শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৪১ অপরাহ্ন

জ্বালানি রূপান্তরে বাড়ছে তামার বৈশ্বিক ব্যবহার

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বুধবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২১

করোনা মহামারীর প্রভাব কাটিয়ে বিশ্ব অর্থনীতিতে দ্রুত প্রসার ঘটছে। প্রবৃদ্ধির ধারায় হাঁটছে শিল্প উৎপাদন। অন্যদিকে জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে দীর্ঘমেয়াদি নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে স্থানান্তর ঘটছে। এসব কারণে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে তামার চাহিদা ও ব্যবহার। বিশেষ করে ব্যাটারি ও জ্বালানি প্রযুক্তিতে ব্যবহারিক ধাতুটির চাহিদায় উল্লম্ফন দেখা দিতে শুরু করেছে। অস্ট্রেলিয়ার ডিপার্টমেন্ট অব ইন্ডাস্ট্রি, সায়েন্স, এনার্জি অ্যান্ড রিসোর্চ (ডিআইএসইআর) সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, পোর্টেবল কনজিউমার ডিভাইস ও বৈদ্যুতিক গাড়িসহ উদীয়মান প্রযুক্তি খাতে তামার চাহিদা জোরদার হচ্ছে। এটি ধাতুটির বৈশ্বিক ব্যবহার বৃদ্ধিতে প্রধান ভূমিকা পালন করছে।
ডিআইএসইআরের প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছর পরিশোধিত তামার ব্যবহার বাড়বে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ। ব্যবহারের পরিমাণ দাঁড়াবে ২ কোটি ৬০ লাখ টন। বিশেষ করে শিল্প উৎপাদন খাতে পরিশোধিত তামার ব্যবহার সর্বাধিক বাড়বে। দুই বছরের মধ্যে ব্যবহার ৫ শতাংশ বেড়ে ২ কোটি ৭০ লাখ টনে পৌঁছতে পারে। চীন বিশ্বের শীর্ষ তামা পরিশোধক। তথ্য বলছে, গত বছর বৈশ্বিক পরিশোধিত তামা ব্যবহারের ৫৪ শতাংশই এসেছে চীন থেকে। এ অবস্থান দেশটিকে বৈশ্বিক তামার বাজারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। তামার বৈশ্বিক দাম ও বিনিয়োগ সিদ্ধান্তও দেশটির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।
ডিআইএসইআর বলছে, গত বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে কমতে শুরু করে তামার বৈশ্বিক ব্যবহার। করোনায় দেশে দেশে অর্থনীতিতে যে স্থবিরতা নেমে আসে, তারই পরিপ্রেক্ষিতে ধাতুটির চাহিদায় ভাটা পড়ে। তবে বর্তমানে দ্রুত প্রসারমাণ অর্থনীতির কারণে চাহিদা বাড়ছে। এদিকে চাহিদার উল্লম্ফনের কারণে চলতি বছর তামার দামও বেড়েছে।
জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে রূপান্তরের পথে এগোচ্ছে আধুনিক বিশ্ব। বিকল্প হিসেবে জায়গা দখল করছে নবায়নযোগ্য জ্বালানি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি অবকাঠামোয় তামার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ কারণে আগামীতেও ধাতুটির ব্যবহার বাড়বে নজিরবিহীনভাবে।
বিএইচপির প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা ভ্যানদিতা পান্ট এফটি কমোডিটিস এশিয়া সামিটে বলেন, যদি কার্বনশূন্য পৃথিবীর কথা বলি, তবে ৩০ বছরের মধ্যে গত তিন দশকের তুলনায় দ্বিগুণ বেশি তামার প্রয়োজন হবে। ঊর্ধ্বমুখী চাহিদা পূরণে বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলো এরই মধ্যে উদ্যোগী হয়ে উঠেছে। বাড়ানো হচ্ছে উৎপাদন। মার্কিন ক্রেডিট রেটিং প্রতিষ্ঠান ফিচ সলিউশন জানিয়েছে, চলতি বছর থেকে ২০২৯ সাল পর্যন্ত তামার বৈশ্বিক উৎপাদন বার্ষিক ৩ দশমিক ৭ শতাংশ হারে বাড়বে। একই সময় ব্যবহারিক ধাতুটির মোট উৎপাদন ২ কোটি ১৫ লাখ থেকে বেড়ে ২ কোটি ৭৮ লাখ টনে উন্নীত হবে।
ইন্টারন্যাশনাল কপার স্টাডি গ্রুপ (আইসিএসজি) সম্প্রতি তামার বৈশ্বিক চাহিদা, উৎপাদন, সরবরাহ ও দাম নিয়ে মাসভিত্তিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) ব্যবহারিক ধাতুটির বৈশ্বিক উত্তোলন ৪ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে। কনসেনট্রেট (তামা উৎপাদনের কাঁচামাল) উত্তোলন বেড়েছে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ। তবে সলভেন্ট এক্সট্র্যাকশন-ইলেকট্রোওয়াইনিং ১ দশমিক ৫ শতাংশ কমে গেছে। তবে বহুমুখী প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে বৈশ্বিক উত্তোলন প্রবৃদ্ধিতে প্রধান ভূমিকা রেখেছে বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ তামা উত্তোলনকারী দেশ পেরু। চলতি বছরের প্রথমার্ধে দেশটির উত্তোলন ১৪ শতাংশ বাড়ে। মূলত মার্চ-মে সময়ে উত্তোলনে উল্লম্ফন প্রথমার্ধের উত্তোলন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। এ সময় পেরুর তামা উত্তোলন গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৫ শতাংশ বাড়ে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com