চলমান করোনা ভাইরাস সংক্রমণে কঠোর লকডাউনে শেরপুরে অন্যান্য কৃষি উৎপাদিত খাদ্য দ্রব্যের সাথে দুধের বাজার দাম কমে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছে গাভীর খামারিরা। শেরপুর জেলা শহরের তিনানী বাজার মোড়ে দুধ বিক্রি করতে এসে এমনটিই জানাচ্ছিলেন খামারি দুলাল মিয়া(৫০)। তিনি শেরপুর সদর উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নের তিলকান্দি তালুকদার বাড়ির বাসিন্দা। চরশেরপুর ইউনিয়নের খামারি শরীফুল ইসলাম বলেন, গত বছর মার্চ মাস থেকে করোনা মহামারি চলছে। মাঝে মধ্যেই মহামারি ঠেকাতে সরকার লকডাউন দিচ্ছে। এতে দূর দূরান্তে যানবাহন বন্ধ। দুধ শহরে আনতেও আমাদের অনেক ঝামেলা ও দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এদিকে করোনায় লকডাউনের কারণে মিষ্টির দোকান সব বন্ধ। যদিও দুই একটা দোকান খোলা আছে, সেগুলোতে কাস্টমার নেই। যে দুধ আমরা সচরাচর লিটার প্রতি ৭০ টাকা করে বিক্রি করতাম। সেই দুধ বর্তমানে লিটার প্রতি ৩৫ টাকা বিক্রি করতেও কষ্ট হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আমরা মাঠে মারা যাব। এদিকে সদর উপজেলার বাজিতখিলা ইউনিয়নের খামারি আব্দুর রউফ বলেন, আমার খামারে ১০ টি গরু আছে। তাদের জন্য খৈল, ভূষি, চাউলের গুরাসহ নানা কিছু কিনতে হয়। একদিকে বর্ষার জন্য গরু তেমনটা বাইরে বের করা যায় না। অপরদিকে গরুর বাড়তি খাবার কেনার জন্য টাকার প্রয়োজন। এদিকে চলমান লকডাউনে মিষ্টির দোকান বন্ধ থাকার কারনে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ লিটার দুধ আমাকে অতি সস্তায় বিক্রি করতে হচ্ছে। দুধ কিনতে আসা একজন ক্রেতা আশরাফ আলী বলেন, এখন দুধের দাম অবিশ্বাস্য কম। গত কদিন আগে রমজানের ঈদেও ৭০ টাকা লিটার প্রতি দুধ কিনেছে। এবার লকডাউনের কারণে যেহুতু মাত্র ৩৫ টাকা দরে লিটার পাচ্ছি। তাই এই সুযোগে ৫ লিটার দুধ কিনলাম। এবিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল হাই জানান, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি যেন কোন খামারি সরকারি প্রণোদনার টাকা পাওয়া থেকে বাদ না পরে। গতবার যারা পায়নি তাদের নতুন তালিকা প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। জুন মাসেই খামারিদের টাকা বিকাশে চলে যাওয়ার কথা ছিল। হয়তো কারিগরি কোন জটিলতার কারণে সম্ভব হয়নি। আশা করছি অতি দ্রুত সময়ের মধ্যেই ধাপে ধাপে সবার টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যেমে পৌছে যাবে।