আগামী ৪ নভেম্বর বিএসইসি’র আয়োজনে লন্ডনে বিনিয়োগ আকর্ষণে আয়োজিত ‘বিনিয়োগ সম্মেলন’-এর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধন পোশাক খাতের নতুন ব্রান্ডিং হবে এতে ক্রেতাদের আগ্রহ আরো বাড়বে এবং দেশের ভাবমর্যাদাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে মনে করেন সিদ্দিকুর রহমান।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, করোনার ধাক্কা সামলিয়ে দেশের তৈরি পোশাক খাতে আগের চেয়ে ক্রয়াদেশ বৃদ্ধি পেয়েছে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসের তুলনায় চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বিশ্ববাজারে রফতানি শতকরা ৪১ দশমিক ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে যার পরিমাণ ১০০ কোটি মার্কিন ডলার দেশীয় টাকায় যার মূল্য ৮ হাজার ৪০০ কোটি টাকা আর চলতি অক্টোবরে এই অংক নতুন উচ্চতায় যাবে বলে জানিয়েছেন পোশাক খাত সংশ্লিষ্টরা। ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বিশ্ববাজারে দেশীয় তৈরি পোশাক রফতানির পরিমাণ ৩ হাজার ৪১৮ কোটি ৮৪ লাখ ইউএস ডলার যা ২০২০ সালের এসময়ে ছিল ২ হাজার ৪১৩ কোটি ৪২ লাখ ইউএস ডলার শুধু গত বছরের সেপ্টেম্বরের চেয়ে বেশি নয়, চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসের তুলনায় তৈরি পোশাক রফতানিতে সর্বোচ্চ আয় হয়েছে। এবছরের গত জুন, জুলাই ও আগস্টে যথাক্রমে পোশাক রফতানির পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৮৯৪ কোটি ৮৮ লাখ ইউএস ডলার, ২ হাজার ৮৮৭ কোটি ২২ লাখ ইউএস ডলার এবং ২ হাজার ৭৫৩ কোটি ৫৬ লাখ ইউএস ডলার।
সুদিন ফিরছে দেশের প্রধান রফতানি খাত তৈরি পোশাক শিল্পে পোশাকের অর্ডার বৃদ্ধির সঙ্গে দাম বাড়াতেও রাজি হয়েছে, বিদেশি বড় ক্রেতারা পাশাপাশি গত কয়েক মাস থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রধান প্রধান ক্রেতা দেশে বাংলাদেশের পোশাক রফতানিতে ভালো প্রবৃদ্ধি হচ্ছে- শুধু তাই নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং দক্ষিণ কোরিয়া, ভারতের মতো নতুন দেশের বাজারেও পোশাক রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮০ শতাংশের ওপরে পাশাপাশি ইউরোপ-আমেরিকার করোনা-পরবর্তী ব্যবসা-বাণিজ্য ও জীবন ব্যবস্থা স্বাভাবিক হওয়ায় ক্রেতা দেশগুলো থেকে এখন পোশাক রফতানির কার্যাদেশ আসছে ব্যাপক হারে। এছাড়া করোনাকালীন এবং পরবর্তী সময়ে প্রতিদ্বন্দ্বী অনেক দেশের তুলনায় পোশাক রফতানিতে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ।
জানতে চাইলে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, এখন ক্রেতা দেশগুলো থেকে প্রচুর কার্যাদেশ আসছে। করোনার দোহাই দিয়ে ক্রেতারা এতোদিন কম মূল্যে বাংলাদেশ থেকে পোশাক কেনার চেষ্টা করছে, অন্য দেশের চেয়ে অনেক কম মূল্যে বাংলাদেশ থেকে তারা পোশাক কিনেছে এখন তারা প্রচুর অর্ডার দিচ্ছে, প্রতিযোগী দেশগুলোর চেয়ে ক্রেতারা বাংলাদেশের বাজারে ঝুঁকছেন বেশি- এই সুযোগে ক্রেতাদের সঙ্গে দরকষাকষি করতে হবে। করোনার অজুহাতসহ নানা অজুহাতে এতোদিন বায়ারদের সঙ্গে পোশাকের দাম নিয়ে দরকষাকষির জায়গায়টা সুযোগ ছিল না বললেই চলে। সে অবস্থারও পরিবর্তন হয়েছে, এরই ধারাবাহিকতায় পোশাকের দাম বাড়াতে রাজি হয়েছে, বিদেশি বড় ক্রেতারা এমনকি কম দামে রফতানি না করতে একমত হয়েছে দেশের পোশাক শিল্প মালিকদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ সংগঠন দুটির নেতারা বলেছেন, বিশ্ববাজারে চাহিদা বাড়ায় বায়াররা (ক্রেতা) এখন পোশাকের দাম বেশি