নরসিংদির বেলাব উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের সন্তান শিপন মোল্লার পাট ও পাটজাত দ্রব্য হতে তৈরি বিভিন্ন হস্তশিল্প এই অঞ্চল সহ বেলাব উপজেলার প্রায় ৩১ হাজার বেকার নারী পুরুষদের বেকারত্ব দূরীকরণের পাশাপাশি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান আত্মপ্রকাশ করেছে তার প্রতিষ্ঠিত ‘ইলমা শিল্পালয় এ- হ্যান্ডিক্রাফটস’। গরীবের আশার আলো এই প্রতিষ্ঠানটিতে প্রতিদিনই বেকাররা অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে এবং একেকজনের স্থায়ী কর্মসংস্থান হচ্ছে। শিপন মোল্লার এই প্রতিষ্ঠানে পাট থেকে তৈরি করা হচ্ছে নানা ধরনের দরকারি উপকরণ। বিভিন্ন ধরণের ঝুপড়ি, ব্যাগ, থলে, ডগ কেইজ, পাটের দড়ি তৈরি করে নানা ধরণের হস্তশিল্প, বসার আসন, ম্যাট, কলমদানি, নানা রকমের পাপস ইত্যাদি সৌখিন পণ্যে ভরপুর তার শিল্পালয়। দেখা গেছে খুব ভোরে নারীরা দল বেঁধে দড়ি তৈরি করে তার কারখানার গোডাউনে জমা দেয় আবার নতুন পাট নিয়ে আসে। সারাদিন চলে কর্মব্যস্ততা। ঘরে বসে নারীরা তৈরি করছে হস্তশিল্প। প্রতিটি কাজের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা তাদের দেওয়া হচ্ছে। পঞ্চাশোর্ধ মিনারা বানু জানান, বাড়িত কামাই রোজগারের মতো কেহ নাই বাজান। ‘মোল্লার কারখানার পাট দিয়ে দড়ি আর ব্যাগ বানাইয়া ভালা টেহা পাই মাসে। সংসারের খরচ চালাইয়া কিছু ব্যাংকে রাহি।’ আরেক গৃহবধূ সালমা খাতুন বলেন ‘ আল্লায় আমগোরে অহন বাচনের পথ দেহাইছে। মোল্লা সাবের ইন্ড্রাস্ট্রি থাহনে আমরা কাম কইরা খাইতাছি। এইডা সহজ কাম। ঘরের কাম সাইরা আমি সারাদিন পাটের পাপস তৈরি করি।’ এমন অভিব্যক্তি প্রায় সকলেরই। এলাকার এক ফার্মাসিস্ট কাজল ডাক্তার বলেন ‘ অবহেলিত এ ইউনিয়নটি এবং আমাদের এ গোশালাকান্দা, লতিফপুর, কাশিমনগর সহ সকল গ্রামের অসহায় কর্মক্ষম মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ বেকারত্ব দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে মোল্লার কারখানাটি। সরেজমিনে দেখা যায় ইলমা শিল্পালয় এ- হ্যান্ডিক্রাফটস’ এর গোশালাকান্দা নতুন মোড়ে এবং বেলাব বাজার গোডাউন ও কারখানাতে উৎপাদিত পণ্য সারি করে রাখা আছে শহরে নেওয়ার জন্য। কিছু পণ্য আছে যা এখান থেকে বিদেশেও রপ্তানি করা হচ্ছে। ভিতরে পুরুষরা কাজ করছে। প্রতি বিভাগে সুপারভাইজার আছেন। ডগ কেইজ, ম্যাটস, পাপুস এসব বিদেশে রপ্তানি করা হয়। শিপন মোল্লার সাথে কথা হলে তিনি জানান ‘ প্রথমে ছোট পরিসরে শুরু করেছিলাম। এখন পরিধি বেড়েছে। বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের প্রায় ১৭ হাজার এবং উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়ন মিলে প্রায় ৩১ হাজার বেকার নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান করতে পেরে আমি আনন্দিত। আশা করছি আরও বেকারত্ব লাঘব করতে পারব। জানা গেছে ঈদ ও অন্যান্য অনুষ্ঠানে এখানকার কর্মরত শ্রমিক ছাড়াও এলাকার অসহায়, হতদরিদ্র মানুষদের মাঝে ‘ইলমা শিল্পালয় এ- হ্যান্ডিক্রাফটস’ বিভিন্ন উপহার সামগ্রী বিতরণ করে থাকে।