সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা বলেছেন, আমি ১ ভোট পেলেও সুষ্ঠু নির্বাচন করব। নির্বাচনে গন্ডগোল হলে, প্রথম দায় ওবায়দুল কাদের, দ্বিতীয় দায় নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেন চৌধুরীর। ভোটাধিকার হরণ শুরু হয়েছে জিয়াউর রহমানের আমল থেকে। জিয়াউর রহমান হাঁ, না ভোট দিয়ে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছেন। পরবর্তীতে খালেদা জিয়া মাগুরা উপ-নির্বাচনসহ অনেক নির্বাচনে অনিয়ম করেছে। নির্বাচন সুষ্ঠ করার অনেক দৃষ্টান্ত আছে শেখ হাসিনার। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ৩০ বছর আন্দোলন করে গেছেন স্বাধীনতা, ভোট ও ভাতের অধিকারের জন্য। ১৬ বছর জেল খেটেছেন বাঙালি জাতির জন্য। ৩বার ফাঁসির মঞ্চ থেকে ফিরে এসে বাঙালি জাতির জন্য জয়গান গেয়েছেন। সে বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে কাফেররা নির্মমভাবে হত্যা করেছে। ছোট ৮ বছরের শিশু রাসেল ঘাতকদেরকে বলেছিলো আমাকে মের না, আমি আমার মায়ের কাছে যাব, কাফেররা তাকেও বাঁচতে দেয়নি, গুলি করে মাথার খুলি উড়িয়ে দিয়েছে। কি নির্মম হত্যাকান্ড। বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির জন্য স্বাধীনতা, ভাতের অধিকার ও ভোটের অধিকার ফিরেয়ে এনেছেন। শেখ হাসিনা ভাতের অধিকার নিশ্চিত করেছেন, কিন্তু ভোটের অধিকার নিশ্চিত হয়নি। এটা নিশ্চিত করতে হবে, এটা একমাত্র নিশ্চিত করতে পারবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আর কেউ করতে পারবেন না। তিনি আরও বলেন, নোয়াখালীর তথাকথিত আ’লীগ নেতা একরাম চৌধুরী আমার বিরুদ্ধে আমার দলীয় কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, তথাকথিত এ নেতা তার ঘনিষ্ঠ নোয়াখালী পৌরসভা সাবেক মেয়র ও নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ আজাদকে দিয়ে দুই দিন আগে বিএনপি প্রার্থী কামাল উদ্দিন চৌধুরীর কাছে ৫০লক্ষ টাকা পাঠিয়েছেন আমাদেরকে নির্বাচনে হারিয়ে দেওয়ার জন্য। আমি আজকে স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আমার প্রতিপক্ষ প্রার্থীকে অভিনন্দন জানিয়ে সবাইকে মিষ্টি খাইয়ে, আমি বাড়ি চলে যাব। অবৈধ নির্বাচন করব না, যদি আমি অবৈধ নির্বাচনের পক্ষে থাকি, আল্লাহ যেন আমাকে ১৬ তারিখ ভোট দিন মৃত্যু দেন। তিনি আর বলেন, আমার নেত্রীর পক্ষ থেকে আমার ওপর কোন ছাপ নেই। নেত্রী সাহস করে সত্য কথা বললে তাকে সাহস করেন। তিনি বলেন, আমি বসুরহাট পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডে চাঁন মিয়া বাড়ির একজন স্বল্প শিক্ষিত মহিলার কাছে ভোট চাইতে গিয়েছি, মহিলা আমাকে বলল আপনি কেন ভোট চাইতে এসেছেন, তখন আমি ভয় পেয়ে গেলাম, সে বলল জননেত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছেন। আপনি আমার কাছে ভোট চাইতে আসবেন না, আমি আপনাকে ভোট দিব। মির্জা বলেন, প্রধানমন্ত্রী বাপের বেটি, তাঁর সৎ সাহস আছে, তিনি পারবেন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে, এদেশের মানুষের হৃদয়ের মনি কোঠায় চিরদিন স্থান করে নিতে পারবেন। আমি ভোটের পর নেত্রীর সাথে দেখা করতে যাব, করোনার কারণে না পারলে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে গিয়ে মানববন্ধন করব, আমি আবারও বলছি বৃহত্তর নোয়াখালীতে ১৩টি আসনে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আ’লীগ ৩-৪টা আসন পাবে। অন্য আসনগুলোতে প্রার্থীরা দরজা খুলে পালানোর পথ খুঁজে পাবে না। আমি একথাগুলো বলছি তাদেরকে সংশোধন হওয়ার জন্য, সংশোধন না হলে, আগামী নির্বাচনে আমাদেরকে বড় ধরনের খেসারত দিতে হবে। আমি যখন অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলি, ভোট চুরি, আমার এলাকায় গ্যাস, ছেলে মেয়েদের চাকুরীর কথা, শাহজাদপুর ও হাবিবপুরের গ্যাস ক্ষেত্রের নাম সুন্দলপুর রাখা হয়েছে এটার বিরুদ্ধে কথা বলি, নোয়াখালীর অপ-রাজনীতির বিরুদ্ধে কথা বলি, চাকুরী দেওয়ার নামে গরিব পুলিশ থেকে ৫লক্ষ টাকা, গরীব পিয়ন থেকে চাকুরী নামে ৩লক্ষ টাকা নেওয়ার কথা বলি, তখল তারা আমাকে বলে আমি নাকি পাগল ও উম্মাদ। আমি বলি নোয়াখালী ও ফেনীর অপরাজনীতির কথা, আমাকে জাতীয় রাজনীতিতে টেনে নিয়ে যায়। মির্জা আরও বলেন, আগামী ১৬তারিখ পর্যন্ত আমার নাম আপনাদের হৃদয়ে লিখে রাখবেন, এরপর আপনারা যে যে দল করুননা কেন? জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম হৃদয়ে ধারণ করবেন। ধারণ না করলে আমরা বিশ্বের দরবারে অকৃতজ্ঞ জাতি হিসেবে পরিগণিত হব। কারণ বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা দিয়েছেন, অর্থনৈতিক মুক্তির পথ দেখিয়েছেন। আমি করোনার সময় পাহাড়ের মত ছিলাম, তখন এসমস্ত নেতারা কোথায় ছিল, যারা আমার প্রতিদ্বন্ধি। তিনি বুধবার সকাল ১১টায় বসুরহাট পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডে নৌকা মার্কার সমর্থনে কর্মীসভায় এসব কথা বলেন, এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বিশিষ্ট সমাজ সেবক ডাঃ মাহবুব রসুল, আমেরিকান প্রবাসী ও আ’লীগ নেতা আইয়ুব আলী, ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী বেলায়েত হোসেন বেলাল, সংরক্ষিত ৪,৫,৬ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মাকসুদা আক্তার হ্যাপি প্রমুখ।