গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় ৩দিন ব্যাপী কবি সুকান্ত মেলায় বইয়ের স্টলগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। এ মেলায় জ্ঞানের আলো পাঠাগারসহ বিভিন্ন পাঠাগারের ৪টি বইয়ের স্টল বসেছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত বইপ্রেমিরা এসব স্টল থেকে তাদের পছন্দ মতো বই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন যৌথ ভাবে ৩দিন ব্যাপী এ মেলাটির আয়োজন করেছেন। গত মঙ্গলবার সকাল ১১ টা থেকে উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের উনশিয়া গ্রামে কবির পৈত্রিক ভিটায় এ মেলার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও সন্ধ্যা ৭টায় জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে মেলার উদ্বোধন করেন। এ সময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ^াস, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌস ওয়াহিদ, বাংলা একাডেমির পুরস্কারপ্রাপ্ত শিশু সাহিত্যিক খালেক বিন জয়েনউদদীন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্রনাথ বিশ^াস, সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ, কোটালীপাড়া থানার ওসি মোঃ জিল্লুর রহমান, শেখ হাসিনা আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিলীপ ভাবুক, ভাইস চেয়ারম্যান লক্ষ্মী সরকার, এডভোকেট দেলোয়ার হোসেন সরদার, ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুজ্জামান খান মিলন, মিজানুর রহমান হাওলাদার মানিক, এডভোকেট বিজন বিশ^াস, রাফেজা বেগম, তুষার মধু, উদীচী কোটালীপাড়া শাখার সভাপতি অশোক কর্মকার, সাধারণ সম্পাদক রতন সেন কংকন, কবি মিন্টু রায় উপস্থিত ছিলেন। বাংলা একাডেমির পুরস্কারপ্রাপ্ত শিশু সাহিত্যিক খালেক বিন জয়েনউদদীন বলেন, ১০ বছর ধরে কোটালীপাড়ায় কবি সুকান্ত ভট্টচার্যের পৈত্রিক ভিটায় মেলা বসে। এ বছর মেলায় বৈচিত্র্য লক্ষ করা যাচ্ছে। এখানে গ্রামীণ মেলার পাশাপাশি বইয়ের স্টল বসেছে। বিভিন্ন বয়সের পাঠক এখান থেকে বই কিনছেন। দেখে ভালো লাগছে। আমি চাইবো আগামীতেও যেন মেলায় যেন এধরণের বইয়ের স্টল বসে। জ্ঞানের আলো পাঠাগারের সভাপতি সুশান্ত মন্ডল বলেন, আমাদের বইয়ের স্টলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’ বইসহ প্রায় ২শতাধিক লেখকের নানা ধরণের বই রয়েছে। গত মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে আমরা বই বিক্রি শুরু করেছি। মেলার দ্বিতীয় দিন বইয়ের স্টলে পাঠকদের প্রচুর ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে। আমরা আগামীতেও সুকান্ত মেলায় আরো বড় পরিসরে বিভিন্ন লেখকের বই নিয়ে এখানে স্টল সাজাবো। উপজেলার শাহানা রশিদ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী মৌমিতা রহমান মৌ বলেন, আমি সুকান্ত মেলায় ঘুরতে এসে জ্ঞানের আলো পাঠাগারে স্টল থেকে কয়েকটি ছড়ার বই কিনলাম। আশা করি আমার মতো অনেক শিক্ষার্থীই মেলায় এসে বইয়ের স্টল থেকে বই কিনবেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য বিগত ১০ বছর ধরে মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে এখানে মেলা বসে। গ্রামীণ মেলায় অনেকগুলো বইয়ের স্টল বসেছে। এখান থেকে ছাত্র-ছাত্রীসহ নানা বয়সের পাঠকগণ বই কিনছেন। দেখে ভালোই লাগছে। আগামীতেও আমরা বেশী করে বইয়ের স্টল বসানোর চেষ্টা করবো। আগামী বৃহস্পতিবার এ মেলা শেষ হবে। উল্লেখ্য: ১৯২৬ সালের ১৫ আগষ্ট কবি সুকান্ত ভট্রাচার্য কলিকাতার কালীঘাটের মহিমা হালদার স্ট্রিটে মামা বাড়ীতে জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবার নাম নিবারন ভট্রাচার্য। মাতা সুনীতি দেবী। ১৯৪৭ সালের ১৩ মে মাত্র ২১ বছর বয়সে মৃত্যু বরণ করেন। ছাড়পত্র, ঘুম নেই, পূর্বাভাস, অভিযান, হরতাল- তার উল্লেখ যোগ্য কাব্যগ্রন্থ। কবির প্রতিটি কবিতায় অনাচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ধ্বনিত হয়েছে।