করোনা প্রতিরোধে চলছে লকডাউন। তাতে থেমে নেই কৃষকেরা। মাঠে হাসছে তাদের নানা জাতের ফসল। এর মধ্যে ভুট্টা কাটা মাড়াইয়ে ব্যস্ত কৃষাণ-কৃষাণীরা। তাদের আঙ্গিনায় শোভা পাচ্ছে হলুদ রঙের ভুট্টার মোচা তা দেখে চাষিদের মলিন মুখে ফুটে উঠেছে স্বপ্ন পূরণের হাসি। কারণ এবার ভুট্টার বাম্পার ফসনের সাথে মিলছে কাঙ্খিত দাম। প্রতি বিঘায় লাভ হচ্ছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। সরেজমিনে কোলকোন্দ ইউনিয়নের সিঙ্গীমারী এলাকার আখতারুল ইসলাম মিঠুর সাথে কথা হলে তিনি জানান, ৪ একর ভুট্টা আবাদে ৪ লাখ ২০ টাকা খরচ হয়েছে। সম্প্রতি কাল বৈশাখীর ঝড়ে কিছুটা ভ্টুা ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। তিনি আশা করে তাতেও তার ভুট্টা আবাদে লাভ হবে। একাধিক কৃষক জানান, উৎপাদন খরচের চেয়ে লাভ বেশি হওয়ায় বিগত বছরের তুলনায় এবার বেশি জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। তাছাড়া ভুট্টা মানুষের জন্য যেমন পুষ্টিকর তেমনি এটি এখন পোল্ট্রি ও মাছের খাবারসহ বিভিন্ন খাবারে যুক্ত হয়েছে। জানা গেছে, বছরে দুইবার ভুট্টার আবাদ হয়ে থাকে। একটি বরি মৌসুম আর গ্রীষ্ম মৌসুম। নদীর চর, উঁচু পরিত্যক্ত ও অনাবাদি জমিতে ভুট্টা চাষ হয়ে উঠছে লাভজনক। ভুট্টা চাষে অতিরিক্ত শ্রম ও সেচের প্রয়োজন হয় না। তাছাড়া অন্যান্য ফসলের চেয়ে ভুট্টা রোগবাইল প্রতিরোধের ক্ষমতাও রয়েছে বেশি। কম খরচে ভুট্টা চাষ করে কৃষক পাচ্ছেন অন্য ফসলের তুলনায় অধিক ফলন ও লাভ। বিনবিনা চরের জয়নাল আবেদীন বলেন, ভুট্টা মাছ ও মুরগির খাবার হিসেবে ব্যাপক ব্যবহার হচ্ছে। এ কারণে ভুট্টার চাহিদা বেশি। চাহিদা বেশি থাকায় বাজারে দামও ভাল পাওয়া যাচ্ছে। এবার ভুট্টার ফলন ভাল হয়েছে। বর্তমানে ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, এবারে ৩ হাজার ১শত ৬০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। ভুট্টা চাষে কৃষকদের সহায়তা ও পরামর্শ দেওয়ায় আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। পোল্ট্রি খাদ্য হিসেবে ভুট্টা রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। গো-খাদ্য এবং জ্বালানি হিসেবে ভুট্টার গাছ ও ছোবড়া বিক্রি করে অতিরিক্ত আয় করছে কৃষক। বাজারে চাহিদা ও দাম বেশি হওয়ায় কৃষক ভুট্টা চাষে ঝুঁকে পড়েছেন।