪. ইংল্যান্ড ৫. দক্ষিণ আফ্রিকা ৬. শ্রীলঙ্কা
৭. পাকিস্তান ৮. ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৯. আফগানিস্তান ১০. বাংলাদেশ।- বিবিসি বাংলা, ঢাকা