শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:১৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::

করোনার প্রভাব কাটেনি হিলির দিনমজুরদের

মোসলেম উদ্দিন (হিলি) দিনাজপুর :
  • আপডেট সময় সোমবার, ২৩ আগস্ট, ২০২১

দিনাজপুরের হিলি বাজারে প্রতিদিন বসে সকাল ৭ থেকে সকাল ৯ টা পর্যন্ত শ্রমিকের হাট। দরকষাকষি করে গৃহস্থ তাদের নিয়ে যায় বাড়িতে গৃহস্থলী কাজের জন্য। করোনায় কারণে মানুষের কাছে টাকা নেই, তাই তাদের কাজেও নিচ্ছে কম, এমনটিই বলছেন বাজারে কাজের আশায় বসে থাকা দিনমজুরেরা। সোমবার (২৩ আগস্ট) সকালে হিলি বাজারের চাউলহাটি রোডে দেখা যায়, ২২ থেকে ২৫ জনের একদল দিনমজুর কাজের আশায় তাদের কাজের সরঞ্জাম সামনে রেখে বসে আছে। চোখেমুখে তাদের হতাশা আর একজন গৃহস্থ পাওয়ার চাহিদা। সবার চোখ যেন খুঁজচ্ছে একজন চেনা-অচেনা লোক, সে এসে বলবেন কাজ করবেন? দরকষাকষি করে নিয়ে গিয়ে সকাল ৮ থেকে বিকেল ৪ থেকে ৫ টা পর্যন্ত তাকে দিয়ে বাড়ি যে কোন কাজ করে নিবেন। বিনিময়ে হইতো দুপুরে খাবার খাওয়ায়ে দিবেন ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। হিলির বিভিন্ন গ্রাম থেকে প্রতিদান প্রায় ৩০ জন শ্রমিক আসে এ বাজারে। তারা কেউ কারও আপন বা আত্মীয় নই। তথাপি দেখে মনে তারা একে-অপরেন কাছের মানুষ। রাস্তার পাশে তারা লাইন ধরে তারা সারিবদ্ধ ভাবে বসে থাকে, আর ডেকে কাজে নিয়ে যাবে এমন মানুষকেই তারা খুঁজে ফিরেন। প্রায় দুই বছর যাবৎ দেশে চলমান চলছে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস। যার প্রভাবে পুরো দেশ আজ অকেজো, থমকে গেছে সকল কর্মকা-। তার বেশির ভাগ প্রভাব পড়েছে এই সব দিনখাটা, দিনআনা দিনমজুরদের। সংসার চালানোর মতো তেমন আর্থিক স্বচ্ছলতা নেই তাদের। মানুষের বাড়িতে শ্রম দিয়ে অর্থ উপর্জন করেই চলে তাদের সংসার জীবন। করোনার কারণে মানুষ বর্তমান অভাবি, হাতে নেই তেমন তাদের অর্থ। তাই প্রতিদিন সকালে কাজের আশায় আসা শ্রমিকরা কাজ না পেয়ে প্রায় তাদের খালি হাতে বাড়ি ফিরে যেতে হয়। পরিবারে তাদের প্রত্যেকের রয়েছে ৩ থেকে ৫ জন ছেলে-মেয়ে। কাজ না পেলে তাদের খাওযাবে কি? শূণ্য হাতে বাড়ি ফিরে তারা যেন আরও হতাশায় ভুগেন। হিলির নওপাড়া গ্রাম থেকে আসা ৫৬ বছর বয়সী দিনমজুর ছাবেদ আলী বলেন, প্রতিদিন ফজরের নামাজ আদায় করে কাজের সন্ধানে হিলি বাজারে আসি। করোনার আগে প্রতিদিনি কাজ পেতাম। করোনার লকডাউনের কারণে তো বাজারেও আসতে পারতাম না। ক’দিন হলো লকডাউন শেষ, তাই আবারও কাজের জন্য বাজারে আসছি। কিন্তু কোন কাজ পাচ্ছি না। কাজ না পেলে খাবো কি? সংসারে তো সদস্য অনেক। ডাঙ্গাপাড়ার ৫০ বছর বয়সী মেহেদুল মিয়া বলেন, হারা গরীব মানুষ, হামার তো আর আবাদি জমি নাই। মানুষের বাড়ি বাড়ি কাজ করে সংসার চালায়। ছোলপল সবাই আলদা হচে। তারা তাদের মতো সংসার নিয়ে ব্যস্ত, হামার ছাও কে দেখবে, কাম না করলে খামু কি? কেউ তো ঠিক মতো কামত ডাকুছে না। দিওর গ্রামের মোখলেছার আলী বলেন, এখন সকাল সাড়ে ৮ বাজে এখন পর্যন্ত কেউ কাজে নিতে আসলো। ৯ টার পরে তো সময় শেষ। দেখি কেউ কাম দেয় কি না কাজ করে নিতে আসা লুৎফর রহমান বলেন, বাড়িতে ইটের কাজ করছি, রাস্তায় বালু পড়ে আছে তাই দুই জন শ্রমিক দরকার। দুই জনকে নিলাম, একবেলা খাওয়ায়ে সাড়ে ৩০০ টাকা করে দিতে হবে। হিলি খাসমহল হাট-বাজার সমিতির সাধারণ সম্পাদক আরমান আলী বলেন, করোনার কারণে তো কঠোর বিধিনিষেধ আর লকডাউন লেগেই ছিলো। গত ১১ জুলাই থেকে লকডাউন নেই। বাজারের সব দোকানপাট খোলা রয়েছে। তবে প্রতিদিন সকালে বিভিন্ন গ্রাম থেকে এবাজারে কাজ পাওয়ার আসা শ্রমিকরা আসে। বর্তমান ইনাদের কাজ কাম পাওয়াটা অনেকটা কম দেখছি। করোনায় মানুষের হাতের অবস্থা তেমন ভাল নেই।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com