শরীয়তপুর-জাজিরা নাওডোবা রোডে চলমান ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রমকে শতভাগ স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত করতে উচ্চ রেজুলেশনের ক?্যামেরাযুক্ত ড্রোনের সাহায্যে প্রকল্প এলাকার ভিডিও ধারণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার দিনব্যাপী ড্রোনের মাধ্যমে ভিডিও ধারণের এ কার্যক্রম চালানো হয়। অধিগ্রহণ কাজে ড্রোন ব্যবহারের ফলে সরকারি অর্থের অপচয় রোধ হবে। পাশাপাশি প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার কোনো ভাবেই যেন বঞ্চিত না হয় সেটি ও নিশ্চিত হবে। ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনতে ও দুর্নীতিরোধে দেশে প্রথমবারের মতো অধিগ্রহণ প্রকল্পে ড্রোন ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে শরীয়তপুর থেকে নাওডোবা পর্যন্ত প্রস্তাবিত চার লেন সড়ক প্রকল্প এলাকার ভিডিও করা হয়। সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানায়, শরীয়তপুর-জাজিরা-নাওডোবা (পদ্মা সেতুর সংযোগ) সড়ক উন্নয়ন’ নামে প্রকল্পটি ২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি একনেক সভায় অনুমোদন পায়। একই বছর অক্টোবরে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে প্রশাসনিক চিঠি পায় শরীয়তপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এ প্রকল্পের আওতায় তিনটি প্যাকেজে ২৭ কিলোমিটার সড়ক, ২৭টি কালভার্ট ও ২টি সেতু নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ হাজার ২৩১ কোটি ১৮ লাখ টাকা ধরা হয়েছে জমি অধিগ্রহণে। সড়কের জন্য শরীয়তপুর জেলা প্রশাসনকে ১০৫ দশমিক ৫৬ হেক্টর জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব দিয়েছে সড়ক বিভাগ। জমি অধিগ্রহণে নোটিশ ও জারি করে প্রশাসন। পদ্মা সেতুর পাড় থেকে শরীয়তপুর সদর পর্যন্ত রাস্তার ফোরলেনে উন্নীত করার কাজের জন্য জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়েছে। জমি অধিগ্রহণ শুরু হলে একটি মহল অসৎভাবে লাভবান হতে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে গণবিজ্ঞপ্তির পরও অধিগ্রহন এলাকায় বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করে। যারা গণবিজ্ঞপ্তির পর স্থাপনা উত্তোলন করেছে এসব অসাধু লোকগুলো সহজে চিহ্নিত করার জন্য এ প্রযুক্তির মাধ্যমে ভিডিও করা হয়।অপরদিকে, যেসব দালাল চক্র, কিংবা অসাধু কর্মচারী আর্থিক লেনদেনের মাস্টারপ্লান করেছে বলে অভিযোগ ছিল তাদের পরিকল্পনাও ভেস্তে গেছে এ প্রযুক্তির ব্যবহারে। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি যাতে কোনোভাবেই বঞ্চিত না হয়, সেটি যেমন নিশ্চিত হবে একইসঙ্গে সরকারি অর্থের অপচয় ও রোধ হবে।তাই অবৈধ স্থাপনা বন্ধে অধিগ্রহণ প্রকল্পে ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রকল্প এলাকায় উচ্চ রেজুলেশনের ক?্যামেরাযুক্ত ড্রোনের সাহায্যে প্রকল্প এলাকার ভিডিও ধারণ করার সময় উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আসমাউল হুসনা লিজা, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা সহকারী কমিশনার আছাদুল হক, জাজিরা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাফে মোহাম্মদ ছড়া, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার খান সালমান হাবীব, সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. সফিকুর রহমান। শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান বলেন, অধিগ্রহণ কাজে এ প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে সরকারি অর্থের অপচয় রোধ হবে। পাশাপাশি প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার কোনো ভাবেই যেন বঞ্চিত না হয় সেটিও নিশ্চিত হবে। ঢাকা বিভাগের কমিশনার খলিলুর রহমানের নির্দেশনায় জেলা প্রশাসন এ উদ্যোগ নিয়েছে। অবৈধ স্থাপনা বন্ধে অধিগ্রহণ প্রকল্পে ড্রোন। তিনি আরো বলেন আমি বিশ্বাস করি যারা নতুন ঘর নির্মাণ করেছেন ভিডিও দেখে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারব। এতে অধিগ্রহণ এলাকায় অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের যে হিড়িক ছিল তা বন্ধ হবে। শুদ্ধাচার চর্চায় অনন্য নজির স্থাপনে জেলা প্রশাসন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।