সুবহানাল্লাহ! আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা এমন কোনো বিধান রাখেননি যার পেছনে কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। পবিত্র কুরআনে তালাকপ্রাপ্ত নারীর ইদ্দত পালনের সময়সীমা তিন মাস ও বিধবা নারীর জন্য যা চার মাস দশ দিন নির্ধারিত করা হয়েছে। ইসলামী শরিয়াহ মতে, এ সময়ের মধ্যে নারী পরবর্তী বিয়ে থেকে নিজেকে বাধ্যতামূলক বিরত রাখবে এবং কিছু বিধিবিধান মেনে চলবে। এ সময়সীমা নির্ধারণের পেছনের হিকমাহ নিয়ে গবেষণায় বিস্ময়কর ফলাফল পাওয়া যায়। নারীবাদীসহ তথাকথিত নাস্তিকদেরও অনেক অযৌক্তিক প্রশ্নের উপযুক্ত জবাব এ গবেষণা।
একজন ইহুদি ভ্রূণ বিশেষজ্ঞ (যিনি একজন ধর্মীয় প-িতও ছিলেন) খোলাখুলি বলেছিলেন যে, পৃথিবীতে মুসলিম নারীর চেয়ে পবিত্র ও বিশুদ্ধ নারী অন্য কোনো ধর্মে নেই।
পুরো ঘটনাটি ঘটেছিল যখন আলবার্ট আইনস্টাইন ইনস্টিটিউটের (অষনবৎঃ ঊরহংঃবরহ ওহংঃরঃঁঃরড়হ) সাথে যুক্ত একজন ভ্রূণ বিশেষজ্ঞ, ইহুদি পেশাদার রবার্ট, তার ইসলাম গ্রহণের ঘোষণা দেন। যার একমাত্র কারণ ছিল, কুরআনে উল্লিখিত তালাকপ্রাপ্ত নারীর ইদ্দতের আদেশ সম্পর্কিত আয়াত এবং ইদ্দতের জন্য তিন মাসের সীমা নির্ধারণের পেছনের রহস্য ও হিকমত সম্পর্কে তিনি অবগত হয়েছিলেন।
আল্লাহ তায়ালা কোনো তালাকপ্রাপ্ত নারীকে দ্বিতীয় বিয়ের আগে তিন মাসের একটি গ্যাপ রাখতে বলেছেন। তিনি পবিত্র কুরআনে এরশাদ করেন, ‘তালাকপ্রাপ্ত নারীরা তিন মাসিক পর্যন্ত অপেক্ষা করবে’ (সূরা আল-বাকারাহ ২২৮:২)।
এই আয়াতটি একটি আধুনিক জ্ঞান ডিএনএ’র উদ্ভাবনের রাস্তা সুগম করেছে এবং দেখা গেছে যে একজন পুরুষের বীর্যে থাকা প্রোটিন অন্য পুরুষের থেকে ৬২% পৃথক ও ভিন্ন থাকে।
আর একজন নারীর শরীর একটি কম্পিউটারের মতো। যখন একজন পুরুষ তার সাথে ইন্টারকোর্স করে তখন সেই নারীর শরীর সব ব্যাকটেরিয়াকে শোষণ করে এবং তার শরীরে তা ধারণ করে।
অতএব, বিয়ে বিচ্ছেদের পরপরই, যদি একজন মহিলা অন্য পুরুষকে বিয়ে করেন বা একই সাথে বেশ কয়েকজনের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে, তাহলে তার শরীরে বিভিন্ন ধরনের ডিএনএ জমা হয় যা বিপজ্জনক ভাইরাসের রূপ নেয় এবং মারাত্মক রোগ সৃষ্টির কারণ হয়।
সাইন্স গবেষণা করে দেখে যে, প্রথম মাসিক আসার পর একজন মহিলার শরীর থেকে ৩২% থেকে ৩৫% পর্যন্ত প্রোটিন শেষ হয়ে যায় এবং দ্বিতীয় মাসিক আসার পর তার শরীর থেকে ৬৭ থেকে ৭২% ডিএনএ ধ্বংস হয়ে যায় এবং তৃতীয় মাসিকের পর ৯৯.৯% পর্যন্ত প্রোটিন নির্মূল হয়ে যায়। এরপর জরায়ু আগের ডিএনএ থেকে সম্পূর্ণরূপে পরিষ্কার হয়ে যায় এবং কোনো প্রকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই নতুন ডিএনএ গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুত থাকে।
একজন গণিকা অনেক মানুষের সাথে সঙ্গম করে, যার ফলে বিভিন্ন পুরুষের ব্যাকটেরিয়া তার জরায়ুতে প্রবেশ করে এবং বিভিন্ন ধরনের ডিএনএ তার মধ্যে জমা হয় এবং সে মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে।
বিধবা মহিলার ক্ষেত্রে শরিয়তের বিধান হলো, তার ইদ্দত তালাকপ্রাপ্ত মহিলার চেয়ে বেশি অর্থাৎ ৪ মাস ১০ দিন। এর কারণ হলো দুঃখ ও দুশ্চিন্তার কারণে তার শরীর থেকে আগের ডিএনএ দ্রুত শেষ হয় না, এটি শেষ হতে আগের চেয়ে বেশি সময় লাগে, আর এ জন্য বিধবা মহিলাদের ইদ্দত চার মাস দশ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমাদের মধ্য হতে যারা স্ত্রীদের রেখে মারা যাবে সে অবস্থায় স্ত্রীরা নিজেদের চার মাস ১০ দিন বিরত রাখবে’ (আল-বাকারাহ, ২৩৪)।
এই সত্যের মুখোমুখি হয়ে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার যুক্তরাষ্ট্রের দু’টি ভিন্ন স্থানে গবেষণা পরিচালনা করেন।
এক. আফ্রিকান বংশোদ্ভূত মুসলমানরা যে মহল্লায় থাকেন, সেসব নারীর ভ্রূণের মধ্যে মাত্র একজন স্বামীর ডিএনএ পাওয়া গেছে। দুই. অন্য মহল্লা যেখানে আসল আমেরিকান মহিলারা থাকেন, তাদের ভ্রূণের মধ্যে একাধিক অর্থাৎ দুই বা তিনজনের বেশি পুরুষের ডিএনএ পাওয়া গেছে।
অতঃপর যখন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার তার নিজ স্ত্রীর ভ্রূণ পরীক্ষা করলেন, তখন তিনি একটি মর্মান্তিক সত্য দেখতে পান যে, তার স্ত্রীর মধ্যে তিনটি ভিন্ন ভিন্ন ডিএনএ আছে। যার অর্থ হলো তার স্ত্রী তার সাথে প্রতারণা করছিল এবং তার তিন সন্তানের মধ্যে শুধু একজন ছিল তার নিজ সন্তান, বাকিরা ছিল অন্য পুরুষ থেকে। ডাক্তার তখন নিশ্চিত হন যে ইসলামের কোনো বিধানই মানুষের বানানো নয়। এটা আল্লাহ প্রদত্ত সত্য ধর্ম। যার প্রতিটি বিধান মানুষের জন্য কল্যাণকর। এরপর তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন।
কিন্তু আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে দেখা যায়, অজ্ঞতার বশবর্তী হয়ে অথবা গুরুত্বপূর্ণ মনে না করার কারণে অধিকাংশ মুসলিম পরিবারগুলোতে এ বিধিনিষেধ কঠোরভাবে মানা হয় না। যা নিঃসন্দেহে আল্লাহর হুকুম অবমাননার শামিল। কোনো সচেতন মুসলিম আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করতে পারেন না।