নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র-সংক্রান্ত কাজে গেলেই হতে হয় ভোগান্তির শিকার হতে হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা হতে আসা লোকজন।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন, হারানো বা স্থানান্তরের আবেদন মানেই টাকা। চাহিদা মতো টাকা না দিলে হতে হয় হয়রানি। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ এবং অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর সোহরাব হোসেনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে। এমনকি পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধি এবং ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে সেবা প্রত্যাশীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগও রয়েছে নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এতে ভোগান্তিতে এ উপজেলার হাজারও সেবা প্রত্যাশী। ভূক্তভোগীরা বিষয়টিকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এছাড়া সদ্য সমাপ্ত চতুর্থ ধাপের ইউপি নির্বাচনে প্রার্থীরা পছন্দের প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসার নিয়োগ দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের কাছ থেকে নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। প্রার্থীতা বাতিলের ভয়-ভীতি দেখিয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেন তিনি। নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ নির্ধারিত মনোনয়ন ফরম বিক্রি থেকে শুরু করে প্রতীক বরাদ্দ পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপে ধাপে প্রার্থীদের কাছে থেকে ঘুষ গ্রহণ করছেন। মনোনয়ন ফরম বৈধ সত্ত্বেও অধিকাংশ প্রার্থীদের সাথে যোগাযোগ করে প্রার্থীদের মনোনয়ন ফরম বাতিলের ভয় দেখিয়ে প্রার্থীদের কাছ থেকে তার চাহিদা মতো টাকা আদায় করছেন। প্রার্থীর ভোটারদের কাছে সম্মানহানির হাত থেকে বাঁচতে নির্বাচন কর্মকর্তার চাহিদামত টাকা প্রদান করতে বাধ্য ছিলেন। এছাড়া ভোটের দিন ভোটকেন্দ্র দায়িত পালনকারী প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদেরকে পছন্দমত কেন্দ্রে নিয়োগের কথা বলে প্রার্থীদের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করার অভিযোগও রয়েছে। সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে নির্বাচনে অংশ নেওয়া রোকেয়া বেগম বলেন, ‘মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর নির্বাচন অফিস থেকে ফোন দিয়ে জরুরী যেতে বলেন। সেখানে যাওয়ার পর নির্বাচন কর্মকর্তা জানান, আমার ফরমে ভুল আছে। পরে তার কথামতো চার হাজার টাকা দিয়েছি। পরদিন আবারো টাকার জন্য ফোন দেওয়া হয়। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দি¦তা করা অধিকাংশ প্রার্থীকে ডেকে নিয়ে এভাবে ভয় দেখিয়ে তিনি টাকা নিয়েছেন।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, ‘জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করার জন্য নির্বাচন অফিসে যাওয়ার পর কয়েকদিন ঘুরানো হয়। পরে অফিস সহকারী সোহরাবকে ১৫শ টাকা দেওয়ার পর আমার কাছ হয়েছে।’ আরমান নামে একজন জানান, আমি নতুন ভোটার হতে গিয়ে দুই হাজার ৫০০ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে।’ অভিযোগ উঠেছে সোহরাব উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের খুব প্রিয় পাত্র। তবে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ অস্বীকার করেন। এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন না ধরায় মন্তব্য জানা যায়নি।