১৬ বছরের টগবগে যুবক মুন্না। পুরো নাম শেখ শাওন মুন্না। মুন্না কোটালীপাড়া পাবলিক ইনষ্টিটিউশনের মেধাবী ছাত্র। এ বছর তার এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা রয়েছে। মুন্না কোটালীপাড়া পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের তারাশী গ্রামের দরিদ্র দিনমজুর হালিম শেখের ছেলে। যে বয়সে মুন্নার আনন্দ-উল্লাস দুরন্তপনার মধ্যে দিয়ে সময় কাটানোর কথা ঠিক সেই বয়সে তার ঘরে শুয়ে সময় কাটাত হচ্ছে। মুন্না মরণব্যাধি ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত। জানা যায়, ছোট ২ বোন ও মা-বাবাকে নিয়ে মুন্নার পরিবার। অভাব অনাটন তাদের নিত্যসঙ্গী। মুন্নার ছোট বোন মারিয়া তারাশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪র্থ শ্রেণীতে পড়ে। ছোট বোন মরিয়মের বয়স ৪ বছর। মুন্না স্বপ্ন দেখতো লেখাপড়া শিখে একদিন বাবা-মায়ের এই অভাবের সংসারটা হাঁসি-আনন্দ আর পরিপূর্ণতায় ভরিয়ে দিবে। বাবা-মায়েরও অনেক স্বপ্ন ছিলো মুন্নাকে নিয়ে। সব স্বপ্নগুলো হাওয়ায় ভাসিয়ে দিয়েছে এই মরণব্যাধি। ২০১৫ সালে একটি আকষ্মিক দূর্ঘটনায় মুন্নার মাথা ফেটে গুরুতর জখম হয়। ওই সময় ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসকেরা কয়েক দফায় অপারেশন ও দীর্ঘদিনের চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে ওঠে মুন্না। পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজনের সহযোগিতা ও ধারদেনা করে ওই সময় মুন্নার চিকিৎসা সম্পন্ন করে তার পরিবার। যার ধকল এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি মুন্নার দরিদ্র বাবা। এরই মাঝে গত মাসে (মার্চ ২১) হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে পড়ে মুন্না। দ্রুত কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে ভর্তি করে। এখানে চিকিৎসকদের পরামর্শে মুন্নাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারী বিভাগের সিনিয়র কলসালটেন্ট অধ্যাপক ডাঃ জিল্লুর রহমানের অধিনে ভর্তি করা হয়। তিনি এমআরআই, সিটি এনজিওগ্রাম, সিটি স্ক্যানসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানান, মুন্নার ব্রেন টিউমার হয়েছে। অতি দ্রুত অপারেশন করাতে হবে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেসরকারী হাসপাতালে এই অপারেশন করতে প্রায় ২০ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। অন্যদিকে সরকারি হাসপাতালে এই চিকিৎসায় প্রায় ৬ থেকে ৮ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। মুন্নার দরিদ্র পিতার পক্ষে এতো টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয়। তাই তিনি সন্তানের চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। মুন্নার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুরেশ দাস জানান, মুন্না খুবই শান্ত ও ভদ্র ছেলে। লেখাপড়াও খুব মেধাবী। চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থী। পরীক্ষার জন্য তার ফরম পূরণও করা হয়েছে। হঠাৎ করে ব্রেন টিউমার ধরা পড়ায় মুন্না চরম উৎকন্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। দরিদ্র পরিবারের সন্তান মুন্নার চিকিৎসার অর্থের যোগান দেওয়া তার পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয়। সকলের সহযোগিতায় মুন্নার চিকিৎসা সম্ভব। আসুন আমরা সবাই ছেলেটির চিকিৎসায় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেই। এদিকে সকলের কাছে সহযোগিতা চেয়ে মুন্নার চিকিৎসার জন্য উদ্যোগ নিয়েছে কোটালীপাড়ার অলাভজনক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জ্ঞানের আলো পাঠাগার। গঠন করা হয়েছে মুন্না চিকিৎসা তহবিল। এই সংগঠনটি তাদের ফেজবুক আইডি থেকে পোষ্ট দিয়ে মুন্নার জন্য অর্থ সংগ্রহ করছে। সংগঠনটি মুন্নার চিকিৎসায় সকলকে এগিয়ে আসার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। আর্থিক সহযোগিতা পাঠানোর ঠিকানা: আব্দুল হালিম শেখ, সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর-০০০৩৫৩৪০০৩২৬৩, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, কোটালীপাড়া শাখা, গোপালগঞ্জ।
বিকাশঃ ০১৯৮৫৬২৭৬৯০, রকেট ও নগদঃ ০১৩১২৫০৪৬৯২