দিচ্ছেন যা সামগ্রিক রফতানি আয়ে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে, এটা ধরে রাখতে হবে কম দামে আর পোশাকের অর্ডার নেবে না কোনো রফতানিকারক বড় ক্রেতাদের বাংলাদেশ সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা দিতে বিজিএমইএ’র বৈঠকের পাশাপাশি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বিনিয়োগ আকর্ষণে যুক্তরাষ্ট্র, সুইজারল্যান্ড, আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশকে ব্রান্ডিং করছে। এসব কার্যক্রমের প্রভাবও পড়েছে দেশের পোশাক খাতে বায়াররাও বাংলাদেশ সম্পর্কে ইতিবাচক বার্তা পাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ৪ নভেম্বর লন্ডনে বিনিয়োগ আকর্ষণে সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছেÑ এ বিনিয়োগ সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বিনিয়োগ সম্মেলনও দেশকে আরও নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম বলেন, দেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতি বা দেশের ইতিবাচক দিকগুলোকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরার পাশাপাশি পোশাকের মান এবং দাম বাড়ানো নিয়ে কোনো ধরনের আলোচনা ছিল না, যে পরিস্থিতির অনেকটা পরিবর্তন হয়েছে, বিএসইসি এ বছরের শুরু থেকে দেশে বিনিয়োগ টানতে এবং সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের ইতিবাচক দিকগুলোকে তুলে ধরছে পাশাপাশি বিজিএমইএ যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা সফর করে বড় বড় বায়ারদের সঙ্গে বৈঠক করেছে যা পোশাক খাতসহ দেশের জন্য ইতিবাচক দেশকে এভাবে ব্র্যান্ডিং করতে পারলে বিনিয়োগ পরিস্থিতির উন্নতির পাশাপাশি রফতানির বাজারও প্রসার লাভ করবে যা দেশের গোটা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক বলে উল্লেখ করেন রাশিদুল ইসলাম।
পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি মো. ফারুক হাসান বলেছেন, করোনা পরিস্থিতির উন্নয়নের সঙ্গে পোশাকশিল্পও ঘুরে দাঁড়াতে সমর্থ হয়েছে আবারও পোশাক রফতানি বাড়ছে, আরও নতুন অর্ডার আসছে পোশাকের দাম বাড়াতেও রাজি হয়েছে বিদেশি বড় ক্রেতারা করোনার মধ্যে কারখানা খোলা রেখে আমরা কেবল ব্যবসা ধরে রেখেছি এখন তার ফলাফল পাচ্ছি। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা সফরে আমরা বড় বড় বায়ারদের সঙ্গে বৈঠক করেছি তারা আমাদের জানিয়েছেন, বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি পোশাক কিনবেন তারা আরও বেশি প্রাইস (দাম) দেবেন এ বিষয়ে দেশের পোশাক শিল্প মালিকদের আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন এখন আর কম দামে অর্ডার না নেন, যদি আমরা সবাই মিলে প্রাইসের ব্যাপারে শক্ত অবস্থানে থাকি, তাহলে তা আরও বাড়বে আর সেটা ধরে রাখতে পারলে আমরা লাভবান হব, তবে দীর্ঘদিন থেকে করোনা মহামারির চ্যালেঞ্জগুলো কাটাতে সরকারের সহায়তা, দূতাবাসের আন্তরিকতা প্রয়োজন বলে মনে করেন ফারুক হাসান আর সেটা হলে পোশাক খাতে বিশ্ব বাজারে নেতৃত্ব দেবে বাংলাদেশ তিনি বলেন, শিল্পের টেকসই উন্নয়ন, আধুনিকায়ন ও দক্ষতা বাড়ানোর মাধ্যমে আমাদের মার্কেট শেয়ার ৬২ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে আরও বাড়ানো সম্ভব আমরা সার্বিকভাবে চেষ্টা করছি, আমাদের এ শিল্পের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে আমরা উত্তর আমেরিকা সফরের মাধ্যমে আমাদের অ্যাপারেল ডিপ্লোমেসির কাজটি নতুনভাবে শুরু করেছি আগামী দিনগুলোতে আমরা আরও নতুন নতুন বাজারে ক্যাম্পেইন করব সভা, সেমিনার ও মেলায় অংশ নেব। বিগত বছরগুলোতে দেশীয় শিল্পে যে পরিবর্তন এসেছে, তা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরব।
ফারুক হাসান বলেন, করোনার কারণে গত দুই অর্থবছরে রফতানি কমেছে, উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ হয়নি। নতুন কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হয়নি বললেই চলে প্রধানমন্ত্রী প্রণোদনা প্যাকেজ না দিলে শিল্পকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হতো না করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় আমাদের শিল্পও ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বিশ্বব্যাপী ফ্রেইট ব্যবস্থাপনা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় কনটেইনার ভাড়া ২০০ থেকে ৩০০ গুণ বেড়েছে। এছাড়া আমাদের সামনে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ আছে, যার মধ্যে অন্যতম পণ্যের দরপতন এবং স্থানীয় পর্যায়ে কিছু সমস্যা এগুলোর সমাধান হলেই আবারও আগের অবস্থানে ফিরতে পারবে তৈরি পোশাক শিল্প।
সূত্র মতে, স¤প্রতি দেশের পোশাক খাতকে আরও এগিয়ে নিতে নতুন বাজারের সন্ধানে প্রায় এক মাস যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছেন বিজিএমইএ প্রতিনিধি দল। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করা, নতুন দেশের বাজার তৈরি এবং পোশাক খাতের ব্র্যান্ডিং করাই ছিল সফরের মুখ্য উদ্দেশ্য। যদিও দীর্ঘদিনেও বায়ারদের সঙ্গে পোশাকের দাম নিয়ে দরকষাকষির যায়গায়টা একেবারে ছিল না বললেই চলে। কারণ প্রতিযোগিতার বাজারে বায়াররা সব সময়েই কম দামে পোশাক ক্রয় করতে চাইছে। এক্ষেত্রে কম দামের কারণে অন্য দেশে চলে যাওয়ারও উদাহরণ রয়েছে আর তাই বাধ্য হয়েই পোশাক মালিকরা কম দামে বা প্রাপ্য দাম না পেয়েই পোশাক বিক্রি করতে বাধ্য হতো তবে সে অবস্থার কিছুটা হলেও উন্নতি হয়েছে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে স্থগিত অগ্রাধিকার বাণিজ্য সুবিধা (জিএসপি) ফিরে পাওয়ার ব্যাপারেও আশার সঞ্চার হয়েছে।
তরুণ উদ্যোক্তা অনন্ত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরিফ জহির বলেন, এখন সময় এসেছে, বায়ারদের বেশি দামে পণ্য কিনতে বাধ্য করতে হবে উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, এতদিন বায়াররা ভিয়েতনাম থেকে যে পোশাক ২০ ডলারে কিনেছেন, আমাদের কাছ থেকে একই পোশাক কিনেছেন ১০-১২ ডলারে করোনার পর বিশ্ববাজারে চাহিদা বাড়ায় বাধ্য হয়ে তারা প্রচুর অর্ডার দিচ্ছেন, দামও বেশি দিচ্ছেন এটাই আমাদের সুযোগ; সময় এখন আমাদের আমাদের কেউ যেন কম দামে কোনো পোশাকের অর্ডার না নেয় একটি বায়িং হাউসে কাজ করেন মো. আবু সায়েম তিনি বলেন, প্রচুর অর্ডার আসছে, যা আমাদের ক্ষমতার বাইরে আমরা এগুলো সময়মতো কার্যকর করতে পারব কি-না তা বিবেচনায় নেয়া উচিত।
এদিকে গত বুধবার বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি পোশাক খাতের জন্য আরও একটি সু-খবর দিয়েছেন তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশের স্তরে গেলেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন তারপর আরও তিন বছর অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধা (জিএসপি) অব্যাহত রাখবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রফতানি বাজার ওই অঞ্চলে বাংলাদেশের ৯৭ শতাংশ রফতনি পণ্য জিএসপি সুবিধা পায় সূত্র মতে, প্রতিবছর বাংলাদেশ যে পরিমাণ পণ্য রফতানি করে, তার ৬০ শতাংশ যায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ইইউ ২০২৯ সাল পর্যন্ত জিএসপি সুবিধা চালু রাখতে সম্মত হলেও বাংলাদেশ আরও ১২ বছর ওই সুবিধা চায়।
বিজিএমইএ’র পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেছেন, আমাদের রফতানি বাড়ছে প্রচুর অর্ডার আসছে সেইসঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে ‘জিএসপি প্লাস’ সুবিধা পাওয়ার পথও সুগম হয়েছে সবমিলিয়ে বিশ্বব্যাপি চলমান মহামারি করোনাভাইরাসের মধ্যেও পোশাক শিল্পে সুবাতাস বইতে শুরু করেছে, তা ধরে রাখতে পারব বলে আশা করছি। একই সঙ্গে পোশাক রফতানিতে বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে ২০২১ সালের মধ্যে আমরা দ্বিতীয় বৃহত্তম রফতানিকারক দেশ হবো বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। এ বিষয়ে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, করোনার ধাক্কা সামলে অনেকটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে পোশাক শিল্প; কিন্তু এই ঘুরে দাঁড়ানোতে বাধার সৃষ্টি করছে সুতার অত্যধিক দাম বৃদ্ধি কয়েক মাস আগেও ৩০ কাউন্টের প্রতিকেজি সুতার মূল্য ছিল ২ দশমিক ৫০ ডলার, সেটি এখন বেড়ে হয়েছে ৪ দশমিক ৩০ ডলার সমস্যা হচ্ছে সুতার অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি হলেও ক্রেতারা; কিন্তু পোশাকের ক্রয়মূল্য সেভাবে বাড়ায়নি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো পোশাকপ্রতি মাত্র ১০ থেকে ১৫ সেন্ট দাম বাড়াচ্ছে, যা দিয়ে উৎপাদন করে পোষাবে না এ জন্য অনেক উদ্যোক্তা অর্ডার ছেড়ে দিচ্ছে সুতরাং করোনা-পরবর্তী পোশাক শিল্প প্রকৃত সুবিধা পেতে হলে একদিকে সুতার দাম কমাতে হবে, অন্যদিকে ক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে তাদের ক্রয়মূল্যও বাড়াতে হবে।
মোহাম্মদ হাতেম বলেন, পোশাকের প্রাইস নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের রফতানিকারকদের মধ্যে একটা ‘অসুস্থ’ প্রতিযোগিতা ছিল বায়াররা সেই সুযোগ নিয়ে কম দামে পোশাক কিনেছেন এখন আমরা সবাই একমত হয়েছি, আর কম দামে কোনো পোশাক রফতানি করব না তিনি বলেন, বায়াররা এতদিন নীতি-নৈতিকতার কথা বলে কম দামে পোশাক কিনে আমাদের ঠকিয়েছেন আমরা আর ঠকতে চাই না।
বিজিএমইএ’র ভাইস প্রেসিডেন্ট শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, অর্থনীতি আবারও সচল হওয়ায় ব্র্যান্ড এবং ক্রেতারা চাহিদা মেটাতে এখন আরও বেশি অর্ডার দিচ্ছেন তাছাড়া, ভারত এবং ভিয়েতনাম থেকে কার্যাদেশ স্থানান্তরিত হয়েছে কারণ, করোনার ফলে গত কয়েক মাস সেসব দেশে উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে অথচ বাংলাদেশে তা চলছে পুরোদমে তিনি বলেন, যদি সেবাদাতা সংস্থাগুলো সহযোগিতা এবং ভালোভাবে কাঁচামালের আমদানির পাশাপাশি রফতানি নিশ্চিত করতে সহায়তা প্রদান করে, তবে আমরা কার্যাদেশগুলো সম্পন্ন করতে পারব বাড়তি কার্যাদেশ রফতানিকারকদের আরো ভালো দাম পাওয়ার জন্য আলোচনার অতিরিক্ত সুবিধা দিচ্ছে কারণ, সরবরাহকারীদের ওপরই নির্ভর করছে বাজার।
বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, পোশাকের সঠিক দাম আমরা এখনও পাচ্ছি না, এখন দাম কিছুটা বেড়েছে তা আন্তর্জাতিক বাজারে তুলা ও সুতার দাম বাড়ার পাশাপাশি কন্টেইনার ভাড়া বাবদ ব্যয় ও ট্রান্সপোরটেশন ব্যয় বাড়ার কারণ একই সঙ্গে পোশাকের মানসম্মত উৎপাদন অনুযায়ী দাম আরো বাড়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। এছাড়া সঠিক দাম না পাওয়ার কারণ হিসেবে দেশের পোশাক খাতসহ দেশকে ব্রান্ডিং করতে না পারাকে দায়ী করেন তিনি।