জাতীয় প্রেসক্লাবে আলোচনা সভা ও দোয়া
দৈনিক খবরপত্রের সাবেক সম্পাদক একুশে পদক প্রাপ্ত প্রথিতযশা সাংবাদিক গিয়াস কামাল চৌধুরীর ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১৩ সালের ২৬ অক্টোবর তিনি ইন্তেকাল করেন। আজ ২৬ অক্টোবর সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলায়তনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) মরহুম গিয়াস কামাল চৌধুরীর জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনা এবং রূহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। বিএফইউজের মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন ও ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম উক্ত অনুষ্ঠানে সবাইকে উপস্থিত হওয়ার সবিনয় অনুরোধ কেেরছেন।
১৯৩৯ সালের ২১ জুলাই কুমিল্লার বিখ্যাত দারোগার বাড়িতে জন্ম নেওয়া এ প্রখ্যাত সাংবাদিক, কলামিস্ট ও সংবাদ বিশ্লেষক ভয়েস অব আমেরিকার ঢাকা সংবাদদাতা হিসাবে সারা বাংলাদেশে গ্রামে-গঞ্জে সমধিক পরিচিত ছিলেন। তিনি সাংবাদিক সমাজের প্রিয়ভাজন নেতা ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে একাধিক মেয়াদে তিনি ডিইউজে, বিএফইউজে ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশের একজন কূটনীতিক হিসাবে ল-নস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনে দায়িত্ব পালন করেছেন। মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর একনিষ্ঠ অনুসারী হিসেবে পকিস্তান আমলে গণতান্ত্রিক ও স্বায়ত্তশাসন অন্দোলনে অংশ নিয়ে বহুবার কারাবরণ করেন তিনি। ২০১১ খ্রিস্টব্দে তিনি দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হন, যা তার স্মৃতিশক্তি ও স্বাভাবিক জীবনকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে এম এ, ডিগ্রি এবং জার্নালিজম ও এলএলবি ডিপ্লোমা অর্জন করেন। গিয়াস কামাল চৌধুরীর সাংবাদিকতা শুরু হয় ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে, ইত্তেফাক গ্রুপ থেকে প্রকাশিত ‘ঢাকা টাইমস’ পত্রিকার মাধ্যমে। পরবর্তী কালে তিনি ইংরেজী দৈনিক মর্নিং নিউজ পত্রিকার আইন প্রদায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পর তিনি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থায় যোগদান করেন। কার্যত এখান থেকেই তার সাংবাদিকতার বিকাশ। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ গ্রহণসহ জাতীয় গণতান্ত্রিক ও পেশাজীবীদের অধিকার আদায়ের প্রতিটি আন্দোলনে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। সাংবাদিক জীবনে গিয়াস কামাল চৌধুরী বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) ও ভয়েস অব আমেরিকাসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন পত্রিকা ও সংবাদ সংস্থায় কাজ করেছেন। ১৯৮০-র এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় প্রতিদিন ‘গিয়াস কামাল চৌধুরী, ভয়েজ অব আমেরিকা’র ঢাকার বস্তুনিষ্ঠ ও নির্ভরযোগ্য রিপোর্টের জন্য বাংলাদেশের সংগ্রমী মানুষ আকুল হয়ে থাকতো। তিনি শেষ জীবনে দৈনিক খবরপত্র পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন রাজনীতিবিদদের সঙ্গে সমান তালে। নিজের কর্মকে প্রতিষ্ঠিত করে ১৯৯২ সালে পেয়েছেন একুশে পদক।