প্রতিবন্ধী শাহিন মিয়া(১৭) ও শাহজাহান মিয়া(১৪)। দুজনে সহোদর ভাই। তাদের লিঙ্গের নিচে রয়েছে ছিদ্র। এই ছিদ্র দিয়েই বের হয় প্রসাব। কিন্তু পুরুষাঙ্গ অকেজো। এ নিয়ে চলছিল চিকিৎসাসেবা। এতে সর্বশান্ত হয়েছে পিত্রহারা পরিবারটি। বর্তমানে অর্থাভাবে বন্ধ রয়েছে চিকিৎসা। এখন ছেলেদের সুস্থ করতে দুশ্চিন্তায় পড়েছে মা শাহিনুর বেগম। সোমবার বিকেলে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলা শহরতলীর সাদুল্লাপুর গ্রামে দেখা যায় শাহিনুর বেগম ওই দুই সন্তানকে পাশে নিয়ে চরম হতাশায় ভুগছে। এমন কি শাহীন ও শাহজাহানের চোখেও পানি টলমল করছিল। জানা যায়, ওই গ্রামের অতিদরিদ্র সাহেব উদ্দিনের মেয়ে শাহিনুর বেগম। প্রায় ১৯ বছর আগে বিয়ে হয় সুন্দরগঞ্জ উপজেলার নিধুমখা গ্রামের হোসেন আলীর সঙ্গে। এরপর পর্যায়ক্রমে কোলজুড়ে জন্ম নেয় শাহিন ও শাহজাহান। জন্মলগ্ন থেকে এ সন্তনদের দেখা যায় পুরুষাঙ্গের নিচে ছিদ্র। এ ছিদ্র দিয়েই বের হয় প্রসাব। একদম অকেজো রয়েছে তাদের লিঙ্গ। প্রতিবন্ধী শাহিনের বয়স যখন ৩ ও শাহজাহানের ১ বছর, তখন শাহিনুরকে ফেলে অন্যত্র বিয়ে করে হোসেন আলী। এরপর এই অবুঝ দুই সন্তান নিয়ে শাহিনুর বেগম আশ্রয় নেয় বাবার বাড়িতে। বৃদ্ধ বাবার সংসার চলে নানা টানাপোড়েনে। তাই সন্তানদের নিয়ে দু’বেলা ভাত জোটেনা তাদের পেটে। বাধ্য হয়ে অন্যের বাড়িতে ঝি’র কাজ করে শাহিনুর বেগম। এ শ্রম থেকে যেটুকু পান তা দিয়ে দুই ছেলেকে নিয়ে কোনোমতে জীবিকা নির্বাহ চলেছে শাহিনুর বেগম। এরই মধ্যে দুই ছেলের পুরুষাঙ্গ ও ছিদ্রের সমস্যা সমাধানে চিকিৎসকের শরনাপন্ন হয়। তাদের সুস্থ করতে শুরু করা হয় চিকিৎসাসেবা। ব্যয় বহুল খরচ সামাল দিতে না পেরে বন্ধ হয়ে যায় শাহিন ও শাহজাহানের চিকিৎসা ব্যবস্থা। এতেও ঘটে বিপত্তী। কেন চিকিৎসা বন্ধ হলো, তা নিয়ে ছেলেদের চলছে নানা অভিমান। ইতোমধ্যে চিকিৎসকরা জানিয়েছে উন্নত চিকিৎসা করালে সুস্থ হতে পারে দুই ছেলে। তবে মোটা অংকের অর্থের প্রয়োজন। অভাব-অনটনের সংসারে এতো টাকা যোগার করা মোটেও সম্ভব নয় শাহিনুরের। এসব তথ্য নিশ্চিত করে শাহিনুর বেগম জানান, অন্যের বাড়িতে ঝি’র কাজ করে সংসার চলে তার। এতে অতি কষ্টে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে। যার কারণে ছেলেদের চিকিৎসা করাতে পারছেন না। তিনি আরও বলেন, আমার ছেলে শাহিন ও শাহজাহানের প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ডের জন্য ঘুরেও কাজ হয়নি। ছেলে দুইজনও বড় হচ্ছে। তারা আমাকে চিকিৎসার জন্য বার বার চাপ দিচ্ছে। কিন্তু হাতে কোন টাকা-পয়সা নেই। এ বিষয়ে দেশের দানশীল ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের নিকট সহযোগিতা কামনা করছি।