শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ০৪:৪৬ অপরাহ্ন

আবার করোনাভাইরাস: একদিনে প্রাণহানি ৭ হাজারের বেশি

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বুধবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২১

চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় ব্যাপক ভাবে বেড়েছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭ হাজারের বেশি মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৭ লাখ ৪১ হাজার। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে রাশিয়া, জার্মানি, পোল্যান্ড, ইউক্রেন ও ফ্রান্স। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৭ কোটি ৬৫ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৩ লাখ ৮৪ হাজার। বুধবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭ হাজার ৮১ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে দুই হাজারের বেশি। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫৩ লাখ ৮৪ হাজার ৫৮৭ জনে। একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৭ লাখ ৪১ হাজার ৪৯০ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ২ লাখ ১০ হাজার। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ কোটি ৬৫ লাখ ৬২ হাজার ৪৭৭ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৮০ হাজার ৩৩৮ জন এবং মারা গেছেন ১ হাজার ৮১১ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৫ কোটি ২২ লাখ ৫১ হাজার ২৭৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৮ লাখ ৩০ হাজার ৯৯০ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রাশিয়া। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ২৭ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ২৫ হাজার ৯০৭ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ২ লাখ ৬৭ হাজার ৭১৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৯৯ হাজার ২৪৯ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাজ্যে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৯০ হাজার ৬২৯ জন এবং মারা গেছেন ১৭২ জন। মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ১৫ লাখ ৪২ হাজার ১৪৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৪৭ হাজার ৪৩৩ জন মারা গেছেন। একই সময়ে ফ্রান্সে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৭২ হাজার ৮৩২ জন এবং মারা গেছেন ২২৯ জন।
এছাড়া জার্মানিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫ হাজার ৪৯ জন এবং মারা গেছেন ৫১৬ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৬৮ লাখ ৬৯ হাজার ৪৯৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৯ হাজার ৭৫৯ জন মারা গেছেন। একই সময়ের মধ্যে ইউক্রেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ২৯ জন এবং মারা গেছেন ৩৪৬ জন। লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৮৬ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৩ হাজার ৬২১ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ২২ লাখ ১৯ হাজার ৪৭৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ১৭ হাজার ৯৯১ জনের। এদিকে করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৩ কোটি ৪৭ লাখ ৫৮ হাজার ৭৮ জন এবং মারা গেছেন ৪ লাখ ৭৮ হাজার ৬১ জন। এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ইরানে ৪৩ জন, তুরস্কে ১৮৭ জন, হাঙ্গেরিতে ১৩২ জন, ইতালি ১৫৩ জন এবং ভিয়েতনামে ২৫০ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ৫৮ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৯৭ হাজার ৯১৬ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।
ওমিক্রনে দিশেহারা যুক্তরাজ্য, বাতিল নববর্ষের উৎসব: করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনে দিশেহারা যুক্তরাজ্য। এতে দেশটিতে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। গত কয়েক দিনে আক্রান্তের সংখ্যা পেরিয়েছে ৯০ হাজারের ঘর। এমন পরিস্থিতিতে লকডাউন জারি করা নিয়ে দোটানায় রয়েছে সরকারের কর্তাব্যক্তিরা। তবে বাতিল করা হয়েছে নববর্ষের উৎসব। বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে লকডাউন বা কঠোর বিধিনিষেধের দাবি উঠলেও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ক্রিসমাসের আগে নতুন কোনো বিধিনিষেধ জারি হবে না বলে জানিয়েছেন। ফলে লন্ডনের পরিস্থিতি দিন দিন অনুকূলের বাইরে চলে যাচ্ছে। গত মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১৭২ জনের যা সোমবার ছিল ৪৫ জন। এ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৪৭ হাজার ১২১ জনে।
এদিন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৯০ হাজার ৬২৯ জন যা সোমবারের তুলনায় কিছুটা কম। সোমবার আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৯১ হাজার ৭৪৩ জন। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে এক কোটি ১৫ লাখ ৪২ হাজার ১২১ জন। যুক্তরাজ্যে করোনার এমন পরিস্থিতিতে বাতিল করা হয়েছে ট্রাফালগার স্কয়ারের নববর্ষ উৎসব। এর আগে গত অক্টোবরে বাতিল করা হয় লন্ডন আইয়ের নববর্ষ উৎসব। লন্ডনের মেয়র সাদিক খান জানিয়েছেন, জননিরাপত্তার স্বার্থে অনুষ্ঠানটি বাতিল করা হয়েছে। তবে লাইভে উদযাপন অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হবে, বাড়িতে বসে সবাইকে এটি দেখা যাবে। বিষয়টি লন্ডনবাসীর জন্য খুবই হতাশাজনক হবে, তবে ভাইরাসের বিস্তাররোধে আমাদের সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে। যুক্তরাজ্যে প্রতিবছর নববর্ষ উৎসবের জন্য ৩১ ডিসেম্বর রাতে শহরের টেমস নদীর তীরে লন্ডন আইয়ের আতশবাজি দেখতে জড়ো হন লাখ লাখ মানুষ। প্রায় সোয়া কোটি মানুষ অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন টিভিতে। কিন্তু করোনাভাইরাসের সৃষ্ট অনিশ্চয়তার কারণে টেমস নদীর তীরে নববর্ষ উৎসব বাতিল করা হয়।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com