সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শেষ পোস্ট ‘বিদায়’। ঢাকার কুর্মিটোলাস্থ র্যাব সদর দপ্তরে কর্মরত শুভ মল্ল নামের ওই সৈনিক গত সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সশস্ত্র দায়িত্বরত অবস্থায় নিজের বন্দুক দিয়ে এই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটান। বাবা প্রেমের পথে বাধা হওয়ায় কর্মস্থলে নিজের বন্দুকের গুলিতে আত্মহত্যা করলেন এক র্যাব সদস্য। র্যাব থেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলা হলেও শুভ যে আত্মহত্যা করেছেন প্রতিবেশিরা সেটাই ধারণা করছেন। তার গ্রামের বাড়ি মিরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের জয়পুর পূর্বজোয়ার গ্রামের। শুভ নিজের মাথায় নিজেই গুলি করে মাটিতে লুটে পড়েন। র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, কেন এই ঘটনা ঘটেছে তা কেউ বলতে পারছে না, তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার গ্রামের নিকটতম প্রতিবেশি জনৈক মাঈন উদ্দিন জানান, শুভ মল্ল ছোট বেলাতেই মাকে হারান, বাবা কালু মল্ল বড় করেছেন তিন ছেলেকে। তিন ভাইয়ের মধ্যে শুভ ছোট বলে সবার কাছে আদরের ছিল। বড় ভাই বিদেশ থেকে আসলে ছোট ভাইকে বিয়ে দেবার কথা ছিল। কিন্তু শুভের পছন্দের মেয়েকে মেনে নিচ্ছিলেন না বাবা ও ভাইয়েরা। এ নিয়ে বাবার সাথে তার বিরোধ চরম পর্যায়ে পৌঁছে যায়। বিষয়টি গ্রামের অনেকেই জানে। এ জেরে শুভ নিজেই আত্মহত্যা করে থাকতে পারে বলে মন্তব্য ওই প্রতিবেশির। র্যাব সদর দপ্তর সূত্র জানায়, শুভ সদর দপ্তরের পেছনের গেটে ডিউটিরত অবস্থায় ছিল। সেখানে নিজের অস্ত্র দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বিকেল সোয়া ৫টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। জানা গেছে, শুভ পুলিশ কনস্টেবল ছিলেন। সেখান থেকে তিনি র্যাবে যোগদান করেন। উত্তরা ডিভিশনের ডিসি মো. সাইফুল ইসলাম জানান, র্যাব সদর দপ্তরে ডিউটিরত অবস্থায় ওই সদস্য মারা গেছেন। র্যাব থেকে পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। শুভ মল্লের আত্মহত্যার ঘটনায় এলাকায় নেমে আসে শোকের মাতম। পুত্রের আত্মহত্যার ঘটনায় ভেঙে পড়েছেন বাবা। তিনি কাঁদছেন আর জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন। স্বজনদের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। বন্ধু বান্ধবরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন দুঃখের পোস্ট করছেন।