মহামারি করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য যখন একটি প্রতিযোগিতা চলছে তখনই এই ভাইরাসকে ধ্বংস করার সক্ষমতা আছে এমন একটি নাকের স্প্রে তৈরি করার দাবি করছে বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিকেল মেজারমেন্টস-বিআরআইসিএম। এটির নাম রাখা হয়েছে “বঙ্গোসেইফ ওরো নেইজল স্প্রে”। বিআরআইসিএমের মহাপরিচালক ড. মালা খান বলেন, করোনাভাইরাস ধ্বংস করার সক্ষমতা আছে এমন একটি নাকের স্প্রে তৈরি করার কাজ করছি আমরা। এই স্প্রে তৈরি করার বিষয়ে আমরা এখন বিস্তারিত জানাতে চাই না। আমরা পুরোপুরি প্রস্তুতি নিয়ে বাজারে আসতে চাচ্ছি।
তিনি বলেন, নাকের এই স্প্রে গত ২৪ মার্চে বিএমআরসি থেকে ক্লিনিকাল ট্রায়ালের অনুমতি পেয়েছি আমরা। এখন ক্লিনিকাল ট্রায়াল চলছে। খুব শিগগিরই ক্লিনিকাল ট্রায়ালের কাজ শেষ করব আমরা।
নাকের এই স্প্রে কবে নাগাদ বাজারে আসবে জানতে চাইলে মালা খান বলেন, আমরা একদম প্রস্তুতি নিয়ে বাজারে আসতে চাই। এখন বিস্তারিত বলতে চাই না। কবে বাজারে আসবে সেই তারিখ এখনও নির্ধারণ হয়নি। সবকিছু ঠিক থাকলে মে মাসে স্প্রেটি বাজারে আসবে।
মহাপরিচালক বলেন, করোনাকালীন সময়ে মানুষের কথা চিন্তা করে করোনা রোধে কি করা যায় তা আমরা অনেক আগে থেকেই পরিকল্পনা করে আসছি। আমরা আশা করছি, এই স্প্রেটি মানুষের অনেক কাজে আসবে।
স্প্রেটির মূল্য সম্পর্কে তিনি বলেন, এটি তৈরি করতে বা উৎপাদন খরচ কত টাকা হয় তা বুঝে মূল্য নির্ধারণ করা হবে। তবে মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যেই থাকবে। প্রাথমিকভাবে এই স্প্রের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ টাকা। সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বঙ্গোসেইফ ওরো নেইজল স্প্রে বাজারজাতকরণে কোনো মুনাফা করার উদ্দেশ্য আমাদের নেই। মানুষের উপকারে আসবে চিন্তা করেই এটি তৈরি করা হচ্ছে। কী পরিমাণ স্প্রে উৎপাদন করার সক্ষমতা আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেশের মানুষের চাহিদা অনুযায়ী আমরা প্রোডাকশন করতে পারব ইনশাআল্লাহ।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্টস (বিআরআইসিএম) জানিয়েছিলো তারা করোনাভাইরাস ধ্বংস করতে সক্ষম একটি স্প্রে তৈরি করেছে। যা নাক, মুখ গহ্বরে স্প্রে করলে করোনাভাইরাস ধ্বংস হবে। সে সময় তারা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এটি উপস্থাপন করে। তখন বিআরআইসিএম জানায়, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ২০০ জন করোনা আক্রান্ত মানুষের ওপর এই স্প্রের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়। পরীক্ষায় কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।
বিআরআইসিএম জানিয়েছে, বঙ্গোসেইফ ওরো নেইজল স্প্রে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও বিআরআইসিএম যৌথভাবে উদ্বাবন করেছে। বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিল (বিএমআরসি) অনুমতি নিয়ে বর্তমানে ট্রায়াল করা হচ্ছে। নাক, মুখ গহ্বর, শ্বাসনালীতে করোনাভাইরাস অবস্থান করে। আর এই স্প্রের মাধ্যমে সেখানে অবস্থান করা ভাইরাস ধ্বংস হবে। করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিরাও এটি ব্যবহার করলে সুফল পাবেন। আক্রান্তব্যক্তিদের ভাইরাল লোড কমিয়ে দ্রুত সুস্থ হতে সহায়তা করবে। ‘বঙ্গোসেইফ ওরো নেইজল স্প্রে’র পেটেন্টের জন্যেও কাজ করছে বিআরআইসিএম